ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

লিটন আব্বাস

গ্রামীণ সাংবাদিকতার প্রবাদপুরুষ

প্রকাশিত: ১১:৪৫, ১৯ জুলাই ২০১৯

গ্রামীণ সাংবাদিকতার প্রবাদপুরুষ

উনিশ শতকের আলোকিত সাংবাদিক, গ্রামীণ সাংবাদিকতার প্রবাদপুরুষ ‘গ্রামবার্তা প্রকাশিকা’র (১৮৬৩) সম্পাদক, নির্ভীক কলম সৈনিক, অনুচ্চর জনগণের কণ্ঠস্বর বহুমুখী প্রতিভাধর প্রাতঃস্মরণীয় মানুষ কাঙাল হরিনাথ মজুমদর। কাঙাল হরিনাথ মজুমদার ১২৪০ বঙ্গাব্দের (২২ জুলাই, ১৮৩৩ খ্রীঃ) ৫ শ্রাবণ কুষ্টিয়ার কুমারখালীর কুন্ডপাড়ায় পিতা হলধর মজুমদার ও মাতা কমলিনী দেবীর কোলে জন্মগ্রহণ করেন। আর তাঁর তিরোধানের দিন বাংলা ১৩০৩ (,১৮৯৬ ) ৫ বৈশাখ। বাউল কীর্তন পাঁচালী ছাড়াও গদ্য-পদ্য, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ মিলিয়ে ৪২টি গ্রন্থ মুদ্রিত। তাঁর বিজয় বসন্ত (১৮৫৯ মুদ্রিত), ফিকিরচাঁদের গীতাবলী উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ। কাঙাল হরিনাথ মজুমদারের ‘ওহে দিনতো দেল সন্ধ্যা হল পার করো মোরে’’ গানটি সত্যজিৎ রায় তাঁর পথের পাঁচালী’ সিনেমাতে ব্যবহার করেছেন। বাংলাদেশে বাংলায় সংবাদপত্র প্রকাশনায় প্রথম সুযোগ্য ও অন্যতম উত্তরসূরী ছিলেন কুষ্টিয়া জেলার সংষ্কৃতির তীর্থভূমি কুমারখালীর কুন্ডুুপাড়ার দরিদ্র তিলি পরিবারের কাঙাল হরিনাথ মজুমদার যিনি কারো ধমকে ভয় পাননি, কোনো প্রলোভনের কাছে কখনো মাথা নোয়াননি। স্বাধীন চেতা পল্লীপ্রাণা গ্রাম-বাংলার কাদা-মাটির মানুষ কাঙাল হরিনাথ। তিনি নিঃস্ব-নিরক্ষর গ্রামবাসীদের অভাব-অভিযোগ, দুঃখ-দুর্দশা নিরসনে এবং আমলাদের বর্বরোচিত নির্যাতন তৃণমূল থেকে উৎপাটনের কাহিনীর প্রতিবাদ ও প্রতিকারের অভিপ্রায়ে বাংলা ১২৬৭/বৈশাখ হাতে প্রথম হাতে লিখে দ্বিমাসিক পত্রিকা প্রকাশনা শুরু করেন। কিছুদিন ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের ‘সংবাদ প্রভাকর’ পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেছেন। বাংলা ১২৭০/বৈশাখ বঙ্গাব্দে কলকাতার গিরিশচন্দ্র বিদ্যারতœ যন্ত্র থেকে তিনি তাঁর দ্বিমাসিক ‘গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা’কে মাসিক গ্রামবার্তায় উন্নীত করে ছাপাক্ষরে প্রথম আত্মপ্রকাশ ঘটিয়ে ইতিহাসের সূচনা করলেন। ‘গ্রামবার্তা প্রকাশিকা’ নিয়মিত মাসিকের পাশাপাশি একসময় পাক্ষিক ও সাপ্তাহিকারে আত্মপ্রকাশ ঘটে। গ্রাম