ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধান কোচ ও পেস বোলিং কোচ চার্ল ল্যাঙ্গাভেল্ট এখন ঢাকায়

বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে ডোমিঙ্গোর পথচলা শুরু

প্রকাশিত: ১২:১৯, ২১ আগস্ট ২০১৯

বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে ডোমিঙ্গোর পথচলা শুরু

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আগেই জানা ছিল, ২১ আগস্ট থেকে অর্থাৎ আজ থেকে নবনিযুক্ত প্রধান কোচ দক্ষিণ আফ্রিকার রাসেল ডোমিঙ্গো দায়িত্ব বুঝে নেবেন। বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে তার পথচলা শুরু হবে। তা হচ্ছেও। এ জন্য মঙ্গলবার বিকেলে ডোমিঙ্গো ঢাকায় এসে পড়েছেন। ডোমিঙ্গো আসার আগেই অবশ্য সকালে নতুন পেস বোলিং কোচ দক্ষিণ আফ্রিকান চার্ল ল্যাঙ্গাভেল্টও ঢাকা এসে পড়েন। আজ দুইজনই জাতীয় দলের কন্ডিশনিং ক্যাম্পে থাকবেন। মঙ্গলবার ঢাকায় এসে মাঠমুখী হননি ডোমিঙ্গো কিংবা ল্যাঙ্গাভেল্ট। তারা দুইজনই হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ঠিক করা স্থানে ওঠেন। দিনটিতে বিশ্রাম নেন। আজ দুইজনই আসবেন মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের বিসিবি কার্যালয়ে। স্বাভাবিকভাবেই এসে ক্রিকেটারদের পাবেন। কারণ চলছে কন্ডিশনিং ক্যাম্প। বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নিজামউদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে দেখাও করবেন। সকাল সাড়ে আটটা থেকে প্রতিদিন শুরু হচ্ছে কন্ডিশনিং ক্যাম্প। চলছে তিন ঘণ্টা। ডোমিঙ্গো ও ল্যাঙ্গাভেল্ট এসে ক্রিকেটারদেরই আগে পাবেন। ক্রিকেটারদের সঙ্গে পরিচিত পর্ব সারবেন। কুশল বিনিময়ও করবেন। এরপর সিইও’র সঙ্গে দেখা করবেন। বিসিবির পরিচালকরাও এদিন বিসিবি কার্যালয়ে থাকতে পারেন। তাদের সঙ্গেও ডোমিঙ্গো ও ল্যাঙ্গাভেল্টের দেখা হবে। এখনই এ দুই কোচের কাজ শুরু হচ্ছে না। আজকের পর আরও দুইদিন, শুক্রবার পর্যন্ত কন্ডিশনিং ক্যাম্প চলবে। এরপর শনিবার অথবা রবিবার থেকে স্কিল ট্রেনিং শুরু হবে। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং অনুশীলন শুরু হবে। তখন থেকেই মূলত ডোমিঙ্গো, ল্যাঙ্গাভেল্টদের কাজ শুরু হয়ে যাবে। এর আগে যে তিনদিন পাচ্ছেন নতুন কোচরা, ক্রিকেটারদের পরখ করে নেবেন। তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। বিশ্বকাপের পরই কোচদের বিদায় করে দিয়েছে বিসিবি। নৈপুণ্যে সন্তুষ্ট মিলেনি। তাই প্রধান কোচ ইংল্যান্ডের স্টিভ রোডস, পেস বোলিং কোচ ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি পেসার কোর্টনি ওয়ালশ, স্পিন বোলিং কোচ ভারতের সুনীল জোশীকে বিদায় করে দেয় বিসিবি। পেস বোলিং কোচ হিসেবে ল্যাঙ্গাভেল্টকে ও স্পিন বোলিং কোচ হিসেবে নিউজিল্যান্ডের ড্যানিয়েল ভেট্টরিকে নিয়োগ দেয় বিসিবি। এরপর প্রধান কোচ হিসেবে ডোমিঙ্গোকে চূড়ান্ত করা হয়। এবার যে কোচিং প্যানেল হয়েছে তাতে দক্ষিণ আফ্রিকানদেরই আধিক্য বেশি। প্রধান কোচ, পেস বোলিং কোচ, ব্যাটিং কোচ নিল ম্যাকেঞ্জি, ফিল্ডিং