ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

অফিস না করেই বেতন নিচ্ছেন ডাক্তার ও ২ স্বাস্থ্য পরিদর্শক

প্রকাশিত: ০৯:৩৭, ২১ জুলাই ২০১৯

 অফিস না করেই বেতন  নিচ্ছেন ডাক্তার ও  ২ স্বাস্থ্য পরিদর্শক

সংবাদদাতা, বোয়ালমারী, ফরিদপুর, ২০ জুলাই ॥ বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জুনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনি এ্যান্ড অবস্) ডাঃ মাতুয়ারা শারমীন দেড় বছর ধরে অফিস না করেই সরকারী বেতন ভাতা তুলছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অন্যদিকে ওই হাসপাতালের দুইজন সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক একই পন্থা অবলম্বন করে অফিস ম্যানেজ করে কৌশলে সরকারী বেতন ভাতা তুলে নিয়ে যাচ্ছেন। জানা যায়, ২০১৭ সালের ৫ নবেম্বর বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গাইনি বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট হিসেবে যোগদান করেন ডাঃ মাতুয়ারা শারমীন। যোগদানের পর থেকে তিনি কর্মস্থলে উপস্থিত না হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের কতিপয় দুর্নীতিগ্রস্থ কর্মকর্তা কর্মচারীদের ম্যানেজ করে দেড় বছরের মধ্যে ১৭৬ দিন বিভিন্ন ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে পার করছেন। বাকি দিনগুলো তিনি কর্মস্থলে উপস্থিত না থাকায় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা গাইনি রোগীরা চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সর্বশেষ আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত ‘ট্রেনিং ফর ডক্টর অন ইনজুরি প্রিভেনশন এ্যান্ড ইমার্জেন্সি মেডিক্যাল কেয়ার’ শীর্ষক সার্জারি ইউনিট, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৩৬ দিনের ট্রেনিংয়ে রয়েছেন তিনি। অপরদিকে দুই সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক বেগম শেফালী সামাদ ও হোসনেয়ারা বেগম এ বছরের ২৮ এপ্রিল বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করেন। তাদের দু’জনের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলায়। এরই মধ্যে তারা দুইজন এক সঙ্গে তিনবারে ১২ দিনের ছুটি নিয়েছেন। বাকি দিনগুলোতে অফিস না করেই তুলেছেন সরকারী বেতন ভাতা। তাদের এ কাজে সহযোগিতা করছে উপজেলা স্বাস্থ্য পরির্দশক মোঃ আবু সাঈদ। মোটা অঙ্কের মাসোয়ারা নিয়ে তিনি এ কাজ করছেন বলে অফিসের একটি সূত্র জানায়। এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক মোঃ আবু সাঈদ বলেন, আমি কোন অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করি নাই। তারা নিয়মিতই কর্মস্থলে উপস্থিত থাকেন। কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক হোসনেয়ারা বেগমের মোবাইল ফোনে (০১৭১৮-৭৩৭১২০) বার বার কল করা হলেও ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া যায়নি। অফিস না করে সরকারী বেতন ভাতা উত্তোলনের বিষয়ে ডাঃ মাতুয়ারা শারমীনের মোবাইল ফোনে (০১৭১৭-২৯০০৪৭) একাধিকবার কল দেয়া হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। একই ব্যক্তিকে বার বার বিভিন্ন ট্রেনিংয়ে ডাকা হয় কেন জানতে চাইলে, স্বাস্থ্য অধিদফতরের নন কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রামের লাইন ডিরেক্টর ডাঃ নূর মোহাম্মদ বলেন, আমরা উপজেলা পর্যায়ে চাহিদাপত্র পাঠাই। সংশ্লিষ্ট দফতর যার নাম আমাদের দেন, আমরা তাকে দিয়ে ট্রেনিং করাই। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ তাপস বিশ্বাস দেশের বাইরে থাকায় তার বক্তব্য জানা যায়নি। কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকে ওই ডাক্তারের সরকারী বেতন ভাতা উত্তোলনের বিষয়ে ফরিদপুর জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মুহাঃ এনামুল হক বলেন, বিষয়টি আমি জানি না। আগামীকাল খোঁজ নিয়ে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
×