ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

অনির্বাণ চক্রবর্তী

মঙ্গল জয়ের লক্ষ্যে বুয়েটের মঙ্গলযান

প্রকাশিত: ১১:৩১, ২০ আগস্ট ২০১৯

মঙ্গল জয়ের লক্ষ্যে  বুয়েটের মঙ্গলযান

বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উড্ডয়নের মাধ্যমে স্পেস টেকনোলজি বা মহাকাশ প্রকৌশলের জগতে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। প্রযুক্তিবিদ্যার সবচেয়ে অগ্রসর ও উন্নত একটি শাখা হিসেবে স্পেস টেকনোলজির মানব উন্নয়ন ও বিকাশে প্রচুর অবদানের সুযোগ আছে। তাই বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) টিম ইন্টারপ্যানেটার বাংলাদেশের উন্নয়নে স্পেস টেকনোলজির ব্যবহারের জন্য গবেষণা ও চেষ্টা চালাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে তারা অংশ নিচ্ছে এ বছর পোল্যান্ডের কিএলস শহরে অনুষ্ঠিতব্য ইউরোপিয়ান রোভার চ্যালেঞ্জে (ইআরসি) প্রতিযোগিতায়। এটি একটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা যেখানে মঙ্গলের পরিবেশে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক কাজ যেমন মাটির গুণাগুণ পরীক্ষা, আবহাওয়ার জন্য তথ্য সংগ্রহ, সর্বোপরি জীবনের অস্তিত্ব খোঁজা ইত্যাদির সক্ষম স্বয়ংক্রিয় রোভার বানাতে হয়। রোভার কি : প্রথমে রোভার সম্পর্কে ছোট একটি ধারণা দেয়া যাক। রোভার মূলত রিমোটচালিত এবং ক্ষেত্রবিশেষে স্বয়ংক্রিয় এক ধরনের যান যা এবড়োথেবড়ো অসমতল অঞ্চলে চলতে পারে, বিভিন্ন মেকানিক্যাল কাজ সম্পাদন করতে পারে এবং বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা চালাতে পারে। নাসা (ন্যাশনাল এরোনটিক্স এ্যান্ড স্পেস এডমিনিস্ট্রেশন) এবং ইসা (ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি) এর মত মহাকাশ সংস্থা চাঁদ ও মঙ্গলগ্রহে তাদের রোভার পাঠিয়েছে। যেমন অপরচুনিটি এবং কিউরিওসিটি রোভার। এসব রোভার আমাদেরকে সেখানকার বিভিন্ন অঞ্চল ও আবহাওয়ার তথ্য সংগ্রহ করে পাঠিয়েছে, মহাকাশ সম্পর্কে আমাদের বুঝতে সহায়তা করেছে। নিকট ভবিষ্যতেই মানুষ মহাকাশ থেকে বিভিন্ন খনিজ সংগ্রহের কথা ভাবছে। শুধু তাই নয়, আমেরিকার বেসরকারী সংস্থা স্পেস-এক্স ভবিষ্যতে মঙ্গলগ্রহে মানব সভ্যতার বিকাশের লক্ষ্য নিয়েছে। ভবিষ্যতে এসব প্রযুক্তির বাস্তবায়নের জন্য রোভার টেকনোলজি উন্নয়নের মাধ্যমে বৈজ্ঞানিক গবেষণার বিস্তার প্রয়োজন। তাই ইআরসির মতো আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের স্পেস টেকনোলজিতে ভূমিকা রাখার জন্য উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। ইউরোপিয়ান রোভার চ্যালেঞ্জ এবং তাতে বুয়েটের ভূমিকা : ইউরোপিয়ান রোভার চ্যালেঞ্জ সারা পৃথিবীর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি প্রতিযোগিতা, যেখানে লক্ষ্য হলো এমন রোবট বানানো যা মঙ্গলগ্রহের প্রতিকূল পরিবেশ মোকাবেলা করে সেখানে বৈজ্ঞানিক গবেষণা চালাতে পারবে। নাসা ও ইসা তাদের রোবটিক মিশনে যেসব প্রতিকূলতার সম্মুখীন হয়, সেগুলো