ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

গ্রহে প্রানের অনুসন্ধান করা হচ্ছে : জ্যোর্তিবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. দীপেন ভট্রাচার্য্য

প্রকাশিত: ০৯:২৩, ১৭ আগস্ট ২০১৯

গ্রহে প্রানের অনুসন্ধান করা হচ্ছে  : জ্যোর্তিবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. দীপেন ভট্রাচার্য্য

নিজস্ব সংবাদদাতা, হবিগঞ্জ ॥ নাসার সাবেক জ্যের্তিবিজ্ঞানী এবং বর্তমান ক্যালির্ফোনিয়ার মেরিনো ভ্যালি কলেজের পদার্থ বিদ্যার অধ্যাপক ড. দিপেন ভট্রাচার্য্য বলেছেন, বিভিন্ন গ্রহে প্রানের অনুসন্ধান করলেও এখন পর্যন্ত তার প্রমান পাওয়া যায়নি। তবে কোথাও প্রানের অস্থিত্ব থাকতেও পারে। এক সময় সেখানে হয়তো মানব বসতি গড়ে উঠতে পারে। তাই জ্যোতি বিজ্ঞান বুঝতে হলে বায়ূমন্ডলের ওপরে যেতে হবে। তিনি আরও বলেন, নক্ষত্রের পতন থেকে আমরা মূল্যবান খনিজ পদার্থ পেয়েছি। বিজ্ঞান কোন সময় থেমে থাকে না। এটিকে আমরা এক সময় গ্রহ বলেছি। এখন এটিকে আমরা গ্রহ বলি না। আমর মনে হচ্ছে প্লটোকে আবার এখন গ্রহ বলতে পারি। পৃথিবীতে বর্তমানে মানুষ আছে ৮বিলিয়ন। এটি বেড়ে হতে পারে ১২ থেকে ১৩ বিলিয়ন। তবে এক সময়ে ঠিকই কমে তা ৫ বিলিয়নের আশেপাশে থাকবে। বর্তমানে এশিয়া ও আফ্রিকাতে মানুষ বেশী বাড়ছে। বাংলাদেশেও ২০৫০ সালের পর মানুষ কমতে থাকবে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে যারা শিক্ষা নিয়ে গবেষনা করেন তাদের অনেক স্বক্ষমতা আছে। তাদেরকে এখন কাজে লাগাতে হবে। কেনই বা বাংলাদেশের লোক পদ্মা আর যমুনা সেতু করতে পারছে না তা আমার বোধগম্য নয়। তিনি বলেন, জ্ঞান সব সময় মানুষের কল্যানে আসে। তা যেভাইে আহরন করা হউক না কেন কিছু জানাটাই মানব কল্যাণ। বর্তমান দৃশ্যময় আলোয় বাংলাদেশ থেকে গবেষণা করা কঠিন উল্লেখ করে ড. দিপেন বলেন, এখানে শীতে আকাশে কুয়াশা আর গরমে বৃষ্টি থাকে। ফলে মহাকাশ গবেষণা করা কঠিন। তবে বর্তমানে অনেক ডাটা উন্মুক্ত হওয়ায় যে কোন স্থান থেকে এ নিয়ে গবেষণা করা সহজ ও সাশ্রয়ী হবে। তিনি বলেন, ১৯’শ শতকের প্রথম দিকে জানতাম না ছায়াপথ ছাড়াও আরও গ্যালাক্সী আছে। ১৯২৪ সালে আমরা সেটি জানতে পেরেছি। তবে এর সব কিছুই আইনস্টাইন থেকে এসেছে সঠিক নয়। তিনি ব্ল্যাকহোল বিশ্বাস করতো না। যদিও তার থিওরী থেকেই ব্ল্যাকহোল আবিস্কার হয়েছে। তিনি বলেন, গ্র্যাজুয়েট এর নীচে বিদেশে লেখাপড়ার জন্য না যাওয়াটাই ভাল। এর চেয়ে দেশে পদার্থ বিজ্ঞান অথবা ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার পর এ বিষয়ে এমফিল করে এবং ছোট ছোট প্রজেক্ট এর কাজ করে বিদেশে গিয়ে লেখাপড়া করলে সফল হওয়া সহজ। তিনি শনিবার দুপুরে সাইফুর রহমান টাউন হলে তার সম্মানে হবিগঞ্জ জেলা বাপা,খোয়াই ওয়াটারকিপার ও তারুণ্য সোসাইটি দেয়া এক বিশাল সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে একটানা ৩ ঘন্টার বক্তব্যে এ কথা বলেন। এসময় এসপি মোহাম্মদ উল্ল্যা, জেলা বাপার সভাপতি সাবেক অধ্যক্ষ ইকরামুল ওয়াদুদ, হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মিজানুর রহমান মিজান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফজলুল হক, বাপা সেক্রেটারী তোফাজ্জল সোহেল, কবি তাহমিনা বেগম গিণি, বিশিষ্ট আইনজীবি মনসুর উদ্দিন আহমেদ ইকবাল, প্রধান শিক্ষক সুধাংশু কর্মকার, কবি রুমা মোদক, এনজিও কর্মী বাদল রায়, বিশিষ্ট দন্ত চিকিৎসক এস এম আল-আমিন, সাহিত্যিক হারুন সিদ্দিকী, আবিদুর রহমান রাকিব, আমিনুল ইসলাম তুহিন, তানসেন আমিন, প্রিন্সিপাল নুরুউদ্দিন জাহাঙ্গীর, রোকেয়া আক্তার, ডাঃ পিন্টু ও শেখ আলফাজ সহ প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ ও স্কুল-কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। এসময় ড. দিপেন ভট্রাচার্য্যের হাতে উপহার তুলে দেয়া হয় আয়োজকদের পক্ষ থেকে এবং তার সংক্ষিপ্ত জীবিনী পাঠ করেন হবিগঞ্জ সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেনীর ছাত্র তাহসিন বিলওয়াল আরিয়ান। প্রসঙ্গত, ড. দীপেন ভট্রাচার্য্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নাসার গর্ডাড স্পেশ ফ্লাইট ইন্সস্টিটিউটের গবেষক ছিলেন। ইউনিভারসিপি অব ক্যালির্ফোনিয়া রিভার সাইড ক্যাম্পাসে (ইউসিআর) গামা রশ্মি জোর্তিবিদ হিসেবে ২০ বছর কাজ করেছেন। বর্তমানে ক্যালির্ফোনিয়ার মরেনো ভ্যালি কলেজে পদার্থ বিদ্যার অধ্যাপক। তিনি বাংলাদেশের বিজ্ঞান ও পরিবেশ আন্দোলনের সঙ্গেও যুক্ত। বাংলা ভাষায় তার বেশ কয়েকটি কল্প উপন্যাস ও গল্প প্রকাশিত হয়েছে।
×