ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

হংকংয়ে বিক্ষোভকারীদের ব্রিটিশ নাগরিকত্ব দেয়া হোক

প্রকাশিত: ০৯:১৩, ১৮ আগস্ট ২০১৯

হংকংয়ে বিক্ষোভকারীদের ব্রিটিশ নাগরিকত্ব দেয়া হোক

১৯৭২ সালে উগান্ডার সাবেক স্বৈরশাসক ইদি আমিন উগান্ডা থেকে দক্ষিণ এশীয় নাগরিকদের বহিষ্কার করলে ব্রিটেন একই পদক্ষেপ নিয়েছিল। হংকংয়ে চীনা শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারীদের সরাসরি ব্রিটিশ নাগরিকত্ব দেয়া উচিত, লন্ডন ভিত্তিক প্রভাবশালী গবেষণা সংস্থা এ্যাডাম স্মিথ ইনস্টিটিউট এটি মনে করে। এসব লোকদের নাগরিকত্ব দিয়ে সহজে একঝাঁক শিক্ষিত ও উচ্চপ্রশিক্ষণপ্রাপ্ত তরুণ নাগরিক পেতে পারে ব্রিটেন। দ্যা সান। সাবেক ব্রিটিশ উপনিবেশ হংকংয়ে দীর্ঘদিন ধরে চীন বিরোধী বিক্ষোভ চলছে। এর প্রেক্ষিতে হংকং সীমান্তের চীনা অংশে বিপুল সৈন্য সমাবেশ ঘটিয়েছে বেজিং। এ্যাডাম স্মিথ ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ ব্রিটিশ সরকারকে জানিয়েছে, হংকংয়ে এখনও এক লাখ ৬৯ হাজার ব্রিটিশ নাগরিক রয়েছে তাদের ব্রিটেনে ফেরত আনা উচিত। হংকংয়ের ইংরেজী জানা যেসব তরুণ চীনা কমিউনিস্ট শাসনের ঘোর বিরোধী এবং যারা এখনও ব্রিটিশ মূল্যবোধে বিশ্বাসী তাদের আবেদন করার সুযোগ দেয়া উচিত। ১৯৭২ সালে উগান্ডার সাবেক স্বৈরশাসক ইদি আমিন উগান্ডা থেকে দক্ষিণ এশীয় নাগরিকদের বহিষ্কার করলে ব্রিটেন একই পদক্ষেপ নিয়েছিল। সে সময় বহিষ্কার হওয়া ওইসব লোকদের নাগরিকত্ব দিয়েছিল ব্রিটেন। ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত হংকং ব্রিটেনের অধীনে ছিল। এরপর হংকংকে চীনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তখন চীন ও ব্রিটেনের মধ্যে একটি যৌথ ঘোষণায় বলা হয়েছিল, অন্তত ২০৪৭ সাল পর্যন্ত ব্রিটেন হংকংয়ের নাগরিকদের মানবাধিকার রক্ষায় কাজ করতে পারবে। এ্যাডাম স্মিথ ইনস্টিটিউট শুক্রবার বলেছে, চলমান পরিস্থিতিতে হংকংবাসীদের জন্য নয়া ব্রিটিশ ভিসা চালুর সময় এসেছে। কারণ ব্রিটেন যখন হংকংকে চীনের নিকট হস্তান্তর করে তখন চীন সরকার একদেশ, দুই নীতি প্রথা রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। হংকংয়ে প্রকৃত গণতন্ত্র রক্ষার কথা বলা হয়েছিল। চীনের সেসব প্রতিশ্রুতি এখন উবে গেছে। হংকংয়ে এখন অহরহ চীন বিরোধী বিক্ষোভ হচ্ছে। হংকং সীমান্তে সৈন্য সমাবেশ ঘটিয়েছে চীন। তাই ব্রিটিশ সরকারের এখন হংকং নীতিতে অটল থাকা উচিত। পাশাপাশি হংকংবাসীদের মানবাধিকার রক্ষায় ব্রিটিশ সরকারের পদক্ষেপ নেয়া কর্তব্য। ছোট্ট দ্বীপ হংকংয়ের জনগণের জন্য এখন আমাদের দরজা খোলা রাখা উচিত। অভিবাসী কোটায় তাদের সামনের সারিতে রেখে হংকংবাসীদের এখন ব্রিটেনে প্রবেশ করতে দেয়া উচিত। এতে চীনের ওপর হুমকি অব্যাহত রাখার পাশাপাশি ব্রিটেনের অর্থনীতির গতি ত্বরান্বিত হবে বলে এ্যাডাম স্মিথ ইনস্টিটিউট মনে করছে। এ্যাডাম স্মিথ ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, হংকংয়ের এসব জনগণ ব্রিটেনে স্বাধীনভাবে এবং নিজেদের উন্নত ভবিষ্যতের জন্য কাজ করতে পারবে বলে। কারণ ব্রিটেনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করার পর পরই একটি যুগোপযোগী অভিবাসন ব্যবস্থা চালু করবে। এই ব্যবস্থা উদার হলেও তা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এ্যাডাম স্মিথ ইনস্টিটিউটের পক্ষে ম্যাথু কিলকোনি বলেন, এই পদক্ষেপ চীনের প্রতি একটি বার্তা দেয়া হবে। কারণ আমরা তাদের বোঝাতে চাই, যারা এখনও মুক্ত সমাজে বাস করতে চায় ব্রিটেন এখনও তাদের প্রকৃত ঠিকানা। তিনি বলেন, চীন হংকংবাসীদের ওপর নিপীড়ন চালাচ্ছে। আর ব্রিটেন নিরাপদ দূরত্বে রয়েছে। তবে ব্রিটিশ সরকারের মনে রাখা উচিত হংকংয়ের সঙ্গে ব্রিটেনের এক গভীর সম্পর্ক বিদ্যমান।
×