সমাধান করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করাই এ প্রতিযোগিতার মূল লক্ষ্য। এ বছরের প্রতিযোগিতায় ৫৬টি দল অংশ নেবে। প্রতিটি দলকে তাদের নিজেদের বানানো রোবট নিয়ে আসতে হবে, যা অসমতল এবড়োথেবড়ো অঞ্চল পার হতে পারবে, বিভিন্ন সরঞ্জাম সঠিক জায়গায় পৌঁছাতে পারবে এবং পরীক্ষণের জন্য মাটির নমুনা সংগ্রহ করতে পারবে। রোভারটিকে শুধুমাত্র রেডিও সিগনালের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। দলগুলো কত কার্যকরীভাবে তাদের কাজ সম্পন্ন করতে পারে তার উপর মূল্যায়িত হবে। এছাড়াও রোভারকে কিছু অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ সম্পন্ন করতে হবে। এখানে উল্লেখ্য, বুয়েট এর আগেও এ রকম প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে। ২০১১ ও ২০১৫ সালের ইআরসির পাশাপাশি সম্মানজনক ইউআরসি (ইউনিভার্সিটি রোভার চ্যালেঞ্জ) এ ২০১৬ সালে অংশ নিয়েছে। এ বছরের প্রতিযোগিতায় কাক্সিক্ষত ফলাফল অর্জনের জন্য তারা তাদের রোভারে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে। দলের অন্যতম সদস্য ফাহিম আহমেদ বলেন, ‘আমরা চাই যাতে এ বছর আমাদের রোভারের সক্ষমতা শুধু প্রতিকূল অঞ্চলে চলা ও বৈজ্ঞানিক নমুনা সংগ্রহেই সীমাবদ্ধ না থাকে, চলার পথের বাধা চিহ্নিত করা, অভ্যন্তরীণ পরিবেশে কাজ করতে পারা ইত্যাদিতেও সক্ষম হয়। এবারের রোভারের সবচেয়ে আকর্ষণীয় উন্নতি হল ইমেজ প্রসেসিং প্রযুক্তির ব্যবহার। বর্তমানে আমাদের রোভার নির্দিষ্ট রঙের কোন গোল বস্তু (যেমন টেনিস বল, পাথর) নিজে থেকেই চিহ্নিত করতে ও ধরতে পারে। আরও অগ্রগতির মাধ্যমে আমাদের রোভার জটিল আকৃতির বস্তু শনাক্ত করতে পারবে এবং কোন বিশাল এলাকা থেকে তা খুঁজে আনতে পারবে। এছাড়াও আমাদের রোবটিক আর্ম ভার বহনের পাশাপাশি বিভিন্ন সূক্ষ্ম কাজও করতে সক্ষম, যেমন দরজার নব খোলা, কীবোর্ডে টাইপ করা, ড্রয়ার খোলা ইত্যাদি। আমরা চেষ্টা করছি এ প্রযুক্তির উন্নয়নের মাধ্যমে আমাদের রোবটিক আর্ম দিয়ে মানুষের হাতের মতো নানামাত্রিক ও সূক্ষ্ম কাজ করার সক্ষমতা অর্জন করতে। রোভারে ব্যবহার করা আরেকটি উল্লেখযোগ্য ও আকর্ষণীয় প্রযুক্তি হলো খওউঅজ সেন্সর, যা ব্যবহার করে সাধারণত স্বয়ংক্রিয় গাড়িতে চারপাশের ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি করা হয়। এটি ব্যবহারের মাধ্যমে রোভারকে বাইরে থেকে পরিচালনা করার প্রয়োজন কমে যায়, রোভারের স্বয়ংক্রিয়তা বেড়ে যায়। ইআরসিতে অংশগ্রহণ ও উদ্ভাবনের ভূমিকা : ইআরসির কল্যাণে সারা পৃথিবীতে ব্যবসায়িক উদ্যোগ, বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও উদ্ভাবন বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা চাই না এ উন্নয়নের ধারায় বাংলাদেশ পিছিয়ে থাকুক। তাই বাংলাদেশের রোবটিক্স এবং স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তির উন্নয়নে টিম ইন্টারপ্যানেটার স্পেস টেকনোলজি ব্যবহার করতে আগ্রহী। তাই আমাদের রোভার শুধু মহাকাশ গবেষণাতেই