ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সিএমপির ১৬ থানায় তালিকা আছে, গ্রেফতার নেই

চট্টগ্রামে ‘বড়ভাইদের’ বাইকে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কিশোর অপরাধীরা

প্রকাশিত: ১০:২১, ২১ জুলাই ২০১৯

 চট্টগ্রামে ‘বড়ভাইদের’ বাইকে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কিশোর অপরাধীরা

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ সম্প্রতি এলাকাভিত্তিক খুনের ঘটনায় পুলিশের তদন্তে কিশোর গ্যাংয়ের খবর পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু কেউ গ্রেফতার হচ্ছে না। অভিযোগ রয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) ১৬টি থানা এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের অবস্থান রয়েছে পুলিশের বিভিন্ন সময়ের তদন্ত অনুযায়ী। এরা অল্প অর্থের বিনিময়ে হত্যাকা-ে ব্যবহার হচ্ছে। তবে যারা কিশোর গ্যাংয়ের তালিকায় রয়েছে তারা থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। এদিকে, এসব কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা এলাকার ‘বড়ভাই’ খ্যাতদের হাইস্পীড মোটরসাইকেলে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। মেয়েদের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে দাঁড়িয়ে ইভটিজিং করলেও পুলিশের কারণেই নীরবে সহ্য করতে হচ্ছে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীকেই। এদিকে, সিএমপির ১৬ থানার তালিকায় গড়ে ১৫/২০ কিশোর গ্যাংয়ের আওতায় থাকা সন্ত্রাসী রয়েছে। এসব সদস্যরা দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে পুলিশের সামনে দিয়ে। অপরাধ না করায় পুলিশ তাদের ধরছে না নাকি তালিকার তথ্য সঠিক নয় তা এখন প্রশ্নবিদ্ধ। কারণ ভুক্তভোগীরা থানায় অভিযোগ করার পরও তদন্ত করতে নারাজ পুলিশ। এদিকে, বিভিন্ন সরকারী প্রতিষ্ঠানে কিশোর গ্যাংয়ের ব্যবহার হচ্ছে এমন অভিযোগ সরবরাহ-কারীদের। কারণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন সরকারী দফতরে টেন্ডারবাজিসহ সরবরাহকারীদের নাজেহাল করতে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের ব্যবহার করছে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী। থানায় জিডি হলে পুলিশ আদালতের অনুমতি নিয়ে প্রসিকিউশন মামলা দায়ের করলেও তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে গড়িমসি করছে। আবার সংশ্লিষ্ট থানার ওসি ‘বড়ভাই’দের ফোনে ম্যানেজ হয়ে যাচ্ছে এমন অভিযোগেরও অন্ত নেই। এ বিষয়ে সিএমপির এক উর্ধতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হত্যার ঘটনা ঘটলেও পুলিশ আইনের বাইরে যেতে পারে না। কিশোর অপরাধী বা গ্যাং থাকলেও এরা বড়ভাইদের নামে চলে। থানায় ধরে আনলেই রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে পার পেতে চায়। আবার রাজনৈতিক নেতারাও প্রভাব খাটায় তাদের কর্মী বলে। কিন্তু আইনের চোখে অপরাধী হলেও লিখিত অভিযোগ বা জিডি না থাকলে এদের আইনের আওতায় আনা যাচ্ছে না। আবার আইনের পূর্ণাঙ্গ আশ্রয় পায় না বলেই অভিভাবকরা এদের বিরুদ্ধে থানা পর্যন্ত আসেন না। ফলে অপরাধীরা আবারও চাঙ্গা অবস্থানে থেকে অপরাধের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়। অভিযোগ রয়েছে, সিএমপির আওতায় থাকা ৬২ বর্গকিলোমিটারে প্রায় ৮০ লাখ মানুষের বসবাস। ১৬ থানা এলাকার মানুষ এখন আর নিজেদের নিরাপদ ভাবছেন না। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন সাধারণ মানুষ পরিবার পরিজন নিয়ে। অনেকটা আতঙ্কেই কাটাচ্ছে জনজীবন। পরিবারের কর্তা সকালে ঘর থেকে বেরিয়ে যেমন নিরাপত্তা নিয়ে ভোগেন তেমনি পরিবারের অন্য সদস্য বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ুয়াদের নিয়েও টেনশনের শেষ নেই। মোবাইলের এই যুগে সোস্যাল মিডিয়ায় ঝড় তোলা কোন স্ট্যাটাস নিয়ে শুরু হয়ে যাচ্ছে কেলেঙ্কারি। সব কেলেঙ্কারির মূলে চলে এসেছে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে হত্যাকান্ডের মতো ঘটনা।
×