ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মানতে পারছেন না শচীন, জানতেনই না বোল্ট

প্রকাশিত: ১১:২৮, ১৯ জুলাই ২০১৯

মানতে পারছেন না শচীন, জানতেনই না বোল্ট

জাহিদুল আলম জয় ॥ শুধু বিশ্বকাপ ক্রিকেটই নয়, ক্রিকেট ইতিহাসেরই সেরা ম্যাচ দেখেছে ক্রিকেট দুনিয়া। ১৪ জুলাই ক্রিকেটের মক্কাখ্যাত ঐতিহাসিক লর্ডসে ১২তম বিশ্বকাপের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল স্বাগতিক ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড। পরতে পরতে উত্তেজনায় ঠাসা ম্যাচটিকে সবাই সেরা হিসেবে অভিহিত করেছেন। ঘটনাবহুল ফাইনাল মহারণ দু’দফায় ‘টাই’ হয়। নির্ধারিত ৫০ ওভার করে মোট ১০০ ওভারের খেলা ‘টাই’ হয়। এরপর সুপার ওভারেও (দু’দল এক ওভার করে খেলে) কোন দল জয় পায়নি বা হারেনি। এখানেও অবিশ্বাস্যভাবে খেলা ‘টাই’ হয়। কিন্তু অদ্ভুতুড়ে নিয়মের বেড়াজালে না হেরেও আশাহত হতে হয় কিউইদের। পুরো ম্যাচে বেশি বাউন্ডারি মারার সুবাদে নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়ে যায় ইংলিশরা। এভাবে ফলাফল হওয়ায় গোটা ক্রিকেটবিশ্ব হতচকিত হয়ে যায়। প্রায় সবাই না হেরেও নিউজিল্যান্ডের রানার্সআপ হওয়ার বিষয়টি মানতে পারছেন না। ইংলিশরা সাধুবাদ পেলেও আইসিসির নিয়ম নিয়ে কড়া সমালোচনা অব্যাহত আছে। এরই ধারাবাহিকতায় ‘সুপার ওভার’ নিয়ে কথা বলেছেন সর্বকালের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার, ভারতীয় ক্রিকেট ঈশ্বর শচীন টেন্ডুলকর। ২০১১ সালের বিশ্বকাপ জয়ী এই তারকা ব্যাটসম্যান কিছুতেই এভাবে রেজাল্ট মেনে নিতে পারছেন না। তেমনি বেদনায় সিক্ত হওয়া কিউই পেসার ট্রেন্ট বোল্ট বলেছেন আরও অদ্ভুত কথা। সুপার ওভারে তিনিই কিউইদের হয়ে বল করেছিলেন। অথচ তারকা এই পেসার নাকি জানতেনই না সুপার ওভারের বিষয়টি। ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসির নিয়ম নিয়ে অনেকেই মন্তব্য করেছেন। এবার কথা বলেছেন শচীন টেন্ডুলকর। জীবন্ত এই কিংবদন্তি সুপার ওভার প্রসঙ্গে বলেন, আমি মনে করি ফাইনালে আরও একটা সুপার ওভার হওয়া উচিত ছিল। যে দল সবচেয়ে বেশি চার মেরেছে তাদের জয়ী ঘোষণা করার পরিবর্তে আরেকটি সুপার ওভার হলে ভাল হতো। মাস্টার ব্লাস্টার আরও বলেন, কেবল বিশ্বকাপের ফাইনাল বলে নয়। যে কোন খেলাতেই এটা গুরুত্বপূর্ণ। যেমন ফুটবলের ক্ষেত্রে দেখুন, যখন খেলা অতিরিক্ত সময়ে গড়ায়, তখন অন্য কোন কিছুই বিবেচনায় আনা হয় না। শুধু শচীনই নন, বর্তমান ভারত জাতীয় ক্রিকেট দলের সহঅধিনায়ক রোহিত শর্মাও সুপার ওভারের নিয়মের সমালোচনা করেছেন। রোহিত টুইট করে বলেন, ক্রিকেটের কোন কোন নিয়মকে সত্যিই ভালভাবে পর্যালোচনা করা উচিত। ২০১১ বিশ্বকাপের ‘ম্যান অব দ্য সিরিজ’ নির্বাচিত হওয়া সাবেক ক্রিকেটার যুবরাজ সিংও সুপার ওভারে নিউজিল্যান্ডের পরাজয় মেনে নিতে না পেরে বলেছিলেন, আমি এই নিয়মটি মানতে পারছি না। কিন্তু নিয়ম তো নিয়মই। বিশ্বকাপ চলার সময়ই সেমিফাইনালে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যাওয়ার পর বিশ্বকাপের ফরমেট নিয়েই প্রশ্ন তুলেছিলেন ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলি। বিশ্বকাপেও আইপিএলের মতো প্লে-অফের পক্ষে সরব হন সময়ের সবচেয়ে সেরা এই ব্যাটসম্যান। অন্যদিকে বিশ্বকাপ ফাইনালে যে সুপার ওভার আছে এটাই নাকি জানতেন না নিউজিল্যান্ড পেসার ট্রেন্ট বোল্ট। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি সত্যিই জানতাম না বিশ্বকাপ ম্যাচ ‘টাই’ হলে সুপার ওভারে ম্যাচ গড়াবে। তবে ম্যাচ শেষে কষ্টের সাগরে যে ডুবে গেছেন সেটাও জানাতে ভুল করেননি এই গতি তারকা। এ প্রসঙ্গে বোল্ট বলেন, দু’দলই ১৫ করে রান করেছে। এরপরও ট্রফি পেয়েছে একদল। এমন ম্যাচের ফল মেনে নেয়া অনেক কষ্টকর। নির্ধারিত ৫০ ওভার করে ১০০ ওভারের শেষ ওভারে এসে বোল্ট জানতে পারেন সুপার ওভারের বিষয়টা। এ নিয়ে তিনি বলেন, ইংল্যান্ডের যখন দুই বলে তিন রান দরকার তখন আম্পায়াররা আমাদের বলল যে ম্যাচ ‘টাই’ হলে সুপার ওভার হবে। তখনই আমি ব্যাপারটা সম্পর্কে জানতে পারি। অবশ্যই আমাদের কাজ ছিল ওদের দুই বলে তিন রান না করতে দেয়া। যেটা আমরা করেছিও। তারপর হয় সেই সুপার ওভার। অবিশ্বাস্য একটা ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা হয়েছে আমাদের।
×