ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ত্রাণের আশায় উত্তরাঞ্চলের মানুষ হাহাকার করছে : রিজভী

প্রকাশিত: ০৮:১৪, ২১ জুলাই ২০১৯

ত্রাণের আশায় উত্তরাঞ্চলের মানুষ হাহাকার করছে  :  রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশের উত্তরাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যায় সর্বস্ব হারিয়ে ত্রাণের আশায় লাখ লাখ মানুষ হাহাকার করছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। রবিবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। রিজভী বলেন, ভয়াবহ বন্যায় ভাসছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল। সর্বস্ব হারিয়ে পথে নেমেছে হাজার হাজার পরিবার। কিন্তু মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা ঢাকায় বসে গলাবাজি করছেন। অথচ নিরাপদ আশ্রয় ও শুকনো খাবারের সন্ধানে ছুটছে বানভাসি মানুষ। কোথাও ত্রাণের গাড়ি কিংবা নৌকার সংবাদ শুনলেই ছুটছে বন্যার্তরা। কিন্তু সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা দুর্গত মানুষের কোন খোঁজখবর নিচ্ছে না। রুহুল কবির রিজভী বলেন, উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে চারদিন ধরে ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। বন্যার পানিতে ডুবে তিন জেলায় ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। সহায়-সম্পদ ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছেন বন্যার্তরা। অনেকেই পরিবারসহ ডিঙ্গি নৌকায় আশ্রয় নিয়েছেন। প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে ছোট ছোট নৌকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে কাটছে অনেকের দিনরাত। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সরকারের যে উদ্যোগ প্রয়োজন সেটা আমরা লক্ষ্য করছি না। রিজভী বলেন, সরকারের দায়িত্ব বন্যা কবলিত মানুষকে রক্ষা করা। কিন্তু সরকার তা করছে না। আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে যতটা সম্বব বন্যা দুর্গতদের পাশে দাঁড়াচ্ছি। এই লক্ষ্যে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুকে আহ্বায়ক করে ২১ সদস্যবিশিষ্ট একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন। রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ ১৯৯৭ সালে মারণঘাতি ঙেঙ্গু জ্বর আমদানি করেছে। তখন থেকে এই এডিস মশা ছড়িয়ে পড়েছে ব্যাপকভাবে। তা নিয়ন্ত্রনের কোন পদক্ষেপ নেই। সবসময় উন্নয়ন কিংবা পদক্ষেপ এসব ক্ষমতাসীনদের ঠোঁটের মধ্যে আটকে থাকে। কিন্তু বাস্তবে এর কোনো পদক্ষেপ কেউ কখনো দেখেনি। আজকে যানজটে, রাস্তা-ঘাটের বেহাল অবস্থায় মানুষের স্বস্তি নেই। রিজভী বলেন, দেশে আইনের শাসন ও সুশাসন এখন ইতিহাসের পান্ডুলিপিতে অবস্থান করছে। দুর্নীতির বিরূপ প্রভাবে অগ্রগতি থমকে গেছে। ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন নিয়মে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে ফরমায়েশী মামলায় কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে দেড় বছর ধরে। তাঁকে বন্দী রেখে দুঃশাসনে দেশকে রসাতলে নিয়ে যাচ্ছে সরকার। রিজভী বলেন, দেশে যখন দুর্নীতির মহামারি চলছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল হাসান মাহমুদ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতি করতে উৎসাহ দিয়ে বলছেন-সরল বিশ্বাসে দুর্নীতি করলে অপরাধ হবে না। এর আগে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সহনীয় মাত্রায় ঘুষ খেতে বলেছিলেন। সাবেক শিক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্যে দেশের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের তিনি কি নৈতিক বার্তা দিয়েছিলেন, সেই উত্তর তো এখনও পাওয়া যায়নি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স দেখানোর দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি নিজেই যদি সরল দুর্নীতির অভিনব বাণী জনগণকে শোনান, তাহলে দুর্নীতির জোয়ারে দেশ তো ভেসে যাবেই। রিজভী বলেন, দুদক চেয়ারম্যান শনিবার নিজেই স্বীকার করেছেন, মন্ত্রী-এমপিসহ রাঘব বোয়ালরা ধরাছোঁয়ার বাইরে। তারা ৭০ ভাগ দুর্নীতির মামলা দিচ্ছেন পুঁটিমাছের বিরুদ্ধে। তাই আমরা মনে করি দুর্নীতি দমনের নামে মুখোশপরা দুদক বিরোধীদল দমনের খেলায় ব্যস্ত। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ প্রমুখ।
×