স্টাফ রিপোর্টার ॥ ফেঁসে যেতে পারেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল মুনীম মুসাদ্দিক আহমেদ সহ সংশ্লিষ্টরা। বিমানের পাইলট নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে মুসাদ্দিক আহমেদসহ ১০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মঙ্গলবার দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে অনুসন্ধান কর্মকর্তা সাইফুল ইসলামের পাঠানো নোটিশে তাদেরকে আগামি ২৮, ২৯ ও ৩০ জুলাই হাজির হতে বলা হয়েছে। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য জনকন্ঠকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দুদক জানায়, নোটিশে সাবেক এমডি মুসাদ্দিক আহমেদকে ৩০ জুলাই সকাল ১০টায় উপস্থিত হতে বলা হয়েছে। এছাড়া ২৯ জুলাই বিমানের চিফ অব ট্রেনিং ক্যাপ্টেন ফজল মাহমুদকে এবং বিমানের চিফ ফিন্যান্সিয়াল অফিসার বিনীতি সুধ, পরিচালক (ফ্লাইট অপারেশন্স) ক্যাপ্টেন ফারহাত হাসান জামিল, পরিচালক (মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস) মো. আশরাফুল আলম ও পরিচালক (প্লানিং) এয়ার কমোডর মাহবুব জামান খানকে ২৯ জুলাই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়েছে। ২৮ জুলাই বিমানের পরিচালক (প্রশাসন) পার্থ কুমার পন্ডিত, পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড মেটারিয়াল ম্যানেজমেন্ট) সাজ্জাদুর রহিম, পরিচালক (কাস্টম সার্ভিস) মুমিনুল ইসলাম ও জিএম (প্রশাসন) বুশরা ইসলামকে তলব করা হয়েছে।
মুসাদ্দিক আহমেদ ছাড়া বাকিদের নির্ধারিত সময়ে দুদকের এই কর্মকর্তার দপ্তরে উপস্থিত হতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বরাবর নোটিস পাঠিয়ে অনুরোধ করা হয়। এর আগে গত ২ মে বিমানের সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুসাদ্দিক আহমেদসহ ১০ জনকে বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা জারি করে দুদক।
অভিযোগ রয়েছে,তলবীকৃত এ সব কর্মকর্তাদের মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে সাবেক এমডি মোসাদ্দিক আহমেদ ও ক্যাপ্টেন ফারহাত জামিল। শুধু নিজের ভাতিজাকে বিমানের পাইলট বানাতে মোসাদ্দিক তার সারাজীবনের সুনাম ক্ষুন্ন করতেও দ্বিধা করেননি। অন্ধ হয়ে প্রকাশ্যে সব ধরণের অনিয়মে জড়িয়ে অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেন তিনি। বার বার গ্রেস নম্বর বাড়িয়ে তার ভাতিজাকে পরীক্ষায় পাস করাতে গিয়ে বড় ধরণের কেলেংকারির জন্ম দেন। বিশেষ করে দুই দফায় ৫৮ পাইলট নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে সাবেক এমডি মোসাদ্দিক আহম্মেদের সঙ্গে হাত মেলান ক্যাপ্টেন ফারহাত জামিলও।
দুদক সুত্র জানায়, সংস্থাটির করা প্রাথমিক অনুসন্ধানে দুটি নিয়োগেই মোসাদ্দিক আহম্মেদের সঙ্গে মূল ভূমিকায় ছিলেন এই ফারহাত জামিল। তিনি ছিলেন নিয়োগ কমিটির প্রধান। পরিচালক ফ্লাইট অপারেশন (ডিএফও) থাকার কারণে দুটি নিয়োগে তাকে কমিটির প্রধান করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রিকে নিয়ে বুদাপেষ্ট যাবার পথে বড় ধরণের যান্ত্রিক ত্রৃুটির দেখা দেয়া ফ্লাইটের প্রধান কো অর্ডিনেটরের দায়িত্ব পালনে তার ভুমিকা রহস্যজনক বলে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সতর্ক করলেও এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছেন পোকামারার পাইলট হিসেবে পরিচিত এই ফারহাত। দুদকের পাশাপাশি মন্ত্রণালয়ের তদন্ত রিপোর্টেও নতুন ফারহাত জামিলসহ বাংলাদেশ পাইলট অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) সভাপতি ও একাধিক সদস্যের সম্পৃক্ত থাকার প্রমাণ মেলেছে। এ সব অভিযোগে মে মাসে সরিয়ে দেয়া হয় মোসাদ্দিককে। বিমান সূত্র জানিয়েছে-নতুন এমডি নিয়োগের পর কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে ফারাহাতের বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুসাদ্দিক অঅহমেদ কোন প্রকার মন্তব্য করতে রাজি হনননি