ভূমিকা রাখবে না, কৃষি, উদ্ধার কর্মকাণ্ড, সামরিক কর্মকাণ্ড, সেবামূলক কর্মকাণ্ড, খনি থেকে উত্তোলনসহ নানা ক্ষেত্রে রোভার প্রযুক্তির ব্যবহারে টিম ইন্টারপ্যানেটারের ভবিষ্যত লক্ষ্য সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো। কৃষি : কৃষির ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল হওয়া সত্ত্বেও স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের সাহায্যে ফসল উৎপাদনে বাংলাদেশ এখনও পিছিয়ে। আমাদের রোভার অসমতল ক্ষেত্রে চলতে সক্ষম, তাই এটি কৃষি জমিতে সহজেই চলতে পারবে। তাছাড়া এর কাঠামোতে কিছু পরিবর্তন এনে সেচকাজ চালানো, কীটনাশক ছিটানো, বীজ বপন ইত্যাদি সহজেই করা সম্ভব। রিমোটের সাহায্যে এটি চালানো সম্ভব হওয়ায় কৃষকের কষ্ট অনেকখানি কমে যাবে। খুব সহজেই ফসল কাটা এবং মাঠের যত্ন নেয়া সম্ভব রোভারের মাধ্যমে। যার ফলে অন্যান্য কৃষিকাজ যেমন গৃহপালিত পশুপাখি পালন, সম্পূরক ফসল উৎপাদন ইত্যাদিতে কৃষক সময় দিতে পারবে এবং তার আয় বাড়াতে পারবে। উদ্ধার কর্মকাণ্ড : সারা পৃথিবীতে রোবটিক্সের সবচেয়ে বড় ব্যবহারগুলোর একটি হলো প্রতিকূল পরিস্থিতিতে উদ্ধার কর্মকাণ্ড চালানো, যাতে বাংলাদেশ এখনো পিছিয়ে আছে। বিভিন্ন অগ্নিকা-ের ঘটনায় আটকে পরা মানুষের কাছে অনেক সময় অগ্নিনির্বাপক কর্মীরা পৌঁছাতে পারেন না। আমাদের রোভার এ কিছু পরিবর্তন এনে আটকে পড়া মানুষজনের কাছে অক্সিজেন ও প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জাম পৌঁছানো সম্ভব, যাতে উদ্ধারকাজে উদ্ধারকর্মীরা আরও কিছু সময় বেশি পান। তাদের রোবটের একটি ভার্সন উদ্ধারকাজে মানুষের সাহায্য করতে পারবে। এছাড়া রোবটিক আর্মের মাধ্যমে ভার উত্তোলন ক্ষমতা বাড়িয়ে নিয়ে রোভার দিয়ে ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধারকাজ চালানো আরও সহজ হবে। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও পাহাড়ী এলাকায় রোভারের সাহায্যে দুর্যোগ পরবর্তী উদ্ধারকাজ চালানো যাবে। মেডিক্যাল : বৃদ্ধ বা অসুস্থ রোগীদের শুশ্রুষাকারী বা সহকারী হতে পারে রোভার। হাসপাতালে ডাক্তারের সহকারী হিসেবে ও রোগীদের হেলথ মনিটরিং করতে পারে এ রোভার। ঘরের দৈনন্দিন কাজ কিংবা ভিডিও ফিডব্যাকের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা- সবই করানো যাবে রোভার দিয়ে। এছাড়াও দুর্গম জায়গায় কিভাবে ওষুধ সরবরাহ করা যায় তা নিয়ে কাজ করছে টিমটি। উন্নত দেশের মতো সঠিক উপায়ে অর্গান ট্রান্সপোর্টেশান ও একদিন সম্ভব হবে তাদের রোভারের মাধ্যমে। খনি উত্তোলন : মঙ্গলগ্রহে মাটি পরীক্ষার কাজ করতে সক্ষম রোবটকে খনি উত্তোলনের জন্য তৈরি করা সম্ভব। যেসব ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় মানুষ পাঠানো নিরাপদ না, যেমন কয়লাখনির নিচে যেখানে বিষাক্ত কার্বন মনোক্সাইড বিদ্যমান, সেসব জায়গায় রোভার সহজেই যেতে পারবে। কোন খনি মানুষের জন্য নিরাপদ কিনা তা জানার জন্য প্রাথমিকভাবে রোভার পাঠিয়ে তথ্য সংগ্রহ করাও