ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ইয়াবা ডন মাদু অবশেষে গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৭:২৮, ২৩ জুলাই ২০১৯

ইয়াবা ডন মাদু অবশেষে গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ টেকনাফ সীমান্তের ইয়াবা ডন মাহামুদুল হক মাদু ওরফে মাহমুদুল করিম মাদু ওরফে মো: হোসেন মাদুকে অবশেষে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সীমান্তে একজন চোরাচালানি ডন হিসেবে পরিচিতি পেলেও ধৃত মাদু কক্সবাজারে এক প্রভাবশালীর ছত্রছায়ায় থেকে দীর্ঘদিন অধরা রয়ে যায়। আজ মঙ্গলবার ভোররাতে সদর থানা পুলিশ সাহিত্যিকা পল্লীতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার ভোর রাতে শহরের সিটি কলেজ এলাকায় পুলিশ দেখে পালানোর চেষ্টা করলে পুলিশ তাকে আটক করে। আটকের পর মাহমুদুল হক মাদু ওরফে মাহমুদুল করিম মাদুকে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তার অপকর্ম স্বীকার করে। নাফ সীমান্তের ভয়ঙ্কর ওই মাদু স্বর্ণ, অস্ত্র ও ইয়াবা ব্যবসা করে গত কয়েক বছরে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছে। শহরের সিটি কলেজ সাহিত্যিকা পল্লী, এসএমপাড়া সড়কে বিশাল জায়গা কিনে পাকা বাড়ি নির্মাণ, সাবরাং ও দেশের বিভিন্ন স্থানে কিনেছেন কয়েক কোটি টাকার ভুসম্পত্তি। তার সহযোগী সাইফুল, কাইছার হামিদ ও তার ভাই ইদ্রিচ জেল থেকে বের হয়ে পুনরায় স্বর্ণ ও ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তার তিন সহোদর ও শ্যালক তার ইয়াবা কারবারে মদদ যুগায়। মাহমুদুল করিম মাদুসহ অপর ভাইদের বিরুদ্ধে গত ১০ জানুয়ারি টেকনাফ থানায় পুলিশের উপর হামলা, সরকারী দায়িত্ব পালনে বাধা ও ২ জনকে হত্যার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে থানায় নিয়মিত মামলা করেছে। স্বর্ণেরবার ও ইয়াবা আটকের ঘটনায় ওই মাদুর বিরুদ্ধে লোহাগাড়া ও কক্সবাজার সদর মডেল থানায় ২টি মামলা রয়েছে। এসব মামলা মাথায় নিয়ে স্বর্ণ চোরাচালান, ইয়াবা ও অস্ত্র ব্যবসার মতো ভয়ঙ্কর সব অপরাধে জড়িত থাকার পরও মাদু কক্সবাজারের এক প্রভাবশালীর ছত্রছায়ায় থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে অনেকটা চ্যালেঞ্জ করে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়িয়েছে। স্বর্ণ ও ইয়াবা গডফাদার মাহমুদুল হক মাদু কক্সবাজার শহরে বসেই সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করত বলে অভিযোগ রয়েছে। জানা যায়, একসময় প্রবাসে থাকা টেকনাফ সাবরাং উত্তর নয়াপাড়ার খুইল্যা মিয়ার পুত্র মাহমুদুল হক মাদু দেশে এসে শুরু করে স্বর্ণ ও ইয়াবা চোরাচালান। টেকনাফ থানা সূত্রে জানা গেছে, সাবরাং কচুবনিয়ার ইয়াবা ব্যবসায়ী আবুল কালাম ও রশিদ আহম্মদ প্রকাশ ডেইলাকে পুলিশ আটক করেছিল। আটকের পর ইয়াবা উদ্ধারে গেলে তাদের সহযোগিরা পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় ওই দুই মাদক ব্যবসায়ী গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়। এসময় ৫টি দেশীয় তৈরি আগ্নেয়াস্ত্র, ২২ রাউন্ড তাজা কার্তুজ ও ২২ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কয়েকজন সদস্যও আহত হন। ২০১৫ সালের ৮ সেপ্টেম্বর ইয়াবা ডন মাদুর টয়োটা এলিয়েন প্রাইভেট কার থেকে ১ কেজি ৬৬২ গ্রাম ওজনের ১০টি স্বর্ণের বার উদ্ধার ও তিনজনকে আটক করে পুলিশ। এঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় সাবরাং উত্তর নয়াপাড়া গ্রামের মাহামুলুদুল হক মাদু ও তার ভাই জাহেদ হোসেন প্রকাশ জারু সহ ২২ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়। সূত্রে প্রকাশ, উক্ত আসামিরা অবৈধ অস্ত্র ও ইয়াবার ব্যবসাসহ অবৈধ পথে বাংলাদেশ হতে নদীপথে মানবপাচারে জড়িত। তবে এরা কক্সবাজার শহরে বসবাস করছে।
×