ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

সমাজের ব্যাধি দুর্নীতি

প্রকাশিত: ০৮:৩৬, ১৯ জুলাই ২০১৯

 সমাজের ব্যাধি দুর্নীতি

সম্প্রতি সরকারপ্রধান এক বক্তৃতায় যথার্থই মন্তব্য করেছেন যে, কষ্ট করে দেশের উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করবেন আরেক শ্রেণী দুর্নীতি করবেন, তাদের ছাড়া হবে না। এটি যথার্থই মূল্যবান উক্তি। আজ দেশের যে অগ্রযাত্রা সেক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাষ্ট্রনায়োকচিত নেতৃত্ব গুণ অবশ্যই প্রশংসনীয় এবং বিশ্বব্যাপী সমাদৃত হচ্ছে। তিনি সরকারী উর্ধতন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেছেন, তারা যেন গুরুত্বের সঙ্গে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সতর্কতা অবলম্বন করেন- যাতে দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত না হয়। নতুন যে বার্ষিক পারফরমেন্স এগ্রিমেন্ট তৈরি হয়েছে তাতে ভিশন-২০২১কে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়েছে। পাশাপাশি টেকসই উন্নয়ন কর্মসূচী, ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা এবং পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়ন যোগ্যতার কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। সরকার ২০১৪-১৫ সালে প্রথমবার বার্ষিক পারফরমেন্স এগ্রিমেন্ট তৈরি করেছিল এ আশায় যে- সরকারী খাতে প্রাতিষ্ঠানিক স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার সুনিশ্চিত করা যাবে- যাতে করে প্রতিষ্ঠান দক্ষ ও কার্যকরভাবে কাজ করতে পারে। গত কয়েক বছরে অবস্থার কিছুটা উন্নতি অবশ্যই হয়েছে তবে এ উন্নয়নের গতি ধীরলয়ে। এটিকে আরও শক্তিমত্তা দিতে গেলে বঙ্গবন্ধুর হত্যা পরবর্তীকালে ধীরে ধীরে যে সর্বগ্রাসী দুর্নীতির বীজ বপন করা হয়েছিল তা তৃণমূল পর্যায় থেকে উচ্ছেদ করা সম্ভব হবে। কিছু কিছু চামচাবৃত্তির স্বার্থে একেক স্থানে একেক রকম বক্তব্য রেখে হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর ‘তৈল’-এর চেয়েও ভয়াবহ রকমের তৈল দিয়ে দুর্নীতি সর্বগ্রাসী করে তুলেছিল। এ অবস্থা ধীরে ধীরে কাটিয়ে উঠতে হবে। বার্ষিক পারফরমেন্স এগ্রিমেন্টের মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায় থেকে একেবারে উর্ধতন পর্যায় পর্যন্ত সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও ন্যায়পরায়ণতা ফিরিয়ে আনার প্রয়াস গ্রহণ করা হয়েছিল। এর ফলে কেবল সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী নয়, সমাজের সর্বস্তরে ন্যায়পরায়ণতা, স্বচ্ছতা এবং সততা বাস্তবায়ন করা একটু কন্টকিত পথ কিন্তু মোটেই বন্ধুর নয়। উপজেলা পর্যায়েও যাতে করে ন্যায়পরায়ণতা, স্বচ্ছতা ও সততা বাস্তবায়িত হয় এবং জনগণ যেন কল্যাণমুখী শাসন কার্যের অংশীদারিত্ব পায় সে জন্য অবশ্যই পথ দেখাতে হবে। এপথ অর্জন করা বর্তমান সরকারের জন্য মোটেই কঠিন নয়, কেননা দেশ আজ উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় শামিল। এদিকে সরকারের উদ্যোগ তথাকথিত জেহাদীদের দমন কঠোর হস্তে করা হয়েছে। সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি ভাল উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ভিকারুননিসা নূন স্কুল এবং কলেজের অধ্যক্ষ নিয়োগ পদ্ধতিতে অস্বচ্ছতাও অন্যায্যতা থাকার জন্য এটি স্থগিত করেছেন। আসলে ভিকারুননিসা নূন