ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ডিজিটাল গানের যুগ

প্রকাশিত: ১০:৩৯, ১৯ জুলাই ২০১৯

 ডিজিটাল গানের যুগ

গৌতম পান্ডে ॥ ‘ওই সময়ের কথা মনে পড়লে খুবই খারাপ লাগে। ১৯৮৭ সালের দিকে আমি প্রথম এই লাইনে আসি। আমি তখন ঢাকার পাটুয়াটুলীর নূরুল হক মার্কেটে সুর তরঙ্গ নামের একটি গান রেকর্ডিংয়ের দোকানে চাকরি করতাম। সে সময়ে মানুষের বিনোদন ছিল সিনেমা দেখা আর নিজের পছন্দ মতো গান শোনা। পছন্দের গান অডিও ক্যাসেটে রেকর্ডিংয়ের জন্য দোকানে লাইন লেগে থাকত। বিশেষ করে দশ রোজার পর থেকে আমাদের ঘুম হারাম হয়ে যেত। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা রেকর্ডিংয়ের কাজ চলত। খাবারও ঠিক সময়মতো খেতে পারতাম না। চাঁন রাতের দুই/তিন দিন আগে লাইন ধরে পাবলিক আমাদের এই ক্যাসেট নিত। এরপর আস্তে আস্তে বাজারে এলো সিডি। আমরা পরে সিডিতে গান রেকর্ডিং করে দিতাম। আর এখন প্রযুক্তির কাছে আমাদের ব্যবসাটা পুরোপুরি মাথানত। আমরা হার মেনেছি। মানুষ আগে গান শুনত। এখন গান শুধু শোনেই না, দেখেও। সারাদিন কানের মধ্যদিয়ে বক-বক শোনে আর রুচিহীন ভিডিও দেখে। পাবলিকের রুচি নষ্ট হয়ে গেছে। ব্যবসাটা ধরে রাখার কারণ হচ্ছে এখনও কিছু কিছু গান পাগল মানুষ আছে যারা রেডিমেড গান শোনে না, তারা পছন্দের গান সিডি বা ক্যাসেটে রেকর্ডিং করে বাড়িতে বা বাসায় বসে শোনে। ব্যবসাটা ধরে রেখেছি স্মৃতি হিসেবে। আমরা এখন টিকে আছি রেকর্ডিংয়ের পাশাপাশি অন্য সামগ্রী বিক্রি করে’- ভারাক্রান্ত হৃদয়ে কথাগুলো বলছিলেন রাজধানীর নিউ এলিফ্যান্ট রোডের সুরবীণা রেকর্ডিং সেন্টারের ম্যানেজার মোঃ উজ্জ্বল। দেশে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় গান শোনার মাধ্যমে চলে এসেছে বড় ধরনের পরিবর্তন। অনেকেই একে বলছেন ডিজিটাল গানের যুগ। একটা সময় ক্যাসেট প্লেয়ারে গান শোনার বিষয়টি ব্যাপক প্রচলিত ছিল। মূলত নব্বইয়ের দশক থেকে এই শতকের শুরু পর্যন্ত ক্যাসেটে গানের এ্যালবাম প্রকাশ হতো। এরপর সিডি প্লেয়ারে গান শোনা শুরু হলে দ্রুত হারিয়ে যায় ক্যাসেট যুগ। কিন্তু বর্তমানে এসব কিছু ছাড়িয়ে জায়গা করে নিয়েছে অনলাইনে গানের প্রকাশনা। ইউটিউব, ফেসবুকের মাধ্যমে শ্রোতা যে কোন সময় যে কোন স্থান থেকে উপভোগ করতে পারছেন গান। সেই সঙ্গে বিভিন্ন মোবাইল এ্যাপ্লিকেশন্সের কারণে বদলে যাচ্ছে শ্রোতাদের গান শোনার অভ্যাস। এর মধ্যে গ্রামীণফোনের জিপি মিউজিক, রবির ইয়ন্ডার মিউজিকের কথা বেশি উল্লেখ করলেন অনেক শ্রোতা। নিউ এলিফ্যান্ট রোডের রাজধানী