কোচ রায়ান কুক দক্ষিণ আফ্রিকান। শুধু স্পিন বোলিং কোচ, ট্রেইনার শ্রীলঙ্কার মারিও ভিল্লাভারায়েন দক্ষিণ আফ্রিকার বাইরে। বোঝাই যাচ্ছে এবার কোচদের একটা ভাল ইউনিটি তৈরি হয়ে যাবে। সেই ইউনিটি ক্রিকেটারদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়লে বাংলাদেশ ক্রিকেটেরই লাভ হবে। বাংলাদেশ ক্রিকেট দল আরও সাফল্যে ভাসবে। সেই সাফল্য পেতেই চান ডোমিঙ্গো। তিনি বাংলাদেশ দলকে ২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে শিরোপার দাবিদার করে তুলতে চান। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ দলকে বিশ্ব ক্রিকেটে পরাশক্তি হিসেবেও গড়ে তুলতে চান। ঢাকায় আসার আগেই কোচ নিয়োগ চূড়ান্ত হওয়ার পর ডোমিঙ্গো জানিয়ে দেন, ‘বাংলাদেশে এসে যত বড় দেশই হোক না কেন তারজন্য জেতা কঠিন। সামনে বিশ্বকাপ হবে ভারতে। বাংলাদেশেরও শিরোপার অন্যতম দাবিদার হওয়া উচিত। ভারতের পর উপমহাদেশে বাংলাদেশই সবচেয়ে বড় শক্তি।’ বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে পরাশক্তি হিসেবেও তৈরি করতে চান ডোমিঙ্গো। জানান, ‘সবকিছু খাপে খাপে মিলে গেলে বাংলাদেশ একদিন ক্রিকেটের সত্যিকারের পাওয়ার হাউস হয়ে উঠবে। আর এই বিষয়টাই আমাকে বেশ শিহরিত করে। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের কোচ হিসেবে নিয়োগ পাওয়া আমার জন্য অনেক বড় এক সম্মান। গভীর আগ্রহ নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটের অগ্রগতি অনুসরণ করেছি আমি এবং যে লক্ষ্য পূরণের সামর্থ্য তাদের আছে, সেটিতে সহায়তা করার সুযোগ পেয়ে আমি দারুণ রোমাঞ্চিত। দলের এখনকার ক্রিকেটারদের উন্নতির ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে সহায়তা করতে চাই আমি। পাশাপাশি বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রতিভার ভা ার থেকে নতুন উজ্জ্বল তারকাদের উন্নতির পথে এগিয়ে নিতে চাই।’ অনুর্ধ-১৫ থেকে শুরু করে একটা জাতীয় দলের সব পর্যায়ের ক্রিকেটে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে ডোমিঙ্গোর। তার আশা সবগুলো শাখা-প্রশাখায় একটা সংযোগ ঘটাতে পারবেন। জাতীয় দল অবশ্যই অগ্রাধিকারে থাকবে। তবে এর নিচের দলগুলোতে কি হচ্ছে সেদিকেও নজর রাখবেন ডোমিঙ্গো। কারণ এই দলগুলো থেকেই ভবিষ্যতের খেলোয়াড়রা উঠে আসবে। কোথায় জাত খেলোয়াড়দের খুঁজে পাওয়া যাবে সেটা বুঝে উঠে, সেদিকেও মনোযোগ দিতে চান ডোমিঙ্গো। ডোমিঙ্গোর তত্ত্বাবধানে ২০১৪ সালের টি২০ বিশ্বকাপ ও ২০১৫ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলে দক্ষিণ আফ্রিকা। ডোমিঙ্গোর খুব ভাল করেই জানা আছে, কিভাবে বৈশ্বিক আসরে ভাল করতে হয়। ডোমিঙ্গোর মূল কাজ আসলে শুরু হবে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া একমাত্র টেস্ট দিয়ে। এরপর ত্রিদেশীয় টি২০ সিরিজ হবে। প্রথম এ্যাসাইনমেন্টেই ছোট্ট দল মিলেছে। কিন্তু ক্রিকেটারদের নৈপুণ্য ও খেলার মানসিকতাই বুঝিয়ে দেবে কিভাবে পথ এগিয়ে যেতে চান ডোমিঙ্গো। সেই পথচলা আজ শুরু হচ্ছে।
×