ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশের শুরুটা হলো বড় ব্যবধানে হেরে!

প্রকাশিত: ০৯:২০, ২০ আগস্ট ২০১৯

বাংলাদেশের শুরুটা হলো বড় ব্যবধানে হেরে!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আগামী ৯-১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত হবে যুব (অ-২১) মহিলা এএইচএফ কাপ হকি প্রতিযোগিতা। এই আসরে অংশ নেবে বাংলাদেশ। গত ৮ জুলাই থেকে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন (বাহফে) দলগঠনের লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ ক্যাম্প শুরু করে। যাতে ডাক পেয়েছিলেন ৬১ খেলোয়াড়। পরে তা নেমে আসে ২৬ জনে। তাদের বয়সও বেশি নয়; ১৪ থেকে ১৯-এর মধ্যে। এখান থেকে আরও কিছুটা কাঁটছাঁট করা হবে। তারপরই দলটি পরিণত হবে বাংলাদেশের ইতিহাসের প্রথম জাতীয় নারী হকি দলে। দেশের বাইরে প্রথম এই টুর্নামেন্টে অংশ নেয়ার আগে ভারতের জাতীয় নারী হকি একাডেমি দলের সঙ্গে ছয়টি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশের নারীরা। স্পোর্টস অথরিটি অব ইন্ডিয়ার অধীনস্থ এই একাডেমি দলটি সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকায় আসে। ৬ ম্যাচের প্রস্তুতি সিরিজটি শুরু হয়েছে মঙ্গলবার থেকে। ঢাকার মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত প্রথম ম্যাচে বড় ব্যবধানে হেরে শুরু করেছে বাংলাদেশের মেয়েরা। তারা হেরেছে ৬-০ গোলে। ১৭ মিনিটে পেনাল্টি স্ট্রোক থেকে ভিনাম্রতা যাদব, ২৪ মিনিটে লালাওয়ান পুলি, ২৯ মিনিটে ভিনাম্রতা যাদব, ৩২ মিনিটে তানিয়া, ৪২ মিনিটে লতিয়া ম্যারি এবং ৪৬ মিনিটে লালরুয়াতফেলি গোলগুলো করেন। অনভিজ্ঞ এবং শারীরিক শক্তিতে ভারতের চেয়ে পিছিয়ে থাকা সাদিয়া খানমরা শেষ পর্যন্ত লড়াই করেছেন। শিষ্যদের এমন লড়াইয়ে সন্তুষ্ট সহকারী কোচ হেদায়েতুল ইসলাম রাজীব, ‘মেয়েদের পারফরম্যান্সে আমি খুশি। কয়েক মাস হয়েছে প্রস্তুতি নিয়েছে। হকিতে ছয় গোল হতেই পারে, এটা কোন ব্যাপার না। এটা মানতে হবে ভারতের একাডেমি নারী দল ফিজিক্যালি অনেক শক্তিশালী।’ সিঙ্গাপুরে আমরা যাদের বিপক্ষে খেলবো তাদের চেয়ে শক্তিশালী ভারতের একাডেমি নারী দল। এটা আমাদের জন্য একটা প্লাস পয়েন্ট।’ ম্যাচের শুরু থেকেই বাংলাদেশের মেয়েরা রক্ষণাত্নক ধাঁচে খেলে। এতে চড়াও হয়ে খেলার সুযোগ পায় সফরকারী দল। গোটা ম্যাচে তারা ১০টি পেনাল্টি কর্নার পেলেও তা থেকে গোল করতে পারেনি। এদিক দিয়ে দক্ষতার পরিচয় দেয় স্বাগতিক দলের রক্ষণভাগ। তবে এই রক্ষণের ভুল-দুর্বলতার কারণেই ফিল্ড গোলগুলো দিয়েছে ভারতীয় দলটি। তবে বাংলাদেশ দলের গোলরক্ষক সুমি অসাধারণ নৈপুণ্য প্রদর্শন করেন। তিনি প্রতিপক্ষ দলের নিশ্চিত গোটা সাতেক গোলপ্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেন। নইলে হারের ব্যবধানটা আরও বড় হতে পারতো। খেলার প্রথম কোয়ার্টারে কোন গোল হজম না করে প্রশংসা কুড়ায় বাংলাদেশ। তবে দ্বিতীয় কোয়ার্টারে গিয়ে ভেঙ্গে পড়ে তাদের রক্ষণদুর্গ। এই অর্ধে তারা হজম করে তিনটি গোল। তৃতীয় কোয়ার্টারে হজম করে আরও দুটি গোল। চতুর্থ ও শেষ কোয়ার্টারে এক গোল। ভারতীয় দলটি গোলের নেশায় এতটাই উন্মক্ত হয়ে উঠেছিলো যে, ম্যাচের শেষদিকে তারা তাদের গোলরক্ষক বানসারি সোলাঙ্কিকে বসিয়ে তার জায়গায় একজন ফরোয়ার্ডকে মাঠে নামায়! তবে এই হারে বাংলাদেশী হকি সমর্থকরা মোটেও মন খারাপ করছেন না। কারণ যেখানে বাংলাদেশের মেয়েরা গত জুন থেকে অনুশীলন করছে, সেখানে ভারতীয় দলটি একসঙ্গে অনুশীলন করছে বছর তিনেক ধরে! শুধু তাই নয়, তারা একাধিকবার বিভিন্ন দেশে গিয়ে ম্যাচও খেলেছে, সেখানে বাংলাদেশের মেয়েদের এখনও দেশের বাইরে গিয়ে খেলার অভিজ্ঞতা নেই। ফলে বেসিকে, স্কিলে, অভিজ্ঞতায়, ফিটনেসে ... সবদিক থেকেই তারা অনেক পিছিয়ে আছে ভারতীয় দলটির চেয়ে। প্রধান অতিথি হিসেবে প্রস্তুতি সিরিজের উদ্বোধন করেন যুব ও ক্রীড়া সচিব ড. জাফর উদ্দীন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের সহ-সভাপতি সাজেদ এএ আদেল। সিরিজের পরের ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে ২২, ২৩, ২৫, ২৬ ও ২৮ তারিখে। প্রথম তিন ম্যাচের পরই অ-২১ নারী হকি টুর্নামেন্টের জন্য চ‚ড়ান্ত দল ঘোষণা করবে বাহফে। তখন দলের খেলোয়াড়ের সংখ্যা কমে দাঁড়াবে ১৮-তে। উল্লেখ্য, ওমেন্স জুনিয়র (অ-২১) এএইচএফ কাপের ‘বি’ গ্রুপে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ হংকং চায়না, নেপাল ও শ্রীলঙ্কা। ‘এ’ গ্রুপে লড়বে চাইনিজ তাইপে, সিঙ্গাপুর এবং উজবেকিস্তান। টুর্নামেন্টের সেরা দুই দল নারীদের জুনিয়র এশিয়া কাপে খেলার সুযোগ পাবে।
×