কমপ্লেক্সে গানের ভুবন নামে একটি সিটি-ক্যাসেটের খুবই জনপ্রিয় দোকান ছিল। যেখানে সব সময়ই জনপ্রিয় গানগুলো বাজত। এখন দোকানটি বন্ধ। জানা যায়, সেখানে এখন মিষ্টির দোকান হবে। একই রোডে জি সিরিজের গীতাঞ্জলি নামের একটি দোকান আছে। সেটিও এখন বেশিরভাগ সময় বন্ধ থাকে। বন্ধের পথে পাটুয়াটুলীর নুরুল হক মার্কেটের দোকান গীতিকা ও সুর সাগর। গাউছিয়া মার্কেটে ছিল গানের ডালি, সেটাও বন্ধ হয়ে গেছে। নিউ এলিফ্যান্ট রোডের সুরবীণা রেকর্ডিং সেন্টারে ম্যানেজার মোঃ উজ্জ্বলের গান রেকর্ডিংয়ের ব্যস্ততা নেই। মাইকে এখন আর বাজে গান। কম্পিউটার ডিভাইস বিক্রির বিষয় নিয়ে তিনি আলাপ করছেন সরবরাহকারী এক বিক্রেতার সঙ্গে। তিনি বললেন, আমি ’৮৭ সাল থেকে প্রায় ১০ বছর কাজ করেছি পুরান ঢাকার পাটুয়াটুলীর নুরুল হক মার্কেটের সুর তরঙ্গ নামের একটি রেকর্ডিংয়ের দোকানে। তখন অডিও ক্যাসেটে গান রেকডিং হতো। পাবলিক তখন বিভিন্ন শিল্পীর বাছাই বাছাই গান শুনত। রবীন্দ্রসঙ্গীত, পল্লীগীতি, নজরুলসঙ্গীত, গজল যার যেগুলো পছন্দ তা লিস্ট করে নিয়ে আসতেন আমাদের কাছে রেকর্ডিংয়ের জন্য। সে সময় একটি ক্যাসেট রেকর্ডিং করতে আমাদের প্রায় এক সপ্তাহ লেগে যেত। পাবলিক গানের পেছনে মশগুল থাকত। নতুন গান বাজতে শুনলে হুমড়ি খেয়ে পড়ত গানটি শোনার জন্য, রেকর্ডিংয়ের জন্য। অনেকে বলত আমরা ট্রেনে চলে যাব অথবা কেউ বলত আমাদের বাস ছাড়বে অমুক সময়, যত তাড়াতাড়ি পারেন ওই দোকানে যে নতুন গানটা বাজছে-ওটা চাই। আমরা হিমশিম খেয়ে যেতাম। পনেরো-বিশ বছর ওখানে থাকার পর এলিফ্যান্ট রোডে সুর বিতান রেকর্ডিং সেন্টারে প্রায় ১২ বছর ধরে চাকরি করছি। নিজের বহুদিনের শখ ছিল একটি রেকর্ডিংয়ের দোকান দেয়ার। সেই শখ থেকেই ‘সুর বীণা’ রেকর্ডিং সেন্টার। শুধুমাত্র স্মৃতি ধরে রাখার জন্যই এটা করি। আপাতত বন্ধের ইচ্ছে নেই। কারণ আমার রক্তের সঙ্গে ব্যবসাটা মিশে গেছে। আমি বলব না যে এখন ভাল গান হচ্ছে না। তারা হয়ত যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এটাই মানিয়ে নিচ্ছে। আমাদের কাছে যেসব গান আছে এটা গুগলে পাওয়া যায়। কিন্তু একটা গান শোনার জন্য বিভিন্ন জায়গায় ক্লিক করা অনেকে পছন্দ করে না। তারা চায় বাসায় বসে ঠা-া মাথায় গান শুনতে। তাই কেউ কেউ আমাদের কাছে এখনও আসে। প্রায় সব বাসায়ই আগে গানের ক্যাসেট দেখা গেলেও, এখন তা খুঁজে পাওয়া মুশকিল। ঢাকার শাহবাগের একটি সিডির দোকানে গিয়ে দেখা গেল চড়া ভলিউমে গান বাজছে। কিন্তু দোকানে কোন ক্রেতা নেই। সুরের মেলা নামে