ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে

প্রকাশিত: ০৯:১৬, ১৬ আগস্ট ২০১৯

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে

২০১৮ সালের ২৭ ডিসেম্বর। আমরা সিলেটে বেড়াতে গিয়েছিলাম। আমরা বেলা ১২টায় ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ট্রেনে চেপে বসলাম। আমাদের ট্রেনের নাম ‘জয়ন্তিকা’। আমরা মোট ৬ জন গিয়েছিলাম। আমি, বাবা, মা, ফুপি এবং তার দুই ছেলে। বেলা সাড়ে ১২টায় ট্রেন থামলো বিমানবন্দর স্টেশনে। সেখান থেকে ফুপি ও তার দুই ছেলে উঠল। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় আমরা পৌঁছলাম শ্রীমঙ্গলে। স্টেশনে আমাদের নিতে হাজির ছিল আমাদের সাইফুল ভাইয়া ও তার ছেলে আয়ান। আমরা তাদের বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হলাম। তারপর ‘টমটম’ গাড়ি চড়ে গেলাম ‘মেইন ব্রাঞ্চ অব নীলকণ্ঠ’তে। আমরা সেখানে বিস্ময়কর ‘সাত রঙের চা’ পান করলাম। এই সাত রঙের চায়ের যিনি আবিষ্কারক, তার সঙ্গে ছবিও তুললাম। পরদিন সকাল ঠিক ৮টায় সাইফুল ভাইয়া, ইতি ভাবি ও তার ছেলে-মেয়েকে নিয়ে গেলাম বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের সমাধিস্থলে। জায়গাটা ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে পড়েছে। যদিও সেখানে সাধারণ মানুষের যাওয়া নিষেধ, তাও আমরা গিয়েছিলাম। আর সেটা সম্ভব হয়েছিল সাইফুল ভাইয়ের কল্যাণে। কারণ তিনি শ্রীমঙ্গল পৌরসভার আর্টিটেকচার ইঞ্জিনিয়ার ও নগর পরিকল্পনাবিদ। সকাল সাড়ে ৯টা। আমরা ভারত-বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে। সেখানে এমন একটি স্থান আছে, যাকে বলা হয় ‘নো ম্যানস্ ল্যান্ড’। মানে এই জায়গাটা বাংলাদেশ-ভারতের কারোরই নয়! এখানে একটি পিলার আছে। এই পিলার দিয়েই চিহ্নিত করা হয়েছে দুই দেশের সীমানা। এই সীমানার বেশ কয়েক গজ জায়গাই হচ্ছে নিরপেক্ষ এলাকা বা নো-ম্যানস্ ল্যান্ড। আমি ও সাইফুল ভাইয়ার ছেলে নিজেদের এক পা বাংলাদেশ এবং এক পা ভারতের মাটিতে ফেলে ছবি তুললাম! সে এক অসাধারণ ব্যাপার, অসাধারণ অনুভূতি! এরপর বেলা ১১টার দিকে গেলাম মাধবপুর লেকে। সেখানে লেক দেখতে হলে পাহাড়ে চড়তে হয়। তারপর পাহাড় থেকে নেমে লেকের তীর থেকে মা একটি শাপলা ফুল তুলে নিয়েছিল। সেখান থেকে গেলাম মেয়রের চা-বাগানে। তখন ঘড়িতে বাজে বেলা সাড়ে ১২টা। সেখানে আমি আর আয়ান মনের আনন্দে অনেক খেলাধুলা করলাম। মেয়রের চা-বাগান এবং ফুলের বাগান অপরূপ সুন্দর! চা-বাগানের কর্মীরা আমাদের চা তৈরি করে খাওয়ালো। স্বাদ দারুণ মজার। আমি, বাবা, সাইফুল ভাইয়া ও তার ছেলে ও ২ ভাই সবাই মিলে ‘ওয়াচ টাওয়ার’-এ উঠলাম। এটা চা-বাগানের ঠিক পাশেই। সেখান থেকে পুরো বাগান দেখা যায়। দুপুর ২টা। এরপর বাসায় যাওয়ার পালা। সেখানে গিয়ে উদরপূর্তি করলাম। এরপর বিকেল ৫টায় গেলাম ‘বাইক্কার বিল’ দেখতে। এই বিলে শীতের সময় প্রচুর অতিথি পাখির আগমন ঘটে। বিল দেখে মনটা ভরে গেল প্রশান্তিতে। বাসায় ফিরে চললাম। তখন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা। শরীর ভীষণ ক্লান্ত। কিছু খেয়ে বিছানার আশ্রয় নিলাম। তারপর হারিয়ে গেলাম ঘুমের রাজ্যে। স্মরণীয় এই সিলেট-সফরের কথা অনেকদিন মনে থাকবে। শিক্ষার্থী, পঞ্চম শ্রেণী, মুগদা আইডিয়াল স্কুল এ্যান্ড কলেজ, ঢাকা
×