হিতৈষণার আদর্শ নিয়েই ‘গ্রামবার্তা’র আত্মপ্রকাশ। ১২৮০ সালে নিজ আবাসলয়ে মথুরানাথ মুদ্রণযন্ত্র নামে ছাপাখানা স্থাপন করেন। এ মুদ্রণ যন্ত্র প্রতিষ্ঠার ব্যাপারটা পরিষ্কার জানা যায় ১২৮০/১৭ শ্রাবণ কলকাতার ‘অমৃতবাজার’ প্রকাশিত সংবাদে। ৩০ থেকে ৩৫ মণ ওজনের ডাবল ক্রাউন সাইজের এই বিশাল মেশিনটিতে কাগজ ছাপাতে লোক লাগতো ৩ থেকে ৪ জন। লন্ডনের ১০ ফিন্স স্টিটের ক্লাইমার ডিক্সন এ্যা- কোম্পানি থেকে কলম্বিয়া প্রেস মডেলের ১৭০৬ নম্বর এ মুদ্রণযন্ত্রটি তৈরি করা হয় ১৮৬৭ সালে। এডওয়ার্ড বিভান এ যন্ত্র পেটেন্ট করেন। কাঙালের এ ছাপাখানা দেখতে আজও দেশ-বিদেশ থেকে পর্যটক, গবেষক, কবি, সাহিত্যিকসহ বিদগ্ধজনেরা আসেন। এ প্রেস থেকে সে সময় বিভিন্ন প্রকার পত্র-পত্রিকা ছাপা হয়েছে। কাঙাল পুত্র সতীষ চন্দ্র মজুমদার ও সাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেনের যৌথ সম্পাদনায় হিতকরী এই মথুরানাথ প্রেস (এমএন প্রেস) থেকেই মুদ্রিত ও প্রকাশিত হতো। এছাড়াও মীর মশাররফ হোসেনের ‘আজীজন নেহার’ (লালন একাডেমিতে রক্ষিত), ‘হিতকরী’, শিবচন্দ্র বিদ্যার্ণবের ‘শৈবী’, পাংশার রওশন আলী চৌধুরীর ‘কহিনূর’, ললিত মোহন পাল ও রাধা বিনোদ সাহার (সাহাজী) ‘বঙ্গীয় তিলি সমাজ পত্রিকা’। মুনতাসীর মামুনের ঊনিশ দশকে বাংলাদেশের সংবাদ সাময়িক পত্র ১ম খ- থেকে জানা যায়Ñঅখ- ভারতবর্ষে সে সময় (১৮৬৬-৬৭ সাল) বাংলাদেশে সর্বমোট ৩১টি প্রেস বা মুদ্রণযন্ত্র ছিল। এর মধ্যে কলকাতায় ১২টি, ঢাকায় ২টি, রংপুর ২টি, মুর্শিদাবাদে ২টি, হাওড়ায় ২টি, ময়মনসিংহ ১টি, মেদিনীপুর ১টি, বর্ধমান ১টি, হুগলী ১টি, ভবানীপুর ১টি ও শ্রীরামপুর ৪টি। অন্য একটি তথ্যে (১৮৭২-৭৩) জানা যায় ঢাকায় ৩টি ও নদীয়া তথা কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ১টি। ১৮৭৩ এর হিসাব মতে প্রকাশিত বাংলা সংবাদপত্রের সংখ্যা ছিল ৩৬টি। এর মধ্যে কলকাতা থেকে ১৭টি, বাকি ১৯টি জেলা সদর ও গ্রামাঞ্চল থেকে। চল্লিশ দশকে গ্রামভিত্তিক সংবাদপত্রের যে প্রকাশ শুরু হয়েছিল, পরবর্তী সত্তর দশকে এসে তার বেশকিছু সংখ্যাতাত্ত্বিক বাড়বাড়ন্ত ঘটে। এ সময় গ্রামীণ সংবাদপত্রের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো এক. ‘হালিশহর পত্রিকা’, দুই. ‘কাঁচরাপাড়া পত্রিকা’, তিন. মুর্শিদাবাদ পত্রিকা, চার. বরিশাল বার্তাবহ এবং পাঁচ. সর্বোপরি হরিনাথ সম্পাদিত ‘গ্রামবার্তা প্রকাশিকা’ বিশেষভাবে দেখা যায়। হরিনাথের এলাকায় নিকটবতী কোন ছাপাখানা না থাকায় যাতায়াতের অসুবিধা সত্ত্বেও কলকাতা থেকেই প্রতিমাসে চারফর্মা আকারে ‘গ্রামবার্তা’ বের হয়েছিল। রক্ষণশীল সমাজপতি ও অত্যাচারী ব্রিটিশ অনুগামীদের সঙ্গে আপোষরফা না করায় হরিনাথ ‘গ্রামবার্তা’কে লাভজনক ব্যবসায় রূপ দিতে পারেননি। অর্থের প্রলোভন, লাঠিয়ালবাহিনী নিয়োগ, ভাড়াটিয়া গুন্ডা নিযুক্ত, মিথ্যা মোকদ্দমায় জড়ানো প্রভৃতি শত চেষ্টায়ও গ্রামীণ এলিট ও পথিকৃৎ কাঙাল হরিনাথকে ভীত তঠস্থ করতে পারেননি। ঊনিশ শতকের মৃত্তিকা সংলগ্ন গ্রামীণ বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী, কবি, সাহিত্যিক, নারী শিক্ষার প্রথিকৃৎ কাঙাল হরিনাথ মজুমদার কায়েমী স্বার্থের সঙ্গে সেবা পরায়নতার সম্পর্ক রাখতে ব্যর্থ হলে তাৎক্ষণিক যে সমস্যার সৃষ্টি হয়, কোন সুষ্ঠু সমাধান সূত্রে তার নিষ্পত্তি না হলে পরবর্তীকালে তা জটিলতর ও অসমাধেয় রূপ নেয় ফলে প্রভূত আর্থিক ক্ষতি স্বীকার করেই কাঙাল হরিনাথ পত্রিকা চালাতেন। অথচ ঊনিশ শতকে অনেকেই প্রেস ব্যবসাকে লাভজনক ব্যবসা হিসাবে চালাতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছিলেন। কলকাতার ‘বেঙ্গল হরকরার’ পত্রিকা রীতিমতো লাভজনক প্রতিষ্ঠান, এ পত্রিকার সম্পাদককে সেকালে ৮০০/= টাকা বেতন দেয়া হতো। এই পত্রিকার পরিচালনা কাজে ৭০ জনের মতো সাব-এডিটরসহ রিপোর্টার নিযুক্ত ছিলেন। এর দফতরে একটি পাঠাগারসহ পাঠ কক্ষও ছিল। আর হরিনাথ তাঁর দিনলিপি (ডায়েরি) তে লিখেছেন- ‘আমি সম্পাদক, আমি পত্রিকা বিলিকারক, আদায়কারী, পত্র লেখক ও সংসারের কর্তা’। কাঙাল হরিনাথ প্রেস করে নিরন্ন ১০/১২ জনের অন্ন-সংস্থানের ব্যবস্থা করেন। হরিনাথ প্রেস করে পল্লীর জনগণের অর্থাৎ সমাজ সেবার উদ্দেশ্যে প্রেসে পত্রিকা ছেপে ঋণজালে জড়িয়ে পড়েন। বরং দেখা যায় কাঙাল হরিনাথ মজুমদার উদরান্নের যশের বা প্রতিপত্তির সংস্থানের আশায় সম্পাদকের বৃত্তি অবলম্বন করেন নি। সংবাদ সাময়িকপত্র পরিচালনায় গ্রামীণ এলিটদের মধ্যে জাতি-ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সকল সচেতন মহলে প্রশংসিত ছিলেন কাঙাল হরিনাথ। গ্রামবার্তা পত্রিকা প্রকাশে কাঙাল হরিনাথ ৭০০/= টাকা ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে ইহলোক ত্যাগ করলে কাঙালের বাউল দলের শিষ্যগণ জনগণের আমন্ত্রণে