ওই দোকানের ঠিক উল্টোপাশেই ছিল আরেকটি সিডির দোকান। সেটি বন্ধ হয়ে গেছে এখন ওখানে ছেলেদের পোশাকের দোকান হয়েছে। এলিফ্যান্ট রোডের ইস্টর্ণ মল্লিকা মার্কেটের বিপরীতে কোনক্রমে নিউ সুর বিতান নামের একটি সিডি রেকর্ডিংয়ের দোকান। দোকানের মালিক মোঃ শাহ আলম মিন্টু জানালেন, আর চালাতে পারছি না। হয়ত খুব শীঘ্রই বন্ধ করে দিতে হবে। সারাদিন কোন কেনাকাটা নেই। দিনের পর দিন এত লোকসানে চলা মুশকিল। দোকান ভাড়া দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে, লাভ তো দূরের কথা। কেউ এখন সিডি কেনে না। সবাই ইউটিউবে গান শোনে। জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ফাহমিদা নবী এ বিষয়ে বলছিলেন, এই মিউজিকও কিন্তু এক ধরনের রূপান্তর। আগে মানুষ লং প্লেতে গান শুনত। তারপর এলো ক্যাসেট। এরপর সিডি প্লেয়ার। মানুষের এখন অত সময় নেই। এখন অনলাইনে, ফেসবুক ইউটিউবে গান শোনে। তার মানে বলব না গান শোনা কমে গেছে। গান কি আগের মতো রেখাপাত করতে পারছেÑ এ প্রশ্নের জবাবে ফাহমিদা নবী বলেন, গানের এত ভ্যারাইটিজ। বাংলাদেশের মানুষ গান খুব কম শোনে। এজন্য এখন যদি ভাল গান হয়েও থাকে সেটাও শোনার সময় কম। আমার গানের বরাবরই একটা অন্ধ দর্শক-শ্রোতা আছে। সেই জায়গা থেকে আমি ভালই ফিডব্যাক পাই। আমি আমার জায়গায় খুবই কমিটেড থাকি। ভিউজ দিয়ে কখনও কোন শিল্পীকে শিল্পী বলা যাবে না। অনেক বেশি কাজ করার চেয়ে আমি কোয়ালিটি সম্পন্ন কাজ করাই বেশি পছন্দ করি। এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও বাংলাদেশ মিউজিক ওনার্স এ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নাজমুল হক ভূঁইয়া খালেদ বলছিলেন, এখন আমাদেরও এর সঙ্গে তাল মেলাতে হচ্ছে। পুরো ইন্ডাস্ট্রিকে এখন থার্ড পার্টির মাধ্যমে কাজ করতে হচ্ছে। আমাদের হাতে নিয়ন্ত্রণ নেই যেটা সিডি ক্যাসেটে আমাদের হাতে ছিল। অনেক শিল্পী এখন মিউজিক ভিডিও তৈরি করে ইউটিউব কিংবা ফেসবুকে আপলোড করছেন। লাখ লাখ মানুষ সেখান থেকেই গানটি উপভোগ করছেন। মিউজিক ওনার্স এ্যাসোসিয়েশনের কমিটির সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলছিলেন সিডির যুগ আর নেই। গান এখন বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যমে। তিনি বলেন, আগে মাধ্যম একটাই ছিল। তখন লাখ লাখ সিডি বিক্রি হয়েছে। ২০০৮ থেকে আস্তে আস্তে ধস নামল। আগে একটা সিডি ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজার করতাম। এখন ২০০ কপি করলেও সেটা চলা মুশকিল হয়ে যায়। এখন যা সিডি করা