ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

আতঙ্কে শেয়ারবাজারে সূচক আড়াই বছরে সর্বনিম্ন

প্রকাশিত: ০৯:০৮, ২২ জুলাই ২০১৯

আতঙ্কে শেয়ারবাজারে সূচক আড়াই বছরে সর্বনিম্ন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ আতঙ্কে পতন অব্যাহত রয়েছে দেশের শেয়ারবাজারে। এরই মধ্যে রবিবার সাম্প্রতিককালে সবচেয়ে বড় পতন হয়েছে শেয়ারবাজারে। পতনের কারণে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমে আড়াই বছর আগের অবস্থানে নেমে গেছে। আতঙ্কে বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়িয়েছেন। অন্যদিকে অল্প দামে পেয়ে অনেকেই শেয়ার কিনতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। বাজার বিশ্লেষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের নিষ্ক্রিয় আচরণের কারণে সব ধরনের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের নেতিবাচক প্রবণতা বেড়েছে। সরকারের সার্বিক অর্থনীতি ভাল থাকলেও আস্থাহীনতার কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শেয়ারবাজার নিয়ে আগ্রহ কমে যাচ্ছে। ডিএসইর বেশিরভাগ ব্রোকারেজ হাউসেই লোকজন কমে গেছে। আগে যেসব ব্রোকারেজ হাউসে পা ফেলার জায়গা ছিল সেখানে খালি চেয়ার পড়ে আছে। শেয়ার বাজারের প্রাথমিক নিয়ন্ত্রক সংস্থা ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ও বিএসইসিরর কোন পদক্ষেপ নেই। সবমিলে বিনিয়োগকারীদের হতাশার চিহ্নেরই প্রতিফলন ঘটেছে শেয়ারবাজারে। বিনিয়োগকারীদের আস্থা না ফিরলে বাজারে প্রাণ ফিরে আসবে না। জানা গেছে, রবিবার সকালে সব ধরনের সূচকই ইতিবাচক ছিল। কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়ে। দিনশেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৯৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৩৩ পয়েন্টে। যা ডিএসইতে ২ বছর ৬ মাস ২০ দিন বা ৬২২ কার্যদিবশের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে ২০১৬ সালের ২৯ ডিসেম্বর রবিবারের চেয়ে কম পয়েন্টে অবস্থান করছিল। ওই দিন ডিএসইএক্স সূচক ছিল ৫ হাজার ২৭ পয়েন্টে। ডিএসইর অপর দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াহ সূচক ১৯ পয়েন্ট ও ডিএসই-৩০ সূচক ৩০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ১৫৭ ও ১ হাজার ৭৯৯ পয়েন্টে। সারাদিনে লেনদেন চলাকালীন দুইবার শেয়ারবাজারের সূচক সর্বোচ্চ ১শ’ পয়েন্ট কমে যায়। ডিএসইতে ৩৬৮ কোটি ৬৪ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগেরদিন লেনদেন হয়েছিল ৩০৬ কোটি টাকার। ডিএসইতে লেনদেন ৬২ কোটি টাকা বেড়েছে। ডিএসইতে ৩৫২টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৭৩টির বা ৭৮ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর কমেছে। দর বেড়েছে ৬১টির বা ১৭ শতাংশের এবং ১৮টি বা ৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে। টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ফরচুন সুজের। এদিন কোম্পানিটির ২০ কোটি তিন লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেনে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসা ইউনাইটেড পাওয়ারের ১৫ কোটি ৬৬৩ লাখ টাকার এবং ৯ কোটি ৮৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে উঠে আসে ফেডারেলে ইন্স্যুরেন্স। ডিএসইর সার্বিক লেনদেনে উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে : জেএমআই সিরিঞ্জ, বেক্সিমকো, সী পার্ল, ঢাকা ইন্স্যুরেন্স, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স, কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স এবং প্রাইম ইন্স্যুরেন্স। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই এদিন ৩০৯ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৪১৫ পয়েন্টে। এদিন সিএসইতে হাত বদল হওয়া ২৮৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ৪২টির, কমেছে ২৩১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১১টির দর। আজ ১৭ কোটি ১০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
×