ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চামড়া শিল্পের সুদিন ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ সরকার : জামায়াত

প্রকাশিত: ০৯:০৬, ১৪ আগস্ট ২০১৯

চামড়া শিল্পের সুদিন ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ সরকার  :  জামায়াত

অনলাইন রিপোর্টার ॥ মহাজোট সরকার চামড়া শিল্প এবং চামড়ার সুদিন ফিরিয়ে আনতে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে বলে জানিয়েছে নিবন্ধন হারানো দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। বুধবার জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান গণামধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা জানান। তিনি বলেন, দেশের চামড়া শিল্পের দুরবস্থা ও পশুর চামড়ার দাম অস্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়ায় দেশের কৃষক, পশুর খামারি ও চামড়া ব্যবসায়ীসহ আমরা সবাই গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। চামড়া শিল্পের বিশেষজ্ঞগণ মনে করেন যে, চামড়া শিল্প ও চামড়ার সুদিন ফিরানোর লক্ষ্যে সরকারের উচিত ছিল চামড়া ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের নীতিগতভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করা। এমনিতেই হাজারীবাগ থেকে চামড়া শিল্প সাভারে স্থানান্তরিত করার দ্বারা ক্ষতির মধ্যে পড়েছে চামড়া শিল্পের মালিক ও ব্যবসায়ীরা। ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা চামড়া শিল্পের আন্তর্জাতিক বাজার হারিয়েছে। টানা ১০টি বছর ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও মহাজোট সরকার চামড়া শিল্প এবং চামড়ার সুদিন ফিরিয়ে আনতে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। এ শিল্পের ব্যাপারে সরকারের উদাসীনতা ও এ শিল্পের জন্য সহায়ক নীতি না থাকার কারণেই চামড়া শিল্প ডুবতে বসেছে। জামায়াত নেতা বলেন, চামড়া শিল্পের দুরবস্থার কারণে প্রতি বছরই চামড়ার দাম কমছে। হিসাব করে দেখা গেছে গত ৭ বছরে গরুর চামড়ার দাম কমে অর্ধেকে এসে দাঁড়িয়েছে এবং খাসির চামড়ার দাম এক-তৃতীয়াংশের নিচে এসে পৌঁছেছে। ব্যবসায়ীরা গত বছরের তুলনায় এবার অন্তত ২৫ লক্ষ পিস চামড়া কম কেনার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে। গত বছর তারা ১ কোটি ২৫ লক্ষ পিস চামড়া ক্রয় করেছিল। কিন্তু এবার তারা ১ কোটি পিস চামড়া ক্রয়ের লক্ষমাত্রা ঠিক করেছে। গত বছরের ৬০ লক্ষ পিস চামড়া অবিক্রিত অবস্থায় পড়ে আছে। তিনি বলেন, ইউরোপ, আমেরিকার বাজারে চামড়াজাত পণ্য রফতানি কমেছে। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে এ পণ্যের রফতানি কমেছে ৬ কোটি ৫৭ লক্ষ মার্কিন ডলার বা প্রায় সাড়ে ৫০০ কোটি টাকা। তার আগের বছর রফতানি কমেছিল ১৪ কোটি ৮৬ লক্ষ মার্কিন ডলার বা ১ হাজার ২৪৮ কোটি টাকা। এ থেকে দেখা যাচ্ছে যে, প্রতি বছরই রফতানি আয় কমছে। গত ২ মাসে চামড়া জাত পণ্যের রফতানি আয় কমেছে ২৬.২৬ শতাংশ। জামায়াতের সেক্রেটারি আরও বলেন, সাভারে চামড়া শিল্পের জন্য বরাদ্দকৃত প্লটের সংখ্যা ২০৫টি। শিল্প ইউনিটের সংখ্যা ১৫৫টি। চালু ট্যানারির সংখ্যা ১২৩টি। পরিবেশগত ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে ৭৮টি ট্যানারিকে। চামড়া শিল্পের এ দুরবস্থার কারণে বাংলাদেশের পশুর চামড়া সীমান্তের ওপারে চলে যাচ্ছে। তারা কালো বাজারে অল্প দামে বাংলাদেশি চামড়া কিনে লাভবান হচ্ছে এবং বাংলাদেশের চামড়ার হারানো বাজার ভারতের দখলে চলে যাচ্ছে। তিনি বলেন, এ অবস্থার কারণে বাংলাদেশ যেমন বৈদেশিক মুদ্রা হারিয়ে অর্থনৈতকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তেমনি বাংলাদেশের কৃষক, পশুর খামারি ও চামড়া ব্যবসায়ীরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক মাদ্রাসা ও মাদরাসার লক্ষ লক্ষ ছাত্র-ছাত্রী ও এতিমখানা কুরবানির পশুর চামড়ার টাকায় চলে। ডা. শফিকুর রহমান বলেন, চামড়ার উপযুক্ত দাম না পেয়ে এই বিপুল সংখ্যক মাদরাসা ও মাদরাসা লক্ষ লক্ষ ছাত্র-ছাত্রী এবং এতিমখানাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
×