ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

খড়িয়া নদীর ওপর সেতু না থাকায় চরম দুর্ভোগ

প্রকাশিত: ০৮:৫৮, ২২ জুলাই ২০১৯

 খড়িয়া নদীর ওপর সেতু না থাকায় চরম দুর্ভোগ

স্টাফ রিপোর্টার, ময়মনসিংহ ॥ ফুলপুর উপজেলার খড়িয়া নদীর ওপর সেতু না থাকায় দুইপাড়সহ আশপাশের লক্ষাধিক মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। বর্ষাকালে এই দুর্ভোগ অসহনীয়। সেতু না থাকায় সময়মতো বাজারজাত করতে না পারায় কৃষিপণ্যের ন্যায্য দাম পাচ্ছে না স্থানীয় কৃষকরা। বর্ষা মৌশুমে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খড়িয়া নদী পারাপার হতে হচ্ছে শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণী পেশার মানুষকে। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে এলাকার প্রসূতি মায়েরা। সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় জরুরী চিকিৎসা সেবার জন্য ঘুরপথে তাদের হাসপাতালে যেতে হচ্ছে। সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য শরীফ আহমদ এবং এলজিইডির স্থানীয় কর্তৃপক্ষ খড়িয়া নদীর ওপরপাকা সেতু নির্মাণে আশ্বাস দিয়ে জানান, খুব শীঘ্রই সেতু নির্মাণ কাজ দৃশ্যমান হবে। বর্তমান সরকার মেয়াদেই খড়িয়া নদীতে সেতু নির্মাণ করা হবে বলে জানান মন্ত্রী। স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি কংশ নদীর মোহনায় অবস্থান খড়িয়া নদীর। নদীটির একপাশে ফুলপুর ইউনিয়ন ও আরেকপাশে বালিয়া ইউনিয়ন। পার্শ্ববর্তী হালুয়াঘাট ও ধোবাউড়া উপজেলার একাংশের মানুষকে এই নদী পারাপার হতে হয়। এছাড়া শিলপুর, সলঙ্গা, খড়িয়াপাড়া, বারইপাকুড়, নলচাপরা, নারায়নপট্টি ও মাইশাকান্দাসহ আশপাশের অন্তত ৫০০-৭০০ মানুষ জীবন ও জীবিকার তাগিদে খড়িয়া নদী পারাপার হচ্ছে। স্থানীয় শিক্ষার্থীদেরও এই খড়িয়া নদী পার হয়ে স্কুলে যাতায়াত করতে হচ্ছে। স্থানীয় নৌকার মাঝি লিটন মিয়া জানান, বর্ষা মৌশুমে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্কুলের ছেলেমেয়েরা নৌকায় পারাপার হচ্ছে। এ সময় ঘটছে নানা দুর্ঘটনাও। এছাড়া স্থানীয় কৃষকদের উৎপাদিত ধান পাট ও সবজিসহ বিভিন্ন কৃষিপণ্য বাজারজাত করার জন্য ভরসা খড়িয়া নদীর নৌকা। স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, সময়মতো বাজারজাত করতে না পারায় উৎপাদিত কৃষিপণ্যের ন্যায্য দাম পাচ্ছে না তারা। দেশের নানা প্রান্ত থেকে পাইকাররাও ট্র্যাক কাভার্ডভ্যানসহ সরাসরি কৃষকদের জমিতে পৌঁছাতে পারছে না। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন প্রসূতি মায়েরা। জরুরী প্রয়োজনে সরাসরি হাসপাতালে পৌঁছাতে না পেরে ঘুরপথে তাদের হাসপাতালে যেতে হচ্ছে। এ সময় মাঝপথে প্রায়ই ঘটছে নানা দুর্ঘটনা। অথচ খড়িয়া নদীতে সেতু নির্মাণ করা হলে কৃষকরা যেমন তাদের কৃষিপণ্যের ন্যায্য দাম পাবেন, তেমনি শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীর যোগাযোগের ক্ষেত্রেও দুর্ভোগ কমে আসবে। স্থানীয় ফুলপুর ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম জানান, খড়িয়া নদীতে সেতু নির্মাণে বিভিন্ন সময়ে আশ্বাস পাওয়া গেলেও পরবর্তীতে সেই আশ্বাস আর পূরণ হচ্ছে না। বিশেষ করে জাতীয় সংসদ ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের আশ্বাস আলোর মুখ না দেখায় ক্ষুব্ধ ও হতাশ এলাকার ভুক্তভোগী মানুষ। তবে এ নিয়ে আশার কথা জানালেন সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য শরীফ আহমেদ। খড়িয়া নদীতে সেতু নির্মাণে একাধিকবার এলজিইডি কর্তৃপক্ষকে অনুরোধপত্র দেয়ার কথা উল্লেখ করে এই মন্ত্রী জানান, বর্তমান সরকার মেয়াদেই সেতু নির্মাণ করা হবে। এলজিইডির স্থানীয় নির্বাহী প্রকৌশলী ইসমত কিবরিয়া জানান, খড়িয়া নদীতে পাকা সেতু নির্মাণে প্রাথমিক সমীক্ষার কাজ চলছে।
×