ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

হেডিংলিতে খেলার আশা স্মিথের

প্রকাশিত: ১০:৫৯, ২০ আগস্ট ২০১৯

 হেডিংলিতে খেলার আশা স্মিথের

জিএম মোস্তফা ॥ বল টেম্পারিং কেলেঙ্কারির নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ১৬ মাস পর ফিরলেন টেস্ট ক্রিকেটে। যেন রূপ কথার মতো প্রত্যাবর্তন। বীরোচিত প্রদর্শনীতে খেললেন এ্যাশেজ ইতিহাসের অন্যতম সেরা ইনিংস। এবারের এ্যাশেজ দিয়েই টেস্ট ক্রিকেট পা রাখে নতুন যুগে। শুরু হয় আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ। এ্যাসেজ সিরিজের প্রথম টেস্টের দুই ইনিংসেই টানা দুই সেঞ্চুরি করেন স্টিভেন স্মিথ। কিন্তু দ্বিতীয় টেস্টেই আঘাত পান তিনি। জোফ্রা আর্চারের বলে ম্যাচের চতুর্থ দিনে ঘাড়ে আঘাত পেয়ে মাঠ ছেড়ে যান স্মিথ। পরে আবার ব্যাটিংয়ে নামেন তিনি। ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসের সময় ফিল্ডিং করেননি। অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংসের আগে আইসিসির নতুন নিয়ম অনুযায়ী স্মিথের বদলি হিসেবে একাদশে নেয়া হয় মার্নাস ল্যাবুশেনকে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে কনকাশন টেস্টে উতরাতে না পেরে ম্যাচের মাঝপথেই বদলি হয়েছিলেন স্টিভেন স্মিথ। যে কারণে হেডিংলিতে এ্যাশেজের তৃতীয় টেস্টে তার খেলা নিয়ে তৈরি হয় সংশয়। তবে স্মিথ এখনও আশা হারাচ্ছেন না। লর্ডস টেস্ট ড্রয়ের পর সাংবাদিকদের তিনি জানিয়েছেন, চারদিন পর শুরু হতে যাওয়া তৃতীয় টেস্টে খেলার বিষয়ে তিনি আশাবাদী। যদিওবা এত দ্রুততম সময়ে পুরোপুরি সুস্থ হওয়া নিয়ে স্মিথ নিজেও সন্দিহান। এ প্রসঙ্গে স্মিথ বলেন, ‘দুই টেস্টের মাঝে সময়টা অনেক কম। আগামী চার পাঁচদিনে দিনে কয়েকবার করে পরীক্ষা করা হবে আমাকে। আশা করছি পরের টেস্টে খেলতে পারব। কিন্তু এটা পুরোপুরি নির্ভর করবে মেডিক্যাল স্টাফদের সিদ্ধান্তের ওপর। এটা অবশ্যই চিন্তার বিষয়। আমি এই বিষয়ে শতভাগ ফিট হয়েই মাঠে নামতে চাই। দুই-একদিনের মাঝেই আমি অনুশীলনে ফিরব। সেখানে ফাস্ট বোলারদের মুখোমুখি হয়ে নিজেকে পরীক্ষা করব। এ রকম কিছু পরীক্ষা দিয়েই ফিটনেস প্রমাণ করতে হবে।’ লর্ডস টেস্টের প্রায় দুইদিন কেড়ে নিয়েছিল বৃষ্টি। যে কারণে ড্রয়ের সম্ভাবনা দেখেন ক্রিকেটবোদ্ধাদের অনেকেই। শেষ পর্যন্ত ড্র হলেও বেশ উত্তাপ ছড়ায় এ্যাশেজ সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট। আর লর্ডসে দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে না পেরে হতাশা প্রকাশ করেছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক। এ প্রসঙ্গে স্মিথ বলেন, ‘চতুর্থ দিনের রাত থেকে একটু মাথা ব্যথা ছিল। যদিও খুব ভাল একটা ঘুম হয়েছিল। ঘুম থেকে উঠেই মাথা ব্যথাটা বেড়ে যায়। কিছু পরীক্ষা করার পর কনকাশনটা বেড়ে যাওয়ায় খেলতে পারিনি আর। রাত ও সকালের পরীক্ষায় কিছুটা পার্থক্য ছিল। শেষ পর্যন্ত খেলতে না পেরে আমি খুব হতাশ।’ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টেই জোড়া সেঞ্চুরি করেন স্মিথ। লর্ডসের প্রথম ইনিংসেও সৌরভ ছড়িয়েছে তার ব্যাট। মাত্র ৮ রানের জন্য মিস করেছেন সেঞ্চুরি। অস্ট্রেলিয়াকে জেতানোর জন্যই ক্রিজে ফিরতে চান স্মিথ, ‘আমি অস্ট্রেলিয়াকে ম্যাচ জেতাতে চাই। ডাক্তাররা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটা সবার জন্যই ভাল হয়েছে। আশা করছি কয়েকদিনের মাঝে সুস্থ হয়ে খেলায় ফিরব।’ এদিকে, টেস্টে ফিরে দুর্দান্ত ব্যাট করার পুরস্কার হাতেনাতেই পেয়ে গেছেন স্মিথ। এজবাস্টন টেস্টের পর প্রকাশিত র‌্যাঙ্কিংয়েই ভারতের চেতেশ্বর পুজারাকে পেছনে ফেলে এক ধাপ এগিয়ে তৃতীয় স্থানটি দখল করেছিলেন তিনি। লর্ডস টেস্টের পর আরও এক ধাপ উপরে উঠে এসেছেন এই অস্ট্রেলিয়ান। এবার নিউজিল্যান্ডের দলনেতা কেন উইলিয়ামসনকেও টপকে গেছেন তিনি। এর ফলে তার ওপরে এখন শুধুই বিরাট কোহলি। রবিবার সর্বশেষ প্রকাশিত আইসিসি টেস্ট ব্যাটসম্যানদের র‌্যাঙ্কিংয়ে দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করছেন স্মিথ। তার রেটিং পয়েন্ট ৯১৩। লর্ডস টেস্টের আগে যা ছিল ৯০৩। শীর্ষে থাকা কোহলির চেয়ে মাত্র ৯ পয়েন্টে পিছিয়ে আছেন স্টিভেন স্মিথ। উইলিয়ামসনের নিচে নামার কারণ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ব্যর্থতা। প্রথম টেস্টে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি কিউই অধিনায়ক। দুই ইনিংসে করেন যথাক্রমে ০ ও ৪। এই ব্যর্থতার ফলে এক ধাপ পিছিয়ে তিন নম্বরে নেমে গেছেন তিনি। তার রেটিং পয়েন্ট ৮৮৭। তবে র‌্যাঙ্কিংয়ে বেশ অগ্রগতি হয়েছে লঙ্কান অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নের। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৬ উইকেটের জয়ের ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে ১২২ রান করেন তিনি। যার সৌজন্যেই সেরা দশে ঢুকে গেছেন করুনারত্নে। স্থান করে নিয়েছেন আট নম্বরে। যা তার সাত বছরের টেস্ট ক্যারিয়ারের সেরা র‌্যাঙ্কিং। টেস্ট বোলারদের র‌্যাঙ্কিংয়ে যথারীতি শীর্ষে আছেন অসি পেসার প্যাট কামিন্স। ক্রিকেটের তীর্থভূমি লর্ডসেই টেস্ট অভিষেক হয়েছে ইংল্যান্ডের নতুন তারকা জোফ্রা আর্চারের। দুই ইনিংস মিলিয়ে ৯১ রানের বিনিময়ে ৫ উইকেট নিয়ে র‌্যাঙ্কিংয়ের ৮৩ নম্বরে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি।
×