ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

বঙ্গবন্ধু বিশ্ববন্ধু

প্রকাশিত: ০৮:২০, ১৯ আগস্ট ২০১৯

বঙ্গবন্ধু বিশ্ববন্ধু

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী এবারও বেদনাবিধূর ও শোকবিহ্বল পরিবেশে পালিত হয়েছে দেশে-বিদেশে। তবে সবকিছু ছাপিয়ে উঠেছে জাতিসংঘ সদর দফতরে প্রথমবারের মতো আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে প্রদত্ত বক্তাদের বক্তব্য। এই অনুষ্ঠানে স্বভাবতই জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর স্থায়ী প্রতিনিধি, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, জাতিসংঘের কর্মকর্তারা, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের মূলধারার মানবাধিকারকর্মী, লেখক, চলচ্চিত্র শিল্পী, টিভি উপস্থাপকসহ বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার বিশিষ্টজনরা উপস্থিত ছিলেন। শোকসভায় একাধিক বক্তা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও স্বাপ্নিক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে ‘ফ্রেন্ড অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ বা বিশ্ববন্ধু হিসেবে অভিহিত করেন। এর মাধ্যমে দেশের সীমানা ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বঙ্গবন্ধুর সবিশেষ ভূমিকা ও অবদান তুলে ধরার আন্তরিক উদ্যোগ এবং প্রচেষ্টাই প্রতিফলিত হয়েছে। উল্লেখ্য, আগামী বছর জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষেও জাতিসংঘ সদর দফতরে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। পাশাপাশি ২০২১ সালে উদযাপন করা হবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম বা ডব্লিউইএফ ২০২১ সালে সুইজারল্যান্ডের দাভোসে বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে। এর পাশাপাশি জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যা বলেছেন তাও সবিশেষ প্রণিধানযোগ্য। বঙ্গবন্ধুর অন্যতম আদর্শ ও লক্ষ্য সর্বোপরি স্বপ্ন ছিল, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়া। প্রধানমন্ত্রী শোকবিহ্বল দীপ্তকণ্ঠে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের কথা উচ্চারণ করে বলেছেন, ‘সেই বাংলাদেশ গড়ার মাধ্যমেই আমরা জাতির পিতার রক্তঋণ শোধ করব। এটা আমাদের অঙ্গীকার।’ একজন নেতা বিশ্বদরবারে তাঁর দেশের মানুষকে মর্যাদাপূর্ণ আত্মপরিচয়ের আলোকে কী অপরিসীম সাহসিকতার মধ্য দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন, তার উজ্জ্বল উদাহরণ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি নিরলস পরিশ্রম করে চারণের মতো সারাদেশ ঘুরে মানুষকে জাগিয়েছেন, পাকিস্তানী স্বৈরাচারী সামরিক শাসকদের জেলে বছরের পর বছর বন্দী থেকেও অকুতোভয় বীরের মতো নিজ সংকল্পে অটল থেকেছেন, মুক্তির মহামন্ত্রে জাতিকে জাগিয়েছেন এবং স্বাধীনতার পথ ধরে জাতিকে পৌঁছে দিয়েছেন স্বপ্ন পূরণের চূড়ান্ত লক্ষ্যে- এ কৃতিত্ব একান্তভাবে তাঁরই। তিনিই স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের রূপকার এবং প্রতিষ্ঠাতা। আমাদের স্বাধীনতার মহানায়ক বঙ্গবন্ধু। তিনিই তাঁর সুযোগ্য নেতৃত্বের মাধ্যমে জাতিকে পৌঁছে দিয়ে গেছেন স্বাধীনতার স্বর্ণ তোরণে। আর সে কারণেই তিনি বিশ্বনেতা, বিশ্ববন্ধু। ২০১৭ সালে জাতিসংঘ সংস্থা ইউনেস্কো বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের স্বাধীনতার ঘোষণা তথা ভাষণকে ‘বিশ্ব ঐতিহ্যের দলিল’ তথা মানবজাতির অমূল্য সম্পদ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল সোনার বাংলা গড়ার। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অসাম্প্রদায়িক, ধর্মনিরপেক্ষ নীতি, সকলের সঙ্গে সৌভ্রাতৃত্ব। অতঃপর সরকারের সামনে প্রধান কাজটিই হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যাওয়া।
×