ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ভারত ও প্যাসিফিকে যুক্তরাষ্ট্রকে টেক্কা দিতে পারে চীন

প্রকাশিত: ১১:৩৩, ২১ আগস্ট ২০১৯

ভারত ও প্যাসিফিকে যুক্তরাষ্ট্রকে টেক্কা দিতে পারে চীন

ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্র জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষা বুহ্যকে মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ভেঙ্গে দিতে পারে চীন। অস্ট্রেলিয়ার সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের যুক্তরাষ্ট্র বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্রের এক নয়া গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে। সিএনএন। গবেষণায় বলা হয়েছে, এশিয়ার বিভিন্ন জায়গায় মার্কিন সৈন্য মোতায়েন থাকলেও চীনের দ্রুত সামরিকায়নের কাছে তা যৎসামান্য। চীনের সামরিক ব্যবস্থা যুক্তরাষ্ট্রের এসব ঘাঁটি হটিয়ে দিতে মাত্র কয়েক ঘণ্টা সময় নিতে পারে। সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের যুক্তরাষ্ট্র বিষয়ক গবেষণা সতর্কতা জানিয়ে বলেছে, ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন প্রতিরক্ষা কৌশল নজিরবিহীন সঙ্কটে পড়তে পারে। এই অঞ্চলের মার্কিন মিত্ররা চীনের প্রতিরক্ষা কৌশলের কাছে পরাজিত হতে পারে। এ কারণে জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার মতো মার্কিন মিত্ররা তাদের সামরিক শক্তি বৃদ্ধি ও তাদের নিজস্ব নিরাপত্তা জোরদারে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়াতে পারে। এতে বেজিংয়ের ক্রমাগত সামরিক শক্তি বৃদ্ধি ও যুক্তরাষ্ট্রের এশীয় মিত্রদের সামরিক শক্তি নিয়ে একটি তুলনামূলক বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এখানে চীন, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে। চীন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাথমিক হামলা ও অন্যান্য পদক্ষেপ রুখে দিতে পরিকল্পনামাফিক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করেছে। এই ধরনের অন্তত কয়েক হাজার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করেছে বেজিং। অপরদিকে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পশ্চিমদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও তার প্রধান সহযোগী ও মিত্র দেশসমূহ যেসব প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে চীন তা মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই গুঁড়িয়ে দেয়ার ক্ষমতা রাখে। এই গবেষণা প্রতিবেদন বিষয়ে সোমবার চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে সিএনএন কর্তৃপক্ষ। চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানায়, তারা এই প্রতিবেদনটি এখনও দেখেনি। তবে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জেং সুয়াং বলেন, আমাদের সামরিক কৌশল অবশ্যই আত্মরক্ষামূলক। তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ উপায়ে দেশের উন্নয়নের পাশাপাশি আমরা নিজেদের প্রতিরক্ষা নীতিকে আরও আত্মরক্ষামূলক হিসেবে গড়ে তুলছি। পেন্টাগন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গবেষণা প্রতিবেদন নিয়ে ততটা বিস্ময় প্রকাশ করেনি। ২০১৮ সালে মার্কিন কংগ্রেসের জাতীয় প্রতিরক্ষা কৌশল কমিশনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, মার্কিন সৈন্যরা চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে অবর্ণনীয় ক্ষয়-ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। এই যুদ্ধে জয়লাভ অথবা পরাজয়ে অনেক মার্কিন সৈন্যর প্রাণহানি এবং হতাহতের শিকার হওয়া লাগতে পারে। এর ঠিক ছয় মাস পর মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের চীনা সামরিক বাহিনীর সক্ষমতা সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বেজিং বিশ্বের সবচেয়ে চৌকস সেনাবাহিনী তৈরির মাধ্যমে ভারত ও প্রশান্তমহাসাগরীয় অঞ্চলে একচ্ছত্র সামরিক শক্তিধর দেশে পরিণত হওয়ার অভিপ্রায় নিয়ে কাজ করছে। ২০১৫ সালে বেজিংয়ে অনুষ্ঠিত এক সামরিক কুচকাওয়াজে উন্নত ধরনের ডিএফ-২৬ ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শন করে। দুই হাজারের বেশি ও স্বল্প, মাঝারি ও মধ্যমপাল্লার এসব ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ভূমি ও সামুদ্রিক স্থাপনায় হামলা করতে সক্ষম। চীনের এই সামরিক অগ্রসর নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সতর্ক থাকা উচিত। এ বিষয়ে এখনই পদক্ষেপ না নিলে সেটি ওয়াশিংটনেরে কৌশলগত দুর্বলতাকে প্রকাশ করবে।
×