ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

রাজধানীতে দক্ষিণগাঁও রায়েরবাগ ও বসুন্ধরা থানা হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৯:২১, ২৪ জুলাই ২০১৯

রাজধানীতে দক্ষিণগাঁও রায়েরবাগ ও বসুন্ধরা থানা হচ্ছে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ রাজধানী ঢাকায় আরও নতুন তিনটি থানা স্থাপন করা হচ্ছে। প্রস্তাবিত থানা তিনটির নাম দক্ষিণগাঁও, রায়েরবাজার ও বসুন্ধরা। নতুন তিনটি থানা স্থাপন হলে রাজধানীতে থানার সংখ্যা দাঁড়াবে ৫৩টিতে। প্রায় দুই কোটি মানুষ নিয়ে রাজধানী ঢাকা এখন বিশ্বের ১১ নম্বর মেগাসিটি। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে অপরাধও বাড়ছে। অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করে মানুষজনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আরও নতুন তিনটি থানা স্থাপন করা হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ খবর জানা গেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে থানা স্থাপনের প্রস্তাব অনুযায়ী সবুজবাগ ও খিলগাঁও থানার একাংশ নিয়ে দক্ষিণগাঁও, মোহাম্মদপুর থানা ভেঙ্গে রায়েরবাজার, আর খিলক্ষেত, বাড্ডা ও ভাটারা থানার অংশবিশেষ নিয়ে বসুন্ধরা থানা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। নতুন তিনটি থানার জন্য ২০৭টি নতুন পদ তৈরি করার প্রস্তাবে নতুন তিনটি থানার জন্য ছয়জন পরিদর্শক, ৩৬ জন উপ-পরিদর্শক (এসআই), ৬০ জন সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই), ৯৯ জন কনেস্টেবল, তিনজন বাবুর্চি এবং তিনজন সুইপার চাওয়া হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশ(ডিএমপি) সূত্রে জানা গেছে, খিলগাঁও থানা এলাকার শেখের জায়গা ও মাস্তমাঝি এলাকাটি দূরত্ব প্রায় পাঁচ কিলোমিটার। থানা থেকে গাড়িতে যেতে সময় লাগে ২৫ থেকে ৩০ মিনিট। পায়ে হেঁটে এক ঘণ্টা। নির্জন এলাকায় থাকে না কেউ। অনেক সময় যেতে চায় না পুলিশও। রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকাও এদের মধ্যে অন্যতম। ভাটারা থানার অন্তর্ভুক্ত এই এলাকাটি বিদেশী অপরাধীদের আখড়া। থানার ব্যস্ততা ও নির্জন এলাকার কারণে অনেকেই পার পেয়ে যাচ্ছেন। রাজধানীর এমন অনেক জায়গা আছে যেখান থেকে থানার দূরত্ব অনেক বেশি। সেসব এলাকার মানুষের কথা বিবেচনা করে রাজধানী ঢাকায় পুলিশের আরও তিনটি নতুন থানা গঠন করা হচ্ছে। ২০১২ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে প্রস্তাবিত (বসুন্ধরা, দক্ষিণগাঁও, রায়েরবাজার) তিনটি থানা এলাকায় ৪১টি খুন ও অন্যান্য অপরাধের ঘটনায় এক হাজার ৭৭৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তিনটি থানা স্থাপন করলে এসব এলাকার লোকজন সহজে পুলিশের সহায়তা পাবে এবং এলাকার আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ও অপরাধ দমন সহজ হবে বলে মনে করা হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, রাজধানী ঢাকায় আরও থানার প্রয়োজন রয়েছে। ঢাকায় জনসংখ্যার তুলনায় পুলিশের থানার সংখ্যা অনেক কম। রাজধানী ঢাকায় বর্তমানে প্রায় দুই কোটি মানুষের বসবাস। জনবহুল এই শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতেই ৪৪ বছর ধরে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। নাগরিক জীবনে আধুনিক পুলিশি সেবা দিতে ১৯৭৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ১২টি থানা নিয়ে যাত্রা শুরু করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। রাজধানীতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বেড়েছে থানার সংখ্যা। রাজধানী ঢাকায় একসময় শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নামে চাঁদাবাজি, ডাকাতি, ছিনতাই, সংঘবদ্ধ ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। সাইবার ক্রাইম, জঙ্গী তৎপরতা ব্যাপক আকারে বেড়েছে। মাদকদ্রব্য বলতে ছিল গাঁজা, হেরোইন, প্যাথেডিন আর ফেনসিডিল, এখন মাদকের স্থান দখল করেছে ইয়াবা। যানজট নিত্যদিনের পীড়াদায়ক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশে অপরাধের ধরনের সঙ্গে যেমন পরিবর্তন আসছে, পুলিশের তদন্তেও তেমনি পরিবর্তন এসেছে। ঢাকা মহানগর পুলিশ এখন একটি সুপরিকল্পিত পুলিশিং অবকাঠামো গঠন করতে সক্ষম হয়েছে। এখন ডিজিটাল পদ্ধতিতে মামলা হয়। এমনকি প্রতিটি থানার হাজতখানা, ডিউটি অফিসার ও থানার ভেতরে কী হচ্ছে, তা সংশ্লিষ্ট ডিসি ও কমিশনার অফিস থেকে মনিটরিং করছেন। রাজধানী ঢাকাকে নিরাপত্তার চাঁদরে ঢাকার জন্য আরও তিনটি থানা গঠন করা হচ্ছে।
×