যেতে পারে। পারমাণবিক বিদ্যুতকেন্দ্র ও কারখানায় কর্মী রোবট : বিভিন্ন ধরনের শিল্প কারখানায় মানুষের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, যেখানে বিকল্প হিসেবে রোভার ব্যবহার করা যায়। বর্তমানে বিভিন্ন পারমাণবিক বিদ্যুতকেন্দ্রে ক্ষতিকর তেজস্ক্রিয় পদার্থ নিয়ে কাজ করতে রোভার ব্যবহার করা হচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুতকেন্দ্রে কাজে লাগানোর জন্য বাংলাদেশের উচিত রোভারের পেছনে বিনিয়োগ করা। সামরিক ও প্রতিরক্ষা : সীমান্ত টহল কিংবা পরিদর্শনের জন্য রোভার একটি ভাল বিকল্প। যুদ্ধক্ষেত্রের প্রতিকূল অঞ্চলে সাহায্য বা সরঞ্জাম পৌঁছানোর কাজ রোভার করতে পারে। রোবটিক আর্ম দিয়ে বোমা নিষ্ক্রিয়করণের মতো সূক্ষ্ম ও বিপজ্জনক কাজ করানো যেতে পারে, যা মানুষের পক্ষে করা নিরাপদ নয়। টিম ইন্টারপ্যানেটার দেশের মানুষের জন্য রোবটিক প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী ও সচেষ্ট। তবে বর্তমানে আমাদের মূল লক্ষ্য ইউরোপীয়ান রোভার চ্যালেঞ্জে ভাল ফলাফল অর্জন করা। আমরা আশা করি এর মাধ্যমে জাতীয়ভাবে আমাদের পরিচিতি বাড়বে এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে, যার ফলে রোভার প্রযুক্তির আমরা আরও গবেষণা করতে পারব। ইআরসির কারণে সারা বিশ্বে বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও উদ্ভাবন ত্বরান্বিত হয়েছে। টিমের মডারেটর ড. মোহাম্মদ আশিকুর রহমান বলেছেন, ‘এই চমৎকার রোভারটি বানানো থেকে শুরু করে ইউরোপিয়ান রোভার চ্যালেঞ্জ ২০১৯ এর মতো একটি উঁচুমানের প্রতিযোগিতায় কোয়ালিফাই করার পুরো কৃতিত্বের দাবিদার টিম ইন্টারপ্যানেটারের সঙ্গে জড়িত বুয়েটের তরুণ শিক্ষার্থীরা। আমি খুবই আশাবাদী যে টিমটি এই সেপ্টেম্বরে পোল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য ফাইনাল রাউন্ডে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পেলে দেশের জন্য ভাল ফলাফল বয়ে আনবে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ফান্ডের অভাবে প্রতিযোগিতাতে ওদের অংশগ্রহণ এ মুহূর্তে বেশ অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে, তাই আমি সরকারী ও বেসরকারী পৃষ্ঠপোষকদের বিশেষভাবে আহ্বান করব এই তরুণ শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করতে। উদ্ভাবনী কাজে, জ্ঞান-বিজ্ঞানের কাজে আমাদের তরুণ সমাজকে উৎসাহিত করা দেশের স্বার্থেই এ মুহূর্তে খুব প্রয়োজন।’ তবে এই মহাযজ্ঞে অংশ নেবার পথে একটি বড় বাধার সম্মুখীন হচ্ছে বুয়েটের টিম ইন্টারপ্যানেটার। দারুণ ব্যয়বহুল এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য তারা এখনও খুঁজে পায়নি কোন স্পন্সর। স্পন্সর না পেলে এই প্রতিভাবান দলটি এই আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতাটিতে অংশ নিতে পারবে না। কাজেই দলটি আশা করছে যে বিজ্ঞান ও দেশের স্বার্থে কোন সহৃদয় প্রতিষ্ঠান তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসবে।
×