ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রিয়া তার ভাইয়ের জমি নিয়ে বিরোধে স্থানীয় হিন্দুদের হয়রানি করছেন

প্রকাশিত: ১০:৫১, ২১ জুলাই ২০১৯

 প্রিয়া তার ভাইয়ের জমি নিয়ে  বিরোধে স্থানীয় হিন্দুদের হয়রানি  করছেন

নিজস্ব সংবাদদাতা, পিরোজপুর, ২০ জুলাই ॥ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগের পেছনে প্রিয়া সাহা ব্যক্তিগত ও পারিবারিক স্বার্থ অর্জনের চেষ্টায় রয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে তার নিজ বাড়ি পিরোজপুরের নাজিরপুরে শনিবার সরেজমিনে গিয়ে বিভিন্ন মহলের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়। পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েকজন জানান, চলতি বছরের শুরুতে চরবানিয়ারিতে প্রিয়া সাহার ভাই জগদীশ চন্দ্র বিশ্বাসের একটি অব্যবহৃত ঘরে অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। প্রিয়া সাহা তার নিজ স্বার্থ হাসিলের জন্য নাজিরপুর উপজেলার চরবানিয়ারি গ্রামে তার ভাইয়ের জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে হয়রানি করে আসছেন। যে ঘটনাকে মিথ্যাভাবে সাজিয়ে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সামনে উপস্থাপন করেছেন, তা মিথ্যা ও বানোয়াট। প্রকৃতপক্ষে এ ঘটনায় স্থানীয় কয়েক নিরীহ হিন্দু সম্প্রদায়ের লোককে তিনি আসামি করে হয়রানি করছেন। প্রিয়া সাহার এ অসত্য বানোয়ট তথ্য ও দেশের ভাবমূর্তি নষ্টের অপচেষ্টার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে তার বক্তব্য প্রত্যাহার, আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছে নাজিরপুরের বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। এদিকে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রিয়া সাহার বক্তব্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। নাজিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অমূল্য রঞ্জন হালদার জানান, নাজিরপুরে কোন সংখ্যালঘু নির্যাতন বা গুমের ঘটনা নেই। প্রিয়া সাহার বক্তব্য নিজ স¦ার্থ হাসিলের জন্য ও উস্কানিমূলক যা বিভেদ সৃষ্টির পাঁয়তারা । বর্তমানে পিরোজপুরে অবস্থানরত গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম বলেন, বাংলাদেশ সম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এখানে কেউ ধর্মীয় বিবেচনায় নির্যাতনের শিকার হন না। পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার মুসলিম-হিন্দুদের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। নাজিরপুরের একটি হিন্দু বা অন্য কোন ধর্ম সম্প্রদায়েরর লোক গুম বা নিখোঁজ হয়নি। প্রিয়া বালার বক্তব্য অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং সাম্প্রদায়িক সম্পর্ক নষ্টের উস্কানিমূলক অপচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়। ‘শারি’ নামে বাংলাদেশের দলিত সম্প্রদায় নিয়ে একটি বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থার পরিচালক হলেন প্রিয়া সাহা ওরফে প্রিয় বালা বিশ্বাস। তিনি বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ঢাকা থেকে প্রকাশিত ‘দলিত কণ্ঠ’ নামক একটি পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক। প্রিয়া সাহা ওরফে প্রিয় বালা বিশ্বাস (৫৪) পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলার চরবানিয়ারি গ্রামের মৃত নগেন্দ্রনাথ বিশ্বসের মেয়ে। তার শ্বশুর বাড়ি যশোর জেলায়। প্রিয়ার স্বামী মলয় কুমার সাহা দুদকের সদর দফতরে সহকারী উপ-পরিচালক পদে কমর্রত রয়েছেন। তাদের বর্তমান ঠিকানা বাসা-৪৩, এএনজেড এ্যাম্বোসিয়া, ফ্লাট-বি/২, রোড-৪/এ, ধানমন্ডি, ঢাকা। তার দুই মেয়ে প্রজ্ঞা পারমিতা সাহা ও ঐশ্বর্য লক্ষ্মী সাহা যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করেন। স্থানীয়রা আরও জানান, প্রিয়া সাহার দুই মেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করার কারণে তাদের গ্রিনকার্ড পাইয়ে দেয়া ও নিজেকে ওই দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়ার আশায় প্রিয়া সাহা ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে এ সব ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন। স্থানীয় মুসলিম-হিন্দুদের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানকে নষ্ট করার জন্যই উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তিনি এ সব মিথ্যা কথা বলেছেন। পিরোজপুরের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মোল্লা আজাদ হোসেন বলেন, প্রিয় বালার অভিযোগের বিষয়ে কোন ঘটনা পিরোজপুর জেলার কোথাও ঘটেনি। পিরোজপুরের পুলিশ প্রশাসন সাম্প্রদায়িক যে কোন বিষয়ে সব সময়ই গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে ত্বরিত পদক্ষেপ গ্রহণ করে। নাজিরপুর উপজেলায় বা পিরোজপুরের কোথায় কোন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়েরর লোক গুম নেই। দেশের বাইরে গিয়ে যে কোন নাগরিকের উচিত দেশের বিষয়ে ভেবে-চিন্তে কথা বলা।
×