গান গেয়ে বেড়াতেন। গ্রামবার্তার ১ম সংখ্যায় ১২৭০/বৈশাখ এ পত্রিকার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে সম্পাদকীয়তে লেখা হয়; ‘এ পর্যন্ত বাঙালা সংবাদ পত্রিকা যতই প্রচারিত হইতেছে তাহা কেবল প্রধান প্রধান নগর ও বিদেশীয় সংম্বাদাদিতেই পরিপূর্ণ। গ্রামীয় অর্থাৎ মফঃস্বলের অবস্থাদি কিছুই প্রকাশিত হয় না। কৃষক তাঁতী, রায়ত প্রজা, শ্রমজীবী মানুষের সমস্যা ও অধিকার এর প্রতিকার সম্পর্কে গ্রামবার্তার ভূমিকা ও সচেতনতা ছিল প্রবল। এদের দুঃখ-দুর্দশার কথা বলতে গিয়ে গ্রামবার্তা প্রকাশিকা কোনসময় কোন দ্বিধা বা কুণ্ঠাবোধ করেননি। পাক্ষিক গ্রামবার্তায় প্রায় প্রতিটি সংখ্যাতেই এদের কথা বর্ণিত হয়েছে। দেশীয় তন্তুবায় সম্প্রদায়ের দূরাবস্থা এবং সরকারের ঔদাসীন্য সম্পর্কে ১৮৭৩/ নবেম্বর সংখ্যায় গ্রামবার্তায় তীব্র মন্তব্য স্বাদেশিকতার বিশেষ পরিচয় বহন করছে;- ‘লাঙ্কেষ্টরের তাঁতীরা যতদিন গবর্ণমেন্ট হৃদয়ে বাস করিবে, ততদিন এদেশীয় তাঁতী-জোলার দূরাবস্থা সেই হৃদয়ে স্থান পাইবে, এরূপ ভরসা করা যায় না।’ প্রশাসন যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিবর্গের ত্রুটি-বিচ্যুতি স্খলনে গ্রামবার্তা কঠোরভাবে সমালোচনা করেছে। পাবনা জেলার তদানিন্তন ইংরেজ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মফঃস্বল পরিদর্শনে এলে এক দরিদ্র বিধবার একটি দুগ্ধবর্তী গাভী জবরদস্তি করে নিয়ে যায়। এ সংবাদ হরিনাথের কর্ণগোচর হলে তিনি জেলার ম্যাজিস্ট্রেটের এ গর্হিত অন্যায় কাজের দীর্ঘ প্রতিবাদ জানিয়ে গ্রামবার্তায় ফলাও করে ‘গরুচোর ম্যাজিস্ট্রেট’ শীর্ষক শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করেন। গ্রামবার্তার সংবাদ রাষ্ট্র হলে উক্ত ম্যাজিস্ট্রেট হরিনাথের প্রতি রুষ্ট হন এবং তাঁকে শায়েস্তা করবার জন্য চেষ্টা করেন। কিন্তু কাঙাল হরিনাথের সত্য সেবার অসামান্য জনপ্রিয়তা চারিত্রিক দৃঢ়তার কারণে ম্যাজিস্ট্রেটের পক্ষে হরিনাথকে বিপদগ্রস্ত করা আদৌ সম্ভব হয়নি। বরং পরবর্তীকালে সত্যনিষ্ঠ স্বাধীন মত প্রকাশের নির্ভীকতার জন্য হরিনাথ উক্ত ম্যাজিস্ট্রেটের প্রশংসা অর্জন করেন। ম্যাজিস্ট্রেট লেখেন;-‘এডিটর আমি তোমাকে ভয় করি না বটে; কিন্তু তোমার নির্ভীক সত্য লেখনীর জন্য আমি অনেক কুকর্ম ত্যাগে বাধ্য হয়েছি।’ হরিনাথ যে কেবল প্রজা পীড়নের চিত্রই তুলে ধরেছেন বা অত্যাচারিত কৃষক প্রজার প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করেছেন তা নয়; এদের এ বিরোধ অবসানের জন্য সুনির্দিষ্ট সুপারিশও পথ বাতলে প্রতিকার চেয়েছেন, দেখা যায় ১৮৭২/জুন সংখ্যায় বলা হয়;- ‘আমরা গ্রামবার্তার জন্মাবধি বলিয়া আসিতেছি। গবর্ণমেন্টের সহিত জমিদারদিগের যেমন চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত আছে, তদ্রƒপ জমিদারদিগের সহিত প্রজাদিগের একটা চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত হওয়া সর্বতোভাবে কর্তব্য; তাহা হইলে সকল গোলোযোগের অবসান একেবারে শেষ হইবে...।’ কাঙাল হরিনাথের নিজের প্রেসে পত্রিকা ছাপা হওয়া সত্ত্বেও পত্রিকা প্রকাশের চব্বিশ বছর পর রজত-জয়ন্তীর প্রাক্কালে ১২০০/= টাকা মূল্য আদায় বাকি থাকতে এবং ৭০০/= টাকা ঋণ ভার নিয়ে পত্রিকা প্রকাশনা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন। অথচ এই প্রেস থেকেই মীর মশাররফ হোসেনের কালজয়ী ঊপন্যাস ‘বিষাদসিন্ধু’ গ্রন্থ ছাপা হয়েছিল এবং কিছু অংশ এই প্রেসের এককোণে বসে লেখা হয়েছিল। বাংলা ভাষা সাময়িক সংবাদপত্র ‘গ্রামবার্তা প্রকাশিকা’ জনকল্যাণ, সৎ সাংবাদিকতার আদর্শ ও উদ্দেশ্যে সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে যথাযথভাবে গ্রামগঞ্জের তলদেশের অত্যাচার নিবারণ ও গ্রামবাসীর নানা প্রকার উপকার সাধনসহ বিশ্বদরবারে মাতৃভাষা সেবা করেন। সেই কারণে দূর মফঃস্বল থেকে প্রকাশিত হলেও সমকালে গ্রামবার্তা একটি জনপ্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ সাময়িক পত্র হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করে। কাঙাল হরিনাথ শিষ্য ‘ভারতবর্ষ’ পত্রিকার সম্পাদক রায় বাহাদুর জলধর সেন বলেন, ‘বাঙালা সাহিত্যের ইতিহাসে, বাঙালা সংবাদপত্রের ইতিহাসে কাঙাল হরিনাথের নাম আলোচনায় কখনও কোনদিন তেমন করিয়া উল্লিখিত হয়নি। পল্লীবাসী, জীর্ণকুটীরবাসী, শতগ্রন্থি যুক্ত মলিনবেশধারী কাঙাল হরিনাথের জীবনব্যাপী সাধনার সংবাদ কেহই গ্রহণ করেন নাই।’ সময় এসেছে এই মহাত্ম্যার মূল্যায়নের। সাংবাদিকতায় বর্তমান সমযের নির্ভীক সাংবাদিকদের জাতীয় অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘কাঙাল হরিনাথ পদক’ চালু করে গ্রাম সংবাদের জনক কাঙাল হরিনাথ মজুমদারের স্মৃতির যথাযথ মূল্যায়ন করে তা প্রজন্মের পর প্রজন্মে পৌঁছে দেয়া।
×