স্কুল এবং কলেজে যেখানে একজন পূর্ণাঙ্গ অধ্যাপক পদমর্যাদার শিক্ষককে অধ্যক্ষ করা দরকার সেখানে কিভাবে একজন সহকারী অধ্যাপককে অধ্যক্ষ করার প্রয়াস নেয়া হয়েছিল এটি বোধগম্য নয়। একটি নামকরা স্কুল এবং কলেজে অবশ্যই দক্ষতার সঙ্গে শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে। সম্প্রতি ধানমন্ডির একটি কলেজে অর্থনীতির প্রভাষক নিয়োগ নিয়ে যে তেলেসমাতি কারবার হয়ে গেল সেটি দুঃখজনক। আশা করা যায়, দেশে শিক্ষক নিয়োগে আরও স্বচ্ছতা, ন্যায়পরায়ণতা এবং মুক্তিযুদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িকতা চেতনাপুষ্ট শিক্ষক নিয়োগ করা বাঞ্ছনীয় হয়ে পড়েছে। এর কোন বিকল্প নেই। দেশে প্রি-প্রাইমারি থেকে উচ্চ পর্যায় পর্যন্ত শিক্ষক নিয়োগ অবশ্যই দুর্নীতিমুক্ত হওয়া বাঞ্ছনীয়। এমন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকার কূটনৈতিক পাড়ায় শিক্ষা বাণিজ্য করছে, যাদের মূল ক্যাম্পাস টাঙ্গাইলে অথচ ইউজিসি এ ব্যাপারে নির্বিকার। এটিও একটি দুর্নীতি বৈকি। আবার যে ভাড়া বাড়িতে ওই বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবসা করছে সেটির নক্সা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রাজউকের অনুমতি ব্যতীতই স্বয়ং তারা পরিবর্তন করেছে। যদি কোনদিন ওই ব্লিডিংয়ে আগুন লাগে পৃথক কোন এক্সিট রাস্তাও নেই। না। সরকারের নির্দেশনা কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর জন্য বিনষ্ট হয়। দেশে যেখানে ব্যাংকিং খাতে স্ট্রিম লাইনে (ংঃৎবধস ষরহব)-এ আনার নির্দেশ সরকার দিয়েছে, দেখা যাচ্ছে সে ব্যাপারে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ একেবারেই নির্লিপ্ত নয় বরং উল্টোপথে চলছে। পত্রিকান্তরে প্রকাশিত রিপোর্টে দেখা যায়, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত ব্যাংকসমূহের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা বেতন ভাতাসহ বিভিন্ন পারিতোষিক বাবদ প্রায় দশ কোটি টাকা নিয়েছে, যা গত বছরের ওই সময়ের তুলনায় প্রায় দেড় কোটি টাকা বেশি। হঠাৎ করে ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের বেতন ভাতাদি বাড়িয়ে দেয়ার কারণ কি? এ বিপুল অঙ্কের অর্থ তো জনগণের সঞ্চিত আমানত থেকে দেয়া হয়েছে। কেন এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোন কিছু করণীয় নেই? আসলে পরিচালনা পর্ষদ কার্যত সরকারের নির্দেশ মানতে চায় না! অথচ তারা ইচ্ছেমতো বেতন-ভাতাদি ও পারিতোষিক বাড়াতে কসুর করেন না। এটি অবশ্যই এক ধরনের দুর্নীতি ও প্রতারণা। বেতন-ভাতাদি ও পারিতোষিক দেশের অন্যান্য পেশার সঙ্গে সমন্বয় সাধনের ব্যবস্থা জরুরী ভিত্তিতে করা দরকার। সরকার বর্তমান বাজেটে (২০১৯-২০) রফতানি খাতে পোশাক শিল্পে ১০% ক্যাশ ইনসেনটিভ ঘোষণা করেছে। তারপরও পোশাক শিল্পের রফতানিকারকরা সন্তুষ্ট নন। বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েকজন পোশাক শিল্পপতির কথা হলো। তাদের ভাষ্য হচ্ছে : সরকারের এ ঘোষণার ফলে ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানসমূহ উল্টো দর কমানোর জন্য চাপ প্রয়োগ করছে এবং কিছু ব্যবসায়ী তাতে রাজি হয়ে পণ্য বিক্রি করছে। কিন্তু তারা এখন সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে টাকার মান রিফিক্সিং করে কমাতে চাচ্ছেন। আসলে টাকার মূল্যমান রিফিক্সিং করতে হলে, রিয়েল এফেকটিভ এক্সচেঞ্জ রেট (জবধষ ঊভভবপঃরাব ঊীপযধহমব জধঃব) বিবেচনা করে ৫%+ করা যেতে পারে। তবে সর্বাগ্রে দরকার হচ্ছে ব্যাংকিং সেক্টরের সাধুতা। তারা যে বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় হারে এলসি খুলে আর বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় হারে বিদেশ থেকে প্রাপ্ত অর্থের বিপরীতে মূল্য প্রদান করে থাকে তা প্রতি ডলার ব্যাংক ভেদে দেড় টাকা থেকে দুই টাকা। এই যে অপরিণামদর্শী লাভ- এটি তো এক ধরনের অনৈতিকতা। কোনমতেই ক্রয়-বিক্রয়ে প্রতি ডলারে ০.৫০ টাকার বেশি হওয়া বাঞ্ছনীয় নয়। যারা বছরের পর বছর বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় হার নিয়ে খেলছেন তাদের বিরুদ্ধে রফতানিকারকদের সোচ্চার হওয়া উচিত। যদিও ঋষড়ধঃরহম ঊীপযধহমব রেট হিসেবে আমরা কেবল জবভরীধঃরড়হ বলতে পারি, সেই বাংলা প্রবাদ বক্তব্য ‘নামে কি আসে যায়’- অর্থাৎ ডলারের বিপরীতে রিয়েল এফেকটিভ এক্সচেঞ্জ রেট বিবেচনায় না এনে অবমূল্যায়ন করতে চাচ্ছেন, তাতে আমাদের আমদানিতব্য পণ্যের মূল্য বেশি হবে অন্যদিকে রফতানিলব্ধ পণ্যের তেমন সুবিধা হবে না। আর যেহেতু আমাদের আমদানির পরিমাণ বেশি সেহেতু টাকার অবমূল্যায়ন করলে সরকার যে কাক্সিক্ষত মূল্যস্ফীতি ধরে রাখতে চাচ্ছে তা কিন্তু শেষ পর্যন্ত থাকবে না। অন্যদিকে ব্যাংকিং সেক্টরে আমানত ও ঋণের মধ্যে স্ট্রেড ২%-এর বেশি থাকা কোনভাবেই উচিত নয়। এটাও দেশের কৃষি ও শিল্প ব্যবসার প্রসারে অন্তরায় বৈকি। সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ ঘুরে গেলেন। লি নাক ইয়োন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনাকে ফলপ্রসূ উল্লেখ করে আশা করেন যে, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বিনিয়োগ আরও সম্প্রসারিত হবে। ভূ-রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনার নেতৃত্ব গুণে বাংলাদেশের গুরুত্ব বহির্বিশ্বে অনেক গুণে বেড়েছে। সে জন্যই এই সম্পর্ক আরও গভীর হওয়া বাঞ্ছনীয়। শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে দক্ষিণ কোরিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। আবার দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য, আমদানি বিকল্পায়ন শিল্প প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। দেশ যখন এগিয়ে চলে, তখন অনেকেই বন্ধু হতে চায়। তবে যে যায় লঙ্কায় সে যেন রাবণ না হতে পারে সে জন্য যথাযথ চেক এ্যান্ড ব্যালেন্সের ব্যবস্থা থাকতে হবে। কোরিয়ার সঙ্গে যে চুক্তিগুলো স্বাক্ষর হয়েছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে সাংস্কৃতিক কর্মসূচী বিনিময়, বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস একাডেমির সঙ্গে কোরিয়া ন্যাশনাল ডিপ্লোমেটিক একাডেমির মধ্যে সমঝোতা, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্র্তৃপক্ষ ও কোরিয়া ট্রেড ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন এজেন্সির মধ্যে সমঝোতা। কোরিয়ার সঙ্গে এ চুক্তিগুলো যেন অর্থবহ হয়। সরকারপ্রধান যথাসময়ই মন্তব্য করেছে যে, সমগ্র দেশে জেলাভিত্তিক উন্নয়নের বাজেট প্রণয়নের জন্য পরিকল্পনা গৃহীত হবে। এটি আসলে অত্যন্ত দরকার। কুমিল্লা জেলায় একটি এয়ারপোর্ট নির্মাণ করা অত্যন্ত জরুরী হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি কুমিল্লা থেতে দাউদকান্দি হয়ে কাঁচপুর পর্যন্ত