ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শুল্ক বৈষম্যের কারণে রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি কমে গেছে

প্রকাশিত: ০৭:৫৫, ৫ আগস্ট ২০১৯

শুল্ক বৈষম্যের কারণে রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি কমে গেছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বড় ধরণের শুল্ক বৈষম্যের কারণে দেশে রিকন্ডিশন্ড গাড়ির আমদানি দিনদিন কমে যাচ্ছে। চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে এ বাণিজ্যখাত। দীর্ঘ চল্লিশ বছরে গড়ে ওঠা এ ব্যবসা এখন অলাভজনক বাণিজ্যে পরিণত হয়েছে। প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে ছিটকে পড়ছেন আমদানিকারক ও উদ্যোক্তারা। পাশাপাশি ভোক্তারা কম দামে ভাল গাড়ি কেনা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন। ফলে অনিরাপদ যান নছিমন, করিমন ও ভটভটি খ্যাত গাড়িগুলো অবাধে চলছে দেশের সড়ক-মহাসড়কে। সোমবার বারভিডার প্রধান কার্যালয়ে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করে আবদুল হক এসব কথা বলেন। এর আগে সদ্য বিদায়ী প্রেসিডেন্ট মো. হাবিবুল্লাহ ডন তাঁকে সংগঠনটির দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন। নির্বাচন বোর্ডের সভাপতি মোহাম্মদ আলী এ সময় উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া সংগঠনটির নবনির্বাচিত সহসভাপতি, সেক্রেটারি ও পরিচালকরাও এ সময় দায়িত্বভার বুঝে নেন। চলমান সঙ্কট উত্তরণে বেশ কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরেছেন বারভিডার (রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইম্পোটার্স এন্ড ডিলার্স এসোসিয়েশন) নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট আবদুল হক। তিনি বলেন, রিকন্ডিশন্ড গাড়ি ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে হলে সুনির্দিষ্ট শুল্ক হার নির্ধারণ করতে হবে। ইয়েলো বুকে প্রদর্শিত বর্তমান বাজার মূল্যের ভিত্তিতে শুল্কায়ন, অথবা, নতুন গাড়ির গাড়ির অনুরুপ আমদানিকারকের ইনভয়েসে ঘোষিত মূল্যের ভিত্তিতে শুল্কায়ন করতে হবে। এছাড়া আমদানি প্রক্রিয়া সহজীকরণের জন্য আমদানিকারকদের চট্টগ্রাম বন্দরে প্রবেশের ব্যবস্থা করা এবং বন্দরে মজুদকৃত গাড়িগুলো রাখার জন্য আধুনিক অফ ডক প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা করার দাবি জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, দেশের মফস্বলের স্বল্প আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে উন্নতমানের জাপানি গাড়ি আমদানিতে ১০০০ সিসি এবং তার নিচের ইঞ্জিন বিশিষ্ট গাড়ির জন্য শুল্কের হার কমাতে হবে। আবদুল হক বলেন, রিকন্ডিশন্ড গাড়ির ব্যবসা থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) প্রতি বছর প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আহরণ করছে। দেশের চট্টগ্রাম বন্দর ও মোংলা বন্দর ব্যবহার হচ্ছে গাড়ি আমদানিতে। অব্যবহৃত মোংলা বন্দর চালুকরণে ভূমিকা রেখেছেন রিকন্ডিশন্ড গাড়ির আমদানিকারক-উদ্যোক্তারা। এখাতের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখার পাশাপাশি ব্যাপকভাবে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দেশের কয়েক লাখ মানুষ এ খাতের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু বড় ধরণের শুল্ক বৈষম্য, পুরনো গাড়ির অবচয় হার কমানো, নিম্নমানের গাড়ি আমদানি ও অসম প্রতিযোগিতার মুখে রিকন্ডিশন্ড গাড়ি ব্যবসা দিনদিন সংকুচিত হয়ে পড়ছে। শুল্ক বৈষম্য সহ বিভিন্ন কারণে গত কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি কমে গেছে। চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর দিয়ে গত ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে রিকিন্ডশন্ড গাড়ি আমদানি হয়েছে ২৩ হাজার ২৮৯টি। এর আগের অর্থ বছরে আমদানি হয়েছিল ৩২ হাজার ৮২০টি গাড়ি। অর্থাৎ এক বছরেই রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি কমেছে প্রায় সাড়ে ৯ হাজার, যা মোট রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানির প্রায় ২৯ শতাংশ।
×