ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মৃত্যু ভয়ে আমি কখনই ভীত ছিলাম না, এখনও নই;###;আল্লাহ যতদিন বাঁচিয়ে রাখবেন দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাব

খালেদার মদদ ছিল ॥ গ্রেনেড হামলার বার্ষিকীতে আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১০:৫০, ২২ আগস্ট ২০১৯

খালেদার মদদ ছিল ॥ গ্রেনেড হামলার বার্ষিকীতে আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ভয়াল ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার জন্য তৎকালীন ক্ষমতাসীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারকে আবারও দায়ী করে বলেছেন, প্রকাশ্য দিবালোকে তৎকালীন ক্ষমতাসীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের প্রত্যক্ষ মদদ ছাড়া ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা সম্ভব হতে পারে না। এটা আজ প্রমাণিত সত্য। ওই হামলায় আমার বেঁচে থাকার কথা নয়। শুধু এটুকুই বলব, আমি বেঁচে আছি। মৃত্যুকে ভয় করি না, মৃত্যু ভয়ে আমি কখনই ভীত ছিলাম না, এখনও নই। আল্লাহ যতদিন বাঁচিয়ে রাখবেন যতদিন দেহে প্রাণ আছে, ততদিন দেশের মানুষের কল্যাণে, দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাব। জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ে তুলব। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা খালেদা জিয়া ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার দায় কখনই এড়াতে পারেন না দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় খালেদা জিয়াকে আসামি করা হয়নি, কিন্তু এ হামলায় তার সহযোগিতা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন, তাই এই হামলার দায়-দায়িত্ব তিনি (খালেদা জিয়া) এড়াতে পারেন না। বোধ হয় খালেদা জিয়া ওই হামলার সময় শোকবার্তা তৈরি করেই রেখেছিলেন যে, আমি মরলে পরে একটা কন্ডোলেন্স (শোকবার্তা) জানাবেন। সেটাও নাকি তার প্রস্তুত করা ছিল। কিন্তু আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন, সেটাই বড় কথা। আর অনেক পরে মামলা করে আমরা একটা রায় পেয়েছি। হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্সের আপীলের শুনানির জন্য পেপারবুক তৈরি হচ্ছে। আশা করি, আমরা বিচার পাব। কিন্তু যাদের আমরা হারিয়েছি তাদের তো আর ফিরে পাব না। ভয়াল-বীভৎস ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ১৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, সভাপতিম-লীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম। আলোচনায় আরও অংশ নেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, এ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য এস এম কামাল হোসেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী আবুল হাসনাত ও ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান। তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলামের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় সূচনা বক্তব্য রাখেন দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। একুশ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আমার বেঁচে থাকার কথা নয়। ওরা (বিএনপি-জামায়াত জোট) ভাবেনি যে বেঁচে থাকব। অনেক ছোট ছোট ঘটনা আমি জানি। যারা হামলা করেছে তারা এক জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে। সেখান থেকে ফোন করেছে যে, আমি মারা গেছি কী না। সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, হামলার পর আপনারা অনেক তথ্য বের করেছেন। এই তথ্যটা বের করুন, খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান ধানম-ির ৫ নম্বরে তার যে শ্বশুরবাড়িতে এসে ১০ মাস থাকল। কিন্তু পহেলা আগস্ট চলে গেল ক্যান্টনমেন্টের বাসায়। ওই ১০ মাস ওই বাড়িতে বসে সে কী করল? তার কাজটা কি ছিল? তিনি বলেন, গ্রেনেড হামলায় অজ্ঞাতনামা দুজন যে মারা গেল তাদের খবর কেউ নেয়নি, লাশও কেউ নেয়নি। এখন আস্তে আস্তে সবই বের হচ্ছে। কীভাবে এই হামলাকে ভিন্ন খাতে নিতে ওই জজ মিয়ার নাটক করেছে। একজন সাধারণ মানুষকে ধরে এনে নির্যাতন করে স্বীকারোক্তি নেয়া হয়েছিল। ২০০৪ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের মেয়াদে নৃশংস গ্রেনেড হামলার ঘটনায় তৎকালীন সরকারের জড়িতের বিষয়ে বিভিন্ন যোগসূত্রতা যুক্তিসহকারে তুলে ধরেন তৎকালীন হামলার স্বীকার হওয়া বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এই হামলা যে সরকারের পক্ষ থেকে করা, তা আজ প্রমাণিত। ওই হামলার পর সমস্ত আলামত মুছে ফেলতে এই ঘটনার পরের দিন সিটি কর্পোরেশনের গাড়ি এনে ওই এলাকাটা ধোয়া শুরু। আমি নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেই, সরকার সব আলামত মুছে ফেলছে, আলামত যেন রক্ষা হয় তার ব্যবস্থা করো। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ছুটে আসে, যুবলীগের নেতাকর্মীরা ছুটে আসে। যেটুকুও রয়েছে সেই আলামত রক্ষা করার চেষ্টা করে। দলীয় প্রচেষ্টায় আলামত রক্ষা করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরাই (আওয়ামী লীগ) আলামত রক্ষা করার চেষ্টা করি, কিন্তু সেখানে সরকারের পক্ষ থেকে কোন তৎপরতা ছিল না। মারণাস্ত্র গ্রেনেড যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়, সেটি ব্যবহার করা হলো আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে। যেখানে এত বড় একটা হামলা হলো, কিন্তু সরকার থেকে এই ঘটনার যেন কোন আলামত না থাকে, সেই চেষ্টাটাই কিন্তু করা করেছিল। তিনি বলেন, জনমতের চাপে হাইকোর্টের বিচারপতি জয়নুল আবেদীনকে দিয়ে একটা তদন্ত কমিটি করা হয়। সেই তদন্ত কমিটির যে রিপোর্ট তা তো তাদের (সরকার) ফরমায়েশি রিপোর্ট। সেখানে একটা সাধারণ মানুষ ধরে নিয়ে এসে তাকে (জজ মিয়া) আসামি করা হয়। সে নাকি এই আক্রমণটার ব্যবস্থা করেছিল, সেই নাকি এই ষড়যন্ত্রের হোতা! তখন এই জজ মিয়া নাটক সাজানো হয়। আস্তে আস্তে সব সত্য ঘটনাই বের হয়েছে। কীভাবে এই জজ মিয়াকে নিয়ে আসে, কীভাবে তