মৎস্য ও পশু সম্পদ খাতে অনিয়ম প্রতিরোধ করুন ॥ রাষ্ট্রপতি

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ রাষ্ট্রপতি মোঃ আব্দুল হামিদ উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে মৎস্য ও পশু সম্পদ খাতে সব ধরনের অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলা প্রতিরোধের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দিয়েছেন। ১৭ জুলাই থেকে শুরু হওয়া জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০১৯ উপলক্ষে বঙ্গভবনের দরবার হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। খবর বাসসর। রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘এ খাতে যারা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত তাদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা হবে। আপনারা জলাশয়ে মৎস্য অবমুক্ত করাসহ সব ধরনের কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবেন।’ মৎস্য খাতের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে উল্লেখ করে এ খাত থেকে সুযোগ গ্রহণে রাষ্ট্রপতি হামিদ মৎস্য অধিদফতরসহ এ খাতে নিয়োজিত সকল সরকারী ও বেসরকারী সংস্থা, স্বেচ্ছাসেবী ও বাণিজ্যিক সংস্থাগুলোর দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের ওপর জোর দেন। মৎস্য খাত কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে অবদান রাখছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মাছের খাদ্য উপাদান নিয়ে ইতোমধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বেশকিছু নেতিবাচক প্রতিবেদন প্রকাশ ও প্রচারিত হয়েছে। এতে জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।’ রাষ্ট্রপতি অসাধু লোকের জন্য যাতে এ খাতের সম্ভাবনা নষ্ট না হয় সেদিকে সংশ্লিষ্ট সকলকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছে। তিনি বলেন, ‘কিছু অসাধু ব্যবসায়ী দেশের ভাবমূর্তি ও এই অপার সম্ভাবনাময় রফতানি খাতকে নষ্ট করছে। কিন্তু আপনারা জানেন যে মৎস্য ও পশু সম্পদ দেশের রফতানি বাণিজ্যের জন্যও খুব গুরুত্বপূর্ণ।’ রাষ্ট্রপতি বলেন, মৎস্য খাত দেশের আমিষের চাহিদার ৬০ শতাংশের যোগান দেয়। অধিকন্তু দেশের ১১ শতাংশের বেশি লোক জীবন ও জীবিকার জন্য এ খাতের ওপর নির্ভরশীল। বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক মাছ চাষের পাশাপাশি পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় আমরা জনগণকে সকল প্রজাতির মাছ চাষে উদ্বুদ্ধ করেছি। আব্দুল হামিদ বলেন, সম্প্রতি পাস্তরিত দুধ নিয়েও ক্ষতিকারক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এতে ভোক্তাদের মাঝে পণ্য সম্পর্কে বিরূপ ধারণা সৃষ্টির পাশাপাশি প্রান্তিক চাষী ও উৎপাদনকারীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের এই অনিয়ম ও অপকর্মে জড়িত সকল অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে হবে।’ রাষ্ট্রপতি মৎস্য আইন যথাযথভাবে বাস্তবায়নের জন্য মৎস্যজীবী, মৎস্য চাষী, মাছ ব্যবসায়ী, উৎপাদনকারী ও সংশ্লিষ্ট অন্য সকলের মাঝে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টির ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের রূপকল্প ২০৪১ ও ২০২১ বাস্তবায়নে যথাযথ ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের সঠিক ব্যবহার খুবই জরুরী। অনুষ্ঠানে অন্যদের মাঝে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু এমপি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব মোঃ রাইছুল আমল ম-ল, মৎস্য বিভাগের ডিজি আবু সৈয়দ মোঃ রাশেদুল হক অন্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন। এ সময় রাষ্ট্রপতির ছেলে রেজওয়ান আহমেদ তৌফিক এমপি, রাষ্ট্রপতির সচিব সম্পদ বড়ুয়া, সামরিক সচিব মেজর জে. এস এম শামীম-উজ-জামান ও প্রেস সচিব মোহম্মদ জয়নায় আবেদীন অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন। পরে রাষ্ট্রপতি বঙ্গভবনের ‘সিংহ পুকুর’-এ মাছ অবমুক্ত করেন।