ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

স্যাঁতসেঁতে অন্ধকার ঘরে ৭ বছর শিকলবন্দী মিজানুর

প্রকাশিত: ০৯:৪১, ২১ জুলাই ২০১৯

 স্যাঁতসেঁতে অন্ধকার ঘরে ৭ বছর  শিকলবন্দী মিজানুর

সংবাদদাতা, নান্দাইল, ময়মনসিংহ, ২০ জুলাই ॥ স্যাঁতসেঁঁতে অন্ধকারাচ্ছন্ন একটি ঘরে গত সাত বছর ধরে শিকলবন্দী অবস্থায় দিন যাপন করছে মাদকাসক্ত মিজানুর রহমান (২৩)। মিজান উপজেলার মুশুলী ইউনিয়নের কাউয়ারগাতী গ্রামের ভ্যানচালক নুরু মিয়ার একমাত্র পুত্র। বাবা-মার আশা ছিল ছেলে বড় হয়ে পরিবারের হাল ধরবে। কিন্তু সেই আশা নিমিষেই নষ্ট করে দিল সর্বনাশা মাদক। মাদকের ভয়াল থাবায় মিজানুরসহ পুরো পরিবারটি আজ বিপর্যস্ত। তাই নিরুপায় হয়ে দুই পায়ে শিকল বেঁধে চৌকির পায়ার সঙ্গে বেঁধে রেখেছেন বাবা-মা। এই অবস্থায় রয়েছে সাত বছর ধরে। ময়লা আবর্জনাযুক্ত ঘরটিতেই খাওয়া-দাওয়াসহ সকল ধরনের কর্ম সারতে হচ্ছে তাকে। সাত বছরে কৈশোর থেকে যৌবনে এসে পড়েছে মিজান। কিন্তু তার মুক্তি মেলেনি। মিজানের জানা নেই কবে তার মুক্তি মিলবে? নুরু মিয়া জানায়, সঙ্গদোষে একমাত্র ছেলে মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছে। ছেলেকে কোনভাবেই পথে আনতে পারা যাচ্ছিল না। রুখা যায়নি তার মাদক সেবন। দীর্ঘদিন এভাবে চলার পরও ছেলের চিকিৎসার চিন্তা তাদের কাছে বিলাসিতার সমান। নুরু জানায়, ছয় বছর আগে পুলিশ মাদক মামলায় মিজানুরকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠিয়েছিল। কিন্ত জামিনে মুক্ত হয়ে আবারও পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসে। তখন মাত্রাতিরিক্ত বেপরোয়া আচরণের প্রতিবাদ করতে যেয়ে তার স্ত্রী হেলেনা বেগম ছেলের হাতে দায়ের কোপে আহত হয়। তাই নিরাপত্তার স্বার্থে বাধ্য হয়েই এক বুক কষ্ট নিয়ে ছেলেকে দুই পায়ে শিকল বেঁধে ঘরের বারান্দার চৌকির পায়ার সঙ্গে বেঁধে রাখতে হয়েছে। মা হেলেনা বেগম জানায়, সাধ করে কেউ একমাত্র ছেলেকে শিকলে বন্দী করে রাখে না। তার ছেলে মাদকাসক্ত ছিল না। গ্রামে চরিত্রবান ছেলে হিসেবে পরিচিতি ছিল। প্রতিবেশীদের নানা কাজে নিজেকে বিলিয়ে দিত।
×