ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আম্পায়ারকে ৪ রান দিতে নিষেধ করেছিলেন স্টোকস, জেমস এ্যান্ডারসনের দাবি

সেই বাউন্ডারি চাননি স্টোকস!

প্রকাশিত: ১১:৩০, ১৯ জুলাই ২০১৯

সেই বাউন্ডারি চাননি স্টোকস!

জিএম মোস্তফা ॥ দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান। প্রথমবারের মতো স্বপ্নের বিশ্বকাপের শিরোপা জয়ের স্বাদ পেল ইংল্যান্ড। নাটকীয় ফাইনালে সুপার ওভারে সর্বোচ্চ বাউন্ডারির ওপর ভিত্তি করে নিউজিল্যান্ডকে পরাজিত করে ক্রিকেট বিশ্বকাপের শিরোপা উঁচিয়ে ধরে রুট-মরগানরা। তবে বিশ্বকাপ ফাইনালের বিতর্কিত চার নিয়ে জল্পনা কল্পনা এখনও অব্যাহত। তবে ইংল্যান্ডের টেস্ট দলের ক্রিকেটার জেমস এ্যান্ডারসন বলেছেন বেন স্টোকস নাকি সেই বিতর্কিত বাউন্ডারির চার রান চাননি। আম্পায়ারকে সেই বাউন্ডারি না দিতে বলেন বেন স্টোকস। চার বছর আগে অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপের গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু সেই ইংল্যান্ডই এবার ঘরের মাঠে দুর্দান্ত পারফর্মেন্স উপহার দেয়। শুরু থেকে অসাধারণ পারফর্মেন্স উপহার দেয়া ইয়ন মরগানের দল লর্ডসে ফাইনালেও জ্বলে ওঠে। স্টোকসের দুরন্ত ৮৪ রানের সৌজন্যে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটি প্রথমে টাই হয়। কেননা ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড দুই দলই নির্ধারিত ৫০ ওভারে সমান ২৪১ রান করে। ফলে ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে। সেখানেও কেরামতি দেখান বেন স্টোকস। ৩ বলে ৮ রান করে স্টোকস ইংল্যান্ডকে ১৫ রান তুলতে সাহায্য করেন। যা সুপার ওভারে নিউজিল্যান্ডের করা রানের সমান। কিন্তু যেহেতু ফাইনাল ম্যাচটিতে নিউজিল্যান্ডের তুলনায় বেশি বাউন্ডারি হাঁকায় ইংল্যান্ড তাই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। তবে বিশ্বকাপের ফাইনালে ইংল্যান্ডের ইনিংসের ৫০তম ওভারের চতুর্থ বলে রান নেয়ার সময় বাউন্ডারি লাইন থেকে গাপটিলের ছোড়া বল বেন স্টোকসের ব্যাটে লেগে চার হয়ে যায়। এই চার নিয়েই তৈরি হয় বিতর্ক। অনেকেই বলছেন, মোট ৬ রান দেয়া উচিত হয়নি। কেননা বল যখন থ্রো করা হয়েছিল তখন দুই ব্যাটসম্যান একে অপরকে ক্রস করেননি। তাই হিসেব মতো এটি ৫ রান হওয়ার কথা। এরই মধ্যে স্টোকসের টেস্ট দলের সতীর্থ জেমস এ্যান্ডারসন দাবি করেছেন, স্টোকস আম্পায়ারকে ঐ চার রান দিতে নিষেধ করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘স্টোকস ওই চারের পরেই আম্পায়ারকে গিয়ে বলেন এই চার রান বাদ দেয়া যায় কিনা তা দেখার জন্য।’ কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা আর বাদ দেয়া হয়নি। ক্রিকেটবোদ্ধাদের ধারণা এই ছয় রানই বদলে দেয় ম্যাচের ভাগ্য। এ কারণে পরে সাংবাদিকদের সামনে স্টোকস ঘটনাটির জন্য ক্ষমা চেয়ে নেন নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের কাছে। তিনি বলেন, ‘আমি সারা জীবন এই ঘটনার জন্য কেনের কাছে ক্ষমা চাইব।’ একটু পেছনের দিকে ফিরে তাকালেই দেখা যায় ২০১৬ সালে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে এই স্টোকসের চার বলে চারটি বিশাল ছক্কা হাঁকিয়েই চ্যাম্পিয়ন হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তিন বছর পর যেন সেই হারেরই প্রায়শ্চিত্ত করলেন স্টোকস। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন তিনি। পরবর্তীতে সুপার ওভারেও তার ঝলক দেখে গোটা ক্রিকেটবিশ্ব। আর ইংল্যান্ডকে প্রথম বিশ্বকাপ জেতানোর পুরস্কার হিসেবেই বেন স্টোকসের নামের পাশে বসতে পারে ‘স্যার’ উপাধি। একটি নামী ব্রিটিশ পত্রিকা ও রেডিও চ্যানেলের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক নির্বাচনী বিতর্কের র‌্যাপিড ফায়ার রাউন্ডে ব্রিটেনের দুই প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী বরিস জনসন এবং জেরেমি হান্টকে প্রশ্ন করা হয়, বেন স্টোকসকে নাইটহুড সম্মানে ভূষিত করা উচিত কিনা। প্রশ্নের উত্তরে দুইজনই সম্মতি জানান। তারপর থেকেই জল্পনা তুঙ্গে। ক্ষমতার মসনদে যিনিই বসুন তিনি কি নাইটহুড সম্মানে ভূষিত করবেন ফাইনালের মহানায়ককে? চলতি মাসের শেষেই প্রধানমন্ত্রিত্ব পদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে তেরেসা মে’র। জানিয়ে রাখা ভাল যে, এর আগে ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত এমন ১১ জন ব্যক্তিকে ‘স্যার’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে। চলতি বছরে নাইট হন দেশটির সাবেক অধিনায়ক স্যার এ্যালিস্টার কুক। স্টোকসকে ‘স্যার’ উপাধি দেয়া হবে কিনা তা বলবে সময়। তবে তার দুরন্ত পারফর্মেন্সে মুগ্ধ-বিমোহিত গোটা ইংল্যান্ড দল। এখনও প্রশংসার জোয়ারে ভাসছেন সময়ের সেরা এই ব্যাটসম্যান।
×