ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

ঝড়ের মধ্যেই হংকং-এর রাজপথে তীব্র চীনবিরোধী বিক্ষোভ

প্রকাশিত: ০০:১৬, ১৮ আগস্ট ২০১৯

ঝড়ের মধ্যেই হংকং-এর রাজপথে তীব্র চীনবিরোধী বিক্ষোভ

অনলাইন ডেস্ক ॥ ঝড়বৃষ্টি উপেক্ষা করে হংকং-এর রাজপথে চীনবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন অঞ্চলটির বাসিন্দারা। শনিবার টানা ১১ সপ্তাহের মতো বিক্ষোভে অংশ নেন আন্দোলনকারীরা। তবে এদিন রাজপথে নামেন মূলত শিক্ষকরা। মূলত শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে এ আন্দোলন পরিচালিত হলেও ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে গণতন্ত্রের দাবিতে রাজপথে নামেন তারা। যদিও ইতোমধ্যেই এ বিক্ষোভ নিয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে চীন। হংকং সীমান্তবর্তী শেনঝেনে সামরিক মহড়াও চালিয়েছে বেইজিং। শনিবারের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে যোগ দেন কয়েক হাজার স্কুল শিক্ষক। পুলিশ বলছে, এদিনের বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন আট হাজার ৩০০ বিক্ষোভকারী। তবে আন্দোলনকারীরা বলছেন, প্রকৃতপক্ষে এ সংখ্যা ২২ হাজার। রবিবার ফের বড় ধরনের বিক্ষোভের প্রস্তুতি চলছে। শনিবারের বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের একজন গণিতের শিক্ষক সিএস চান। তিনি বলেন, কয়েক মাস ধরে সরকার আমাদের উপেক্ষা করছে। আমরা বিক্ষোভ অব্যাহত রাখবো। বিবিসি জানিয়েছে, বিতর্কিত প্রত্যর্পণ আইনের বিরোধিতায় টানা ১১ সপ্তাহ ধরে চলা এ বিক্ষোভ ক্রমেই সহিংস হয়ে উঠেছে। অব্যাহত আন্দোলন-বিক্ষোভ জনজীবনে বড় ধরনের ব্যাঘাত তৈরি করছে। চীন সরকার বিক্ষোভকারীদের প্রতি কঠোর ভাষায় সমালোচনা করছে। অনেকের মনেই এখন প্রশ্ন বেইজিং কি শেষ পর্যন্ত ধৈর্য হারাবে এবং সরাসরি পদক্ষেপ নিতে উদ্যোগী হবে? কিন্তু চীনের এক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করার আইনগত কতটা অধিকার আছে? হংকং-এ চীনা সামরিক পদক্ষেপের আশঙ্কা কতটা? চীন কি সেনা পাঠাতে পারে? মূল আইন খুবই পরিষ্কার। ১৯৯৭ সালে যুক্তরাজ্য হংকং-কে চীনের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার পর অঞ্চলটির সংক্ষিপ্ত একটি নতুন সংবিধান তৈরি করা হয়েছিল। সে অনুযায়ী যতক্ষণ না হংকং-এ সার্বিকভাবে জরুরি অবস্থা জারি হচ্ছে অথবা যুদ্ধাবস্থা ঘোষণা করা হচ্ছে, ততক্ষণ চীনের সামরিক হস্তক্ষেপ একমাত্র ঘটতে পারে হংকং সরকার সে অনুরোধ জানালে। এছাড়া ‘জনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে এবং দুর্যোগের সময় ত্রাণকাজে’। তবে বেশিরভাগ বিশ্লেষক বলছেন এই পর্যায়ে পিএলএ বা পিপলস লিবারেশন আর্মির সেনাদের হংকং-এর রাস্তায় নামানোর বিষয়টা অনেকটা অকল্পনীয়। হংকং-এ চীনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইভান চয় বলেন, এটা কাঠামোগত এবং অর্থনৈতিক পরিবেশে একটা নাটকীয় পরিবর্তন নিয়ে আসবে। এ ধরনের পদক্ষেপের পরিণতি সুদূরপ্রসারী হতে পারে। হস্তান্তরের পর থেকে হংকং-এ পিএলএ-র প্রায় পাঁচ হাজার সেনা রয়েছে। ম্যাককোয়ারি ইউনিভার্সিটির গবেষক অ্যাডাম নাই বলছেন, এটা মূলতচীনা সার্বভৌমত্বের একটা প্রতীকি উপস্থিতি। তবে ৩১ জুলাই সেনানিবাস তাদের নীরব ও পরোক্ষ ভূমিকা ভঙ্গ করেছে। প্রতিবাদ নিয়ে একটি ভিডিও প্রকাশ পেয়েছে যাতে দেখা যাচ্ছে সেনারা ক্যান্টনিজ ভাষায় চিৎকার করছে, এর পরিণতির জন্য আপনারা দায়ী থাকবেন! সেনারা বিক্ষোভকারীদের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং ফুটেজের একটি দৃশ্যে দেখা যাচ্ছে, পুলিশ একটি ব্যানার ধরে রয়েছে যাতে লেখা, অগ্রসর হওয়া বন্ধ কর, অন্যথায় আমরা শক্তি ব্যবহার করবো। সাধারণত অসন্তোষের সময় হংকং পুলিশ এ ধরনের ভাষা ব্যবহার করে থাকে। সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি।
×