ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জাতীয় শোক দিবসে শিক্ষার্থীদের শ্রদ্ধাঞ্জলি

প্রকাশিত: ১২:২৮, ১৮ আগস্ট ২০১৯

জাতীয় শোক দিবসে শিক্ষার্থীদের শ্রদ্ধাঞ্জলি

১৫ আগস্ট, বাঙালী জাতির ইতিহাসে এক কলঙ্কময় দিন। ১৯৭৫ সালের এই দিনে এদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। রচিত হয় এক কালো অধ্যায়। জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পরিচিত এই দিনটিতে বঙ্গবন্ধু ও বাঙালীর ইতিহাস নিয়ে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের শ্রদ্ধাসহ মতামত তুলে ধরেছেনÑ অনিক আহমেদ ১. গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের প্রতিষ্ঠাতা মাও সেতুং একবার বলেছিলেন, ‘পৃথিবীর বুকে কিছু কিছু মৃত্যু এমন রয়েছে যা পাখির পালকের ন্যায় হালকা আর কিছু মৃত্যু এমন রয়েছে যা হিমালয় পর্বতের সমান ভারি।’ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী, বাঙালী জাতির স্বাধীনতার অন্যতম মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যু ছিল জাতির জন্য হিমালয়ের মতোই ভারি এবং তার চেয়ে বেশি কলঙ্কের। একটি জাতির স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা থেকে স্বাধীনতার মহানায়ক যখন ওই স্বাধীন দেশেই সপরিবারে নৃশংসভাবে খুন হন, তখন তার চেয়ে দুর্ভাগ্যের বিষয় আর কি হতে পারে- ওই জাতির জন্য? তারই উত্তরসূরি, দেশরতœ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ দেশ যখন সোনার বাংলায় পরিণত হচ্ছে তখন এই ১৫ আগস্টে আমাদের সকলের উচিত ওই মহান নেতার আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করা। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ার অসমাপ্ত কাজকে দলমত নির্বিশেষে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। কারণ, বঙ্গবন্ধু কোন দলের নেতা ছিলেন না, তিনি এদেশের আপামর জনগণের নেতা। বরাতুজ্জামান স্পন্দন ভেটেরিনারি এ্যান্ড এনিমেল সায়েন্সেস বিভাগ (১মবর্ষ) গণবিশ্ববিদ্যালয়, সাভার, ঢাকা। ২. প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট কাল রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মেরে হত্যাকারীরা বাংলাদেশকে পিছিয়ে দেয়ার যে স্বপ্ন দেখেছিল, তা আজ ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার অর্ধশত বছর হতে চললেও হয়ত প্রকৃত দোষীরা এখনও শাস্তি পায়নি। হয়ত তারা এখনও এদেশের মাটিতে কারও ছত্রছায়ায় সবার সামনে দাপটের সঙ্গে চলাফেরা করছে। এটা এদেশের মানুষের জন্য বড়ই লজ্জার। আমি মনে করি, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের চাওয়া শুধু বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে না। বঙ্গবন্ধুর যে স্বপ্ন, আদর্শ ছিল সেটাকে বাস্তবে রূপদান করতে হবে। দেশের সকল মানুষ যেন তাদের সকল অধিকার ফিরে পায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। দলমত নির্বিশেষে দেশের সকল মানুষের স্বার্থে কাজ করে যেতে হবে। শুধু বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের পেছনে পড়ে না থেকে দেশের মানুষের জন্য বঙ্গবন্ধুর যে স্বপ্নগুলো ছিল তা বাস্তবায়ন করতে পারলেই শোক দিবস পালন সার্থক হবে। অনিন্দিতা সাহা ফরিদপুর নার্সিং ইনস্টিটিউট (৩য় বর্ষ)। ৩. যে কোন ঐতিহাসিক দিন সেটা আনন্দের বা বেদনার হোক, আমাদের ওই দিনের ঘটনা আর মানুষের কথা মনে করিয়ে দেয়। প্রতিবছর যখন তারিখটা ঘুরে আসে, আমাদের মনে পড়ে কী ঘটেছিল সেই দিনে। ১৫ আগস্ট তেমনি একটি দিন। বাঙালী জাতির জন্য অত্যন্ত কস্ট্রের ও লজ্জাজনক অতীত। এদিন রাতে হত্যা করা হয়েছিল বর্তমান বাংলাদেশের রূপকার, হাজার বছরের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ধ্বংসস্তূপ থেকে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে তিনি যে ভূমিকা রাখছিলেন, তার হত্যাকারীরা হয়ত সেটা চায়নি। তাই তো তাকে মেরে বাংলাদেশকে পিছিয়ে দিতে চেয়েছিল, কিন্তু তারা জানে না একজন মুজিবকে মেরে তারা বাংলাদেশে লক্ষ মুজিবের সৃষ্টি করে গেছে। আর এই লক্ষ মুজিবেরা আজ বাংলাদেশকে এগিয়ে নিচ্ছে। তবে দুঃখের বিষয়, বঙ্গবন্ধু হত্যার ৫০ বছর হতে চললেও প্রকৃত দোষীরা এখনও অনেক ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সরকারকে দলমতের উর্ধে উঠে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের এদেশের মাটিতে বিচার করতে হবে। তবেই শান্তি পাবে বঙ্গবন্ধুর আত্মা, এগিয়ে যাবে দেশ। হাবিবুল্লাহ শেখ এনিমেল সায়েন্স এ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদ (৩য় বর্ষ), পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ৪. ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তার পরিবার পরিজনসহ হত্যার মাধ্যমে বাঙালী জাতির জীবনে এক কালো অধ্যায়ের সূচনা হয়েছিল। এই কালো অধ্যায়ের ভয়াবহতা কতটুকু সেটা জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা, দেশের অকৃত্রিম বন্ধুকে হারানোর মাধ্যমে এখন খুব ভাল করেই বুঝতে পারছে জাতি। কেননা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, শিক্ষা, চেতনা, দেশপ্রেম আমাদের শিখিয়ে গেছে মনুষ্যত্বের পরিচয়। একজন নাগরিকের দেশের প্রতি কতটুকু কর্তব্য পালন করা উচিত, একটি দেশের জন্য সে দেশের নাগরিকের কতটুকু ভূমিকা থাকা প্রয়োজন, দেশের জনগণের স্বাধীনতা এবং দেশের মানুষের ভাল ভবিষ্যত নির্ধারণে দেশের প্রত্যেকটা মানুষের দেশের প্রতি কিরূপ ভালবাসা আর কর্তব্যের প্রয়োজন তার দৃষ্টান্ত বঙ্গবন্ধু। দেশের বর্তমান রাজনৈতিক দুরবস্থা প্রতিনিয়ত সেটা প্রমাণ করে দিচ্ছে। শোককে শক্তিতে রূপান্তর করার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে বাঙালী জাতিকে সঠিক পথ ধরে এগিয়ে যেতে হবে। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে এটাই এখন মূল স্লোগান। শাহাদাত হোসেন লোক প্রশাসন বিভাগ (৪র্থ বর্ষ) কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
×