ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

হীরা সোবাহানের চিত্রকর্মে জীবনের আখ্যান

প্রকাশিত: ০৯:৪৬, ১৯ জুলাই ২০১৯

 হীরা সোবাহানের চিত্রকর্মে জীবনের আখ্যান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেয়ালজুড়ে ঝুলছে ছোট ছোট ক্যানভাস। উদ্ভাসিত হয়েছে বিবিধ বিষয়। তবে আকারে ছোট হলেও অনুভূতির প্রকাশে নেই সীমাবদ্ধতা। ক্ষুদ্রাকৃতির চিত্রপটগুলো বলে যায় গভীরতর বোধের কথা। রং-আর রেখায় প্রকাশিত হয়েছে জীবনের আখ্যান। মিনিয়েচার চিত্রকর্মগুলো এঁকেছেন চিত্রশিল্পী অধ্যাপক ড. হীরা সোবাহান। এমন অনেক ক্ষুদ্রাকৃতির ছবি নিয়ে ধানমন্ডি আঁলিয়স ফ্রঁসেজের লাগারিতে চলছে প্রদর্শনী। শিরোনাম ‘জীবন এবং সময়ের আখ্যান-১’। মিনিয়েচার চিত্রকর্ম আঁকার প্রতি রয়েছে এই শিল্পীর বিশেষ যুক্তি। সে প্রসঙ্গে বলেন, বড় ক্যানভাসের ছবি দূর থেকেও দেখে অনেকটাই বোঝা যায়। কিন্তু মিনিয়েচার আর্ট দেখতে হলে ছবির কাছে আসতে হবে দর্শককে। তারপর গভীর মনোযোগে অবলোকন করতে। এর ফলে ছবি ও এর বিষয়বস্তুর সঙ্গে সহজেই সম্পৃক্ততা ঘটে দর্শকের। ছোট ছোট চিত্রকর্মে নানা অনুভূতির গল্প এঁকেছেন শিল্পী। ‘ইউনিটি’ শিরোনামের ছবিতে অনেক হাতের উপস্থিতিতে ডাক দিয়েছেন ঐক্যের। সিডরের ভয়াবহতার দৃশ্যকল্প উঠে এসেছে আরেকটি ছবিতে। নির্বিকারে মানুষ কর্তৃক প্রকৃতি নিধনের নির্মমতাকেও ছুঁয়ে গেছেন ক্যানভাসে। নিউজপ্রিন্টের ওপর অয়েল প্যাস্টেল, কালি-কলম এবং এ্যাক্রিলিকের ব্যবহারে সময়ের আখ্যানকে তুলে ধরেছেন শিল্পী। শিল্পের আধুনিকতম প্রয়োগে অনায়াস দখল, বিশেষ করে কংক্রিট, অর্ধ-বিমূর্ত এবং বিমূর্ত শিল্প-ঘরানায় মূর্ত হয়েছে চিত্রপটে। উঠে এসেছে স্বদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, আধুনিক জীবনযাত্রা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, সমাজের প্রভূত ব্যর্থতা, সামাজিক অবক্ষয়ও। বিমূর্ত ধারায় ছবি আঁখা প্রসঙ্গে হীরা সোবাহান বললেন, এই ধারায় ছবির মধ্যে অন্যরকম এক ইন্দ্রজাল রয়েছে। মূর্ত ধারার চিত্রকর্ম সহজেই যে কেউ বুঝতে পারে। কিন্তু বিমূর্ত ধারার ছবির ক্ষেত্রে দর্শকের নিজস্ব একটা স্বাধীনতা রয়েছে। সে নিজের মতো করে বুঝে নিতে পারে। আবার শিল্পীকেও ছবি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতে পারে। যাতে দর্শকের সঙ্গে শিল্পীরও একটি সম্পর্কের সেতুবন্ধন তৈরি হয়। ড. হীরা সোবাহান ছাপচিত্রী, নক্সাকার, গবেষক এবং লেখক হিসেবে পরিচিত। তিনি ‘বাংলাদেশের ছাপচিত্রকলা এবং তিনজন শিল্পী : সফিউদ্দীন আহমেদ, মোহাম্মদ কিবরিয়া ও মনিরুল ইসলাম (১৯৪৮-২০০৮)’ শীর্ষক অভিসন্দর্ভ রচনা করেন। তিনি প্রায় ৮৮টি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দলীয় চিত্রকর্ম প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করেছেন। ড. হীরা সোবাহান বর্তমানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগের প্রিন্টমেকিং বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত। হীরা সোবাহানের পাঁচ শতাধিক মিনিয়েচার শিল্পকর্মের মধ্যে ১০১ দিয়ে সাজানো হয়েছে এই প্রদর্শনী। প্রদর্শনীটি চলবে ২৩ জুলাই পর্যন্ত। সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটা থেকে রাত নয়টা এবং শুক্রবার ও শনিবার সকাল নয়টা থেকে দুপুর ১২টা এবং বিকেল পাঁচটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত প্রদর্শনীটি খোলা থাকবে। রবিবার সাপ্তাহিক বন্ধ।
×