ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

সাতক্ষীরায় এসিসিএফ ব্যাংকের গ্রাহকরা হয়রানির শিকার

প্রকাশিত: ০৯:৩৩, ২১ জুলাই ২০১৯

 সাতক্ষীরায় এসিসিএফ ব্যাংকের গ্রাহকরা হয়রানির শিকার

স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা ॥ এসিসিএফ ব্যাংক পাটকেলঘাটা শাখায় জমা রাখা সোয়া ২ কোটি টাকা ফেরত পাওয়া নিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে উদ্বেগ ও শঙ্কা বিরাজ করছে। টাকা পাওয়ার জন্য প্রতিনিয়ত ব্যাংকে এসে টাকা না পেয়ে গ্রাহকরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। শাখা থেকে বলা হচ্ছে, শাখায় কোন টাকা নেই। হেড অফিসে টাকা পাঠানো হলেও হেড অফিস থেকে কোন টাকা দেয়া হচ্ছে না। ব্যাংকের চেয়ারম্যান গ্রেফতার হওয়ার পর এই টাকা পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে শঙ্কা আরও বেড়ে গেছে। এদিকে টাকা ফেরত পেতে ব্যাংক শাখায় প্রতিদিন গ্রাহকদের ভিড় জমছে। টাকা ফেরত দিতে না পারায় বর্তমান ব্যবস্থাপকসহ স্টাফরা প্রতিনিয়ত গ্রাহকদের কাছে অপমানিত হচ্ছেন। অনেক স্টাফ গ্রাহকদের কাছ থেকে লুকিয়ে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। এ অবস্থায় এ ব্যাংকের ভবিষ্যত নিয়ে গ্রাহকদের অবিশ্বাস বাড়ছে। এই ব্যাংক শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক রওশনারা খাতুন এপ্রিলের ১৭ তারিখ থেকে দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিয়ে লাপাত্তা হয়ে আছেন। দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়ার জন্য ব্যাংক শাখা থেকে সাবেক ব্যবস্থাপককে চিঠি দেয়া হলেও সংশ্লিষ্ট ঠিকানায় ব্যাংক ব্যবস্থাপককে খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক শাখা থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে এই এলাকার এসিসিএফ ব্যাংকের বিভিন্ন শাখা ব্যবস্থাপক ও ডিজিএম এক জরুরী সভায় মিলিত হয়ে ব্যাংকের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবি করেছেন। এসিসিএফ পাটকেলঘাটা শাখা চালু করা হয় ২০১৩ সালের মধ্য নবেম্বরে। এর পর থেকে এই শাখায় ৫ শতাধিক গ্রাহক বিভিন্ন মেয়াদের প্রকল্পে আমানত জমা রাখেন ২ কোটি ৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে ১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা সরাসরি পাঠানো হয় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে। নিয়ম অনুযায়ী ব্যাংকে আমানতের ৫০ ভাগ টাকা স্থানীয়ভাবে বিনিয়োগ করার কথা থাকলেও এই শাখায় এই নিয়ম মানা হয়নি। ফলে এই ব্যাংকের চেয়ারম্যানসহ অন্যদের দুর্নীতির কারণে আমনতকারীরা এখন তাদের টাকা ফেরত পেতে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। ব্যাংক শাখায় টাকা না থাকায় গ্রাহকদের টাকা পাওয়ার বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এদিকে এই শাখার সর্বশেষ ব্যবস্থাপক রওশনারা খাতুন ব্যাংকের হিসাব, ্আমানতের ব্যালেন্স, ঋণগ্রাহকদের পাসবই, ডিপোজিট গ্রাহকদের সকল ব্লক বইয়ের মুড়িবই ,অবশিষ্ট চেকবই (গোপনীয়) ও ব্যবস্থাপকের টেবিলের ড্রয়ারের সকল চাবি বুঝিয়ে না দিয়েই দুদিনের ছুটি নিয়ে ৪ মাস ধরে লাপাত্তা। এই ব্যবস্থাপকের সময়ই নিয়ম উপেক্ষা করে বেশি টাকা হেড অফিসে পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ। শাখার দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিয়ে লাপাত্তা থাকলেও গ্রেফতার হওয়া সাবেক চেয়ারম্যান ও তার সহযোগীদের বিশেষ আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত সাবেক এই শাখা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোন প্রশাসনিক ও বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। ইতোমধ্যে ব্যাংকের বর্তমান ব্যবস্থাপক মোঃ গোলাম বারী ২৫ জুন সাবেক ব্যবস্থাপককে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়ার জন্য লিখিতভাবে ডাকযোগে নোটিস দিলেও ব্যবস্থাপকের কোন ঠিকানায় সাবেক ব্যবস্থাপক রওশনারাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। গ্রাহকদের টাকা ফেরত পাওয়ার বিষয়ে কি পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে জানতে চাইলে ব্যাংকের জিএম শেখ মোঃ আসলাম জনকণ্ঠকে বলেন, চেয়ারম্যান গ্রেফতার হওয়ার পর নতুন করে কমিটি গঠনের চেষ্টা হচ্ছে। গ্রাহকদের আমানতের টাকা ফেরতের বিষয়ে নতুন পরিচালনা কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে বলে তিনি জানান।
×