ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মহাসড়কে ঝুঁকিপূর্ণ হাট-বাজার

প্রকাশিত: ০৮:৫৪, ২২ জুলাই ২০১৯

মহাসড়কে ঝুঁকিপূর্ণ হাট-বাজার

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ বাগেরহাট-খুলনা-মংলা মহাসড়কের দুই পাশে বিভিন্ন স্থানে ঝুঁকিপূর্ণ হাট বসছে বছরের পর বছর। ভাগা, গুনাই, দিগরাজ, সিএ্যান্ডবি বজারসহ বিভিন্ন পয়েন্টে ব্যস্ততম এ সড়ক ঘেঁষে নিয়মিত বাজার বসায় যানবাহন চলাচলে ভোগান্তি সৃষ্টি হচ্ছে। আবার দুর্ঘটনাও ঘটছে অহরহ। এর মধ্যে ২০০৮ সালে দিগরাজে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় নিহত হয় চারজন। অন্য হাটে গত কয়েক বছরে পৃথক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২৫ ব্যক্তি। জানা গেছে, মংলার বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়নের দিগরাজ ও রামপালের সদর ইউনিয়নের ভাগা ও গুনাই বাজার বসছে ১৯৮০-৮১ সাল থেকে। খুলনা-মংলা মহাসড়কের প্রায় ৩০ কিলোমিটারের মধ্যে এসব বাজারে বসছে সাপ্তাহিক হাট। এর মধ্যে ভাগায় প্রতি শুক্র ও মঙ্গলবার, গুনাইয়ে সোম ও শুক্রবার এবং দিগরাজে হাট বসছে রবি ও বৃহস্পতিবার। আশপাশে অন্য কোন বাজার না থাকায় এ তিন হাটে প্রায় ১০ হাজার লোকের সমাগম হয়। বাগেরহাট সদরের মাজারের মোড় ও সিএ্যান্ডবি বাজারের অবস্থাও প্রায় অনুরূপ। সরেজমিন দেখা যায়, এসব হাটের বিক্রেতারা মহাসড়কের পাশেই তাদের পণ্য নিয়ে বসছেন। দুই পাশে বিক্রি হচ্ছে সবজি থেকে শুরু করে মাছ, মাংসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য। অনেকেই উঠে আসছেন মূল সড়কে। ক্রেতারাও মহাসড়কেই হাঁটাচলা করছেন। এতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে যানবাহন চালকদের। হাটের স্থানে এসে তাদের গতি কমিয়ে দিতে হচ্ছে। অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বনের পরও থেকে যাচ্ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি। এ অবস্থায় হাটগুলো মহাসড়ক থেকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার দাবি জানিয়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতাসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। ভাগা হাটের বজলু, তাহের, অজয়, লিয়াকতসহ বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, প্রতিদিন যাত্রীবাহী বাসের পাশাপাশি মংলা বন্দর ও ইপিজেডের পণ্যবাহী অসংখ্য ট্রাক ও লরি এ পথে চলাচল করে। এর মধ্যেই এখানে তাদের ব্যবসা করতে হয়। মহাসড়কের পাশে হওয়ায় সবসময়ই দুর্ঘটনার ঝুঁকি রয়েছে। এ অবস্থায় তারা হাটটি মহাসড়কের পাশ থেকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার আহ্বান জানান। এদিকে দিগরাজে বাজার করতে আসা একটি বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থার কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান ও দীপঙ্কর বলেন, সপ্তাহের কেনাকাটা করতে এলাকাবাসীকে এখানেই আসতে হয়। এ রকম ব্যস্ত মহাসড়কের পাশে বাজার মানেই দুর্ঘটনার ঝুঁকি। ছোট-বড় দুর্ঘটনা তো প্রতিনিয়তই ঘটছে। ২০০৮ সালে এখানে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় চারজনের মৃত্যু হয়। এরপরই হাটটি নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার কথা হয়েছিল। কিন্তু তা আজও বাস্তবায়ন হয়নি। খুলনা-মংলা মহাসড়কে নিয়মিত বাস চালান সেলিম ও আলামিন শেখ। তারা বলেন, সড়কের দুই পাশের এসব বাজারের দোকানগুলো প্রায়ই রাস্তার উপরে উঠে আসে। কেনাকাটা করতে আসা লোকজনের ভিড়ে গাড়ি চালানো যায় না। তখন আমাদের খুব আতঙ্কের মধ্যে গাড়ি চালাতে হয়। বাজার নিরাপদ জায়গায় স্থানান্তর করা খুবই প্রয়োজন। রামপাল সদর ইউপি চেয়ারম্যান জামিল হাসান জামু বলেন, আমরা কিছু খাস জমি নির্ধারণ করে সেখানে বাজার স্থানান্তরের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছি। বর্তমানে মংলা-খুলনা মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতের প্রক্রিয়া চলছে। এ প্রক্রিয়া শেষ হলেই আশা করছি মহাসড়কের পাশ থেকে বাজার স্থানান্তর করা হবে। বুড়িরডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান নিখিল চন্দ্র রায় বলেন, দিগরাজ বাজার স্থানান্তরে আমরা সওজের একটি জায়গার জন্য আবেদন করেছিলাম। কিন্তু কোন সাড়া মেলেনি। তবে এ বাজারটি দ্রুত সরিয়ে ফেলা প্রয়োজন। রামপাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার তুষার কুমার পাল বলেন, ভাগা ও গুনাই খুবই ব্যস্ত ও বড় দুটি হাট। সরকারী কোন জমি পাওয়া গেলে দ্রুত বাজার দুটি স্থানান্তরের ব্যবস্থা করা হবে।
×