রেললাইন চালুর পদক্ষেপও ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় থাকা দরকার। আশা করি, প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে তার সুচিন্তিত নির্দেশনা দেবেন। উপরোক্ত দুটো পদক্ষেপ নিলে ঢাকার ওপর চাপ কিছুটা কমবে। ঢাকায় সরকার যথাযথ মেগা-প্রকল্প গ্রহণ হতে চায়। এ জন্য প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ করা প্রয়োজন, ব্যাংকিং ক্ষেত্রে প্রধান কার্যালয় দেশের বিভিন্ন স্থানে সরিয়ে ছিটিয়ে দিলে নতুন ব্যবসায়ী প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর আওতায় তৈরি করা সম্ভব হতো। দেশে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য প্রধানমন্ত্রী গুরুত্বারোপ করেছেন। তার এ নির্দেশনা যথার্থ অর্থে বাস্তবায়িত হওয়া বাঞ্ছনীয়। গত সাড়ে দশ বছরে দেশে দারিদ্র্যের হার হ্রাস পেয়ে ২১%-এ এসেছে। এটি অবশ্যই প্রশংসনীয় ঘটনা। দেখা যায়, সমাজের সর্বস্তরের মানুষের জন্য রয়েছে অংশীদারিত্বভিত্তিক উন্নয়ন কাঠামো সেটি প্রাতিষ্ঠানিক হোক কিংবা অপ্রাতিষ্ঠানিক হোক। প্রবৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব উন্নত বিশ্বে যে সব দেশে গ্রহণ করা হয়েছে সেখানে দেখা যাচ্ছে যে, কর্মসংস্থানের হার কমে যাচ্ছে। আমাদের দেশে আমরা চাই না চতুর্থ শিল্প বিপ্লব গ্রহণ করতে হবে এক্ষেত্রে যাতে উন্মুক্ত মানবসম্পদ বিভিন্ন পর্যায়ে তৈরি হয়। সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এমনকি আমাদের যে সমস্ত হোয়ইট কোলার এবং ব্লু কোলার শ্রমিক বিদেশে রফতানি করব তারা যাতে সম্যকভাবে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব সম্পর্কে সম্যকভাবে ধারণাপ্রাপ্ত হয় সে জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। দুঃখজনক হলেও সত্য এ দেশে এক শ্রেণীর বেনিয়া আছেন তারা শিক্ষা-স্বাস্থ্য খাতে ব্যবসা বাণিজ্য করেন। ছেলেবেলায় পড়া বিদ্বীন দুর্জন হলেও পরিত্যাজ্য এ উক্তিটি আমি সব সময়ে স্মরণ করি। এই বেনিয়ারা যে মাফিয়া নেক্সাস গড়ে তুলেছে তার ফলে আজ দেশের অনেক স্থানে যেমন উপযুক্ত শিক্ষক নেই তেমনি চিকিৎসক, নার্সও নেই। সম্প্রতি মানিকগঞ্জ ও ঘিউর উভয় জায়গায় গিয়ে দেখলাম হাসপাতালে ডাক্তার না থাকলেও প্রাইভেট প্যাকটিসে যথারীতি রোগী দেখছেন। এমনতর তো হয়ার কথা নয়। সরকারী চাকরিতে থেকে নিয়মিত হাসপাতালের সময়ে হাসপাতালে থাকা বাঞ্ছনীয়। কিন্তু হাসপাতালের বদলে প্রাইভেট প্রাকটিসে মত্ত। আসলে ডাক্তারী সেবাও বিকেন্দ্রীকরণ করা দরকার এবং প্রতিযোগিতামূলক হলে কেবল যারা জনহিতৈষী তারাই টিকে থাকবেন। অন্যদিকে যে সমস্ত শিক্ষক নানামুখীা দুর্নীতি করে পরাশ্রয়ী হয়ে বেঁচে আছেন, তাদের জন্য কষ্ট হয়। তবে এদের সংখ্যা নগণ্য। কোন শিক্ষক-শিক্ষিকা ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন তবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আচরণের বিকল্প নেই। এ জন্য অবশ্যই তাদেরই শিক্ষকতায় আশা উচিত যারা এ পেশাকে ভালবাসেন। দেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। এই এগিয়ে যাওয়ার পথে স্বচ্ছতা, ন্যায়পরায়ণতা ও দুর্নীতিমুক্তভাবে রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ে উঠুক। ভোগবাদী সমাজ ব্যবস্থায় অতি ভোগ ও মুনাফা মোটেই ভাল নয়। আয় বৈষম্য দূর করতে হবে। লেখক : শিক্ষক ও অর্থনীতিবিদ Pipu/[email protected]
×