ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ডেঙ্গুতে হবিগঞ্জের নবাগত সিভিল সার্জনের মৃত্যু

প্রকাশিত: ০০:০৭, ২২ জুলাই ২০১৯

ডেঙ্গুতে হবিগঞ্জের নবাগত সিভিল সার্জনের মৃত্যু

নিজস্ব সংবাদদাতা, হবিগঞ্জ ॥ পদোন্নতির আনন্দ-সুফল কোনটাই দেখে যেতে পারলেন না হবিগঞ্জের নবাগত সিভিল সার্জন ডাঃ মো: শাহাদৎ হোসেন হাজরা। মরনব্যাধি ঙেঙ্গু জ্বর কেড়ে নিল এই মানুষটির প্রান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল প্রায় ৫৩ বছর। গতকাল রবিবার রাত সোয়া ১০টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজধানীর সোহওয়ারদী হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেও রাত ২ টার দিকে সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষ তা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেন। হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাল সংশ্লিস্ট বিভাগের কর্মকর্তা মোঃ শাহ আলম জনকন্ঠকে জানান, পদোন্নতি পেয়ে গত ৯ জুলাই ডাঃ শাহাদৎ হবিগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিসে সংশ্লিস্ট পদে যোগদান করেন। গত ২০জুলাই হবিগঞ্জে আগত পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুকের সাথে নবীগঞ্জের বন্যা দূর্গত এলাকা পরিদশনেও যান তিনি। তারপর তিনি গতকাল রবিবার সকালে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মাসিক সমন্বয় সভায় যোগ দিলে কিছুক্ষণের ব্যবধানে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরবর্তীতে তাকে দ্রুত হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে কতর্ব্যরত ডাক্তার ডাঃ শাহাদতের শরীরে ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ পেলে এবং অবস্থার অবনতি ঘটায় তাকে তৎক্ষনাৎ ঢাকায় প্রেরন করেন। এদিকে তাকে সোহওয়ারদী হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ডাঃ শাহাদৎ কে ওই দিন রাতে কতর্ব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন। এদিকে এই এমন মৃত্যুর সংবাদ রাতেই হবিগঞ্জ শহর সহ জেলার সর্বত্র ছড়িয়ে পড়লে ডাক্তার, নার্স সহ তার সহকর্মীদের মাঝে নেমে আসে বিষাদের ছায়া। শুরু হয় কান্নার রুল। গুঞ্জন উঠে, সংশ্লিস্ট হাসপাতাল ক্যম্পাসে নয়তো হবিগঞ্জ শহর বা নবীগঞ্জে ডেঙ্গু মশার আগমন ঘটতে পারে। মাত্র ১৩ দিনে ব্যবধানে হবিগঞ্জে যোগদানকৃত এই সিভিল সার্জন আচার-আচরনে ও চলাফেরায় তিনি একজন ভাল মানুষ ছিলেন বলে সকলকেই বলতে শুনা যায়। মৃত্যুকালে ডাঃ শাহাদৎ স্ত্রী সহ ১ ছেলে ও ১ মেয়ে রেখে গেছেন। তার গ্রামের বাড়ী ফিরোজপুর জেলায়। তবে তার সহকর্মীদের দাবী দাফনের আগে ডাঃ শাহাদৎ হোসেনের লাশ অন্তত শেষ শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে আনা হউক। এদিকে খোদ সিভিল সার্জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের ঘটনায় হবিগঞ্জ শহর ও আশপাশ এলাকার সাধারন মানুষের মাঝে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। হবিগঞ্জের মানুষের দাবী, জেলা প্রশাসন, পৌরসভা তথা স্বাস্থ্য বিভাগের উচিত ডেঙ্গু শনাক্ত বা প্রতিরোধে এখনই কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া। বলাবাহুল্য, হবিগঞ্জ পৌরসভায় মশা নিধনের জন্য পৌর কর্তৃপক্ষ প্রতিবছরই তাদের বাজেটে লাখ লাখ টাকা বরাদ্ধ রাখলেও অজ্ঞাত কারনে মশার ওষধ ছিটানো থেকে তারা বিরত থাকে। বিগত কয়েক বছর আগে লোক দেখানো ওষধ ছিটানো হলেও এ নিয়ে মুখরোচক আলোচনা রয়েছে যে, বিশ বালতি পানির সাথে ৫/১০ ফোটা নিম্নমান শুধু নয় মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষধ মিশিয়ে পৌর নাগরিকদের চোঁেখে ধূলো দেয়া হয়। অথচ ড্রেনেজ ব্যবস্থা সহ সর্বত্র ময়লা-অবর্জনা আর জঙ্গলে ভরপুর গত কয়েক বছরে হবিগঞ্জ শহর ও আশপাশ এলাকায় মশার উপদ্রব মারাত্মক আকার ধারন করায় সাধারন মানুষ এখন চরম কস্টে রয়েছেন। অথচ পৌর কর্তৃপক্ষ চরম উদাসীন।
×