হয় তা শুধু প্রদর্শন আর প্রকাশনা উৎসবে দেখানো হবে সেজন্য। তবে ডিজিটাল মাধ্যমে ভর করে মাঝখানে বাজারে যে ধস নেমেছিল সে অবস্থা এখন তারা কাটিয়ে উঠেছেন জানান মিস্টার হোসেন। তিনি বলেন, মনে করুন আগে বার্ষিক ১৫ থেকে ২০ কোটি টাকা কেনাকাটা হতো। পাঁচ বছর আগে এটা নেমে এসেছিল শূন্যে কিন্তু এখন গুগল থেকে আমরা ভালই পাচ্ছি। মোবাইল ফোনওয়ালাদের কাছ থেকেও পাচ্ছি। ক্যাসেট প্লেয়ারে গান শোনার যুগ শেষ হয়েছিল সিডি আসার পর। আর এখন হয়ে উঠছে অনলাইন কেন্দ্রিক। মিউজিক কোম্পানিগুলোর মালিকদের সংগঠন এমআইডির সদস্য সংখ্যা কয়েক বছর আগেও ছিল এক শ’ সত্তরের বেশি। বর্তমানে তা ছিয়াশিতে নেমে এসেছে। এখন যারা টিকে আছে তারা টেলিকম কোম্পানিগুলোর মোবাইল এ্যাপের মাধ্যমে গান কিংবা অনলাইন যে কোন মাধ্যমে গান বিক্রি করে ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে। মোবাইল অপারেটরদের কাছ থেকে প্রতিবার ডাউনলোড করলে একটা টাকা পাচ্ছে মিউজিক কোম্পানিগুলো। আনোয়ার হোসেন বলেন, ২০০৫ থেকে ’১৩ পর্যন্ত মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি কালো অধ্যায় পার করেছে। এখন ডিজিটাল মাধ্যমে এসেছে নিজেদের অস্তিত্ব ধরে রাখতে। অনলাইন থেকে গান শুনতে চাইলে অনলাইন থেকে ডাউনলোড করে শুনতে হবে। কোন কোন ক্ষেত্রে বিনে পয়সায়ও এসব গান পাওয়া যায়। এর বাইরে বিভিন্ন মোবাইল ফোনের মিউজিক এ্যাপস তো আছেই। অনলাইনে গান তোলার জন্য এখন কনটেন্ট প্রভাইডাররাও মাঠে নেমেছেন। কাইনেটিক মিউজিক এমনই একটি প্রতিষ্ঠান যারা বিভিন্ন শিল্পীর গান অনলাইনে তোলার কাজ করছেন। শিল্পীরা এখন সিডি বের করেন সংগ্রহে রাখার জন্য না হয় সৌজন্য কপি দেয়ার জন্য- বিক্রির জন্য নয়। এই প্রতিষ্ঠানের জামশেদ চৌধুরী বলছিলেন জনপ্রিয় এবং নতুন দুই কাতারের শিল্পীই তাদের মাধ্যমে অনলাইনে গান ছড়িয়ে দিতে চাইছেন। নামকরা আর্টিস্টদের মধ্যে মাইলস, শিরোনামহীন, আসিফ আকবর, পড়শী, ইমরান, নেমেসিস আর্টসেল রয়েছে। অনেকের টোটাল রিলিজ আবার অনেকের একটা-দুটো গান নিয়ে আমরা কাজ করছি। গানে রেখাপাত হচ্ছে না কেন এ প্রশ্নের জবাবে গীতিকবি শহীদুল্লাহ্ ফরায়জী বলেন, প্রথমত রেখাপাত করছে না গানের মাধ্যমের বহুমাত্রিক রূপান্তর ঘটেছে। গান শোনার অসংখ্য উপায় বের হয়েছে। ভিন্ন ভাষাভাষীর গান, ভিন্ন আঙ্গিকের গান, ভিন্ন মাত্রার গান শোনার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এটা হলো প্রযুক্তিগত সুবিধা। আরেকটা হলো আমাদের যে বিদ্যমান মানসিক অবস্থান, বা সেই মানসিক চেতনাকে নাড়া দিতে পারে এমন কোন গান নির্মাণের যেমন অভাব রয়েছে, তেমনি একটা ভাল গান সব শ্রেণীর শ্রোতাকে শোনাবার বা পেঁৗঁছানোর কোন মাধ্যম নাই। সুতরাং আর্থিক, প্রযুক্তিগত আর সংস্কৃতিগত যে জীবন সেই জীবনের উপযুক্তগত যে সুবিধা এবং প্রযুক্তিগত যে অস্থিরতা-সব মিলিয়ে মনে হচ্ছে আমরা আমাদের গানে প্রভাব ফেলতে পারছি না। গীতিকবি সুজেয় শ্যাম বলেন, আগে ছিল একটা টেলিভিশন। এখন এত চ্যানেল হয়ে গেছে। কিন্তু গান শুনবে কে? সিডি নাই, ক্যাসেট নাই। শিল্পী এখন যারা আসছেন তারা সব হারানো দিনের গান গেয়েই আসছেন। টিভি খুললে এখন একই মুখ দেখা যায়। শিল্পীরা এখন চিন্তা করে পাঁচটা গান নয়, একটা গান গাইলেই লাখ লাখ লোক তা দেখছে। গানের প্রচারও খুব কম। কোন উৎসব পার্বণ এলে আমরা আগে থেকেই অপেক্ষায় থাকতাম এবার কার গান আসবে? এখন জানাও যায় না। বিজ্ঞান আমাদের অনেক উপরে নিয়ে গেছে, সবকিছু খুবই আধুনিক হয়ে গেছে। এখন ওস্তাদ রাখার দরকার নাই, ইউটিউব দেখে গান শেখে। গান বাজনা যদি ইউটিউব থেকে শেখা যায়, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা স্কুল কলেজে সঙ্গীত বিভাগ রাখার দরকার কি? সঙ্গীত বিদ্যালয়ের দরকার কি প্রশ্ন করেন তিনি। বলেন, এখন গান শেখার দরকার নাই একটা যদি হিট হয়ে যায় তাতেই বিরাট পয়সা। এ প্রজন্মের সঙ্গীতশিল্পী কোনাল বলেন, সঙ্গীতের স্বর্ণযুগের অডিয়েন্স আর এখনকার অভিয়েন্স এক না। স্বর্ণযুগে যে গান শুনত এখনকার অভিয়েন্স সে গান শোনে, তবে অন্যরকম চায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চাহিদা চেঞ্জ হয়েছে। আমার মনে হয় বাংলা গান খুবই সুন্দরের দিকে এগোচ্ছে। শিল্পী কুমার বিশ্বজিৎ বলেন, গান শোনার মাধ্যম পাল্টালেও একটা শ্রেণীত অনলাইন বেজড গান শোনার টেকনোলজিতে এ্যাডভ্যান্স নয়। সো, একটা শ্রেণী কিন্তু বাদ পড়ছে। যেহেতু বিশ্বায়নের যুগে আপনাকে টিকতে হলে একটু চাকচিক্য একটু আকর্ষণের বিষয় থাকে। কিন্তু সঙ্গীতের সবচেয়ে বড় বিষয়টা হচ্ছে গানের কথা, সুর, গায়কী। আমার কাছে মূল বিষয়ের চাইতে অনুষঙ্গটা এখন বড় হয়ে যায়। আমি ভিডিওটাকে একটা অনুষঙ্গ মনে করি। এই সময়ে একটা করে গান আর সেই গানের ভিডিও, মনোযোগ এই এক গানেই। দিন শেষে গানের ছড়িয়ে পড়ার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে ভিউজ কত হলো, সেটা। বাংলা গান ও গানের ভবিষ্যত মসৃণ রাখতে চাইলে ভিউজের সংখ্যা গণনার অসুস্থ প্রতিযোগিতা থেকে বেরিয়ে এসে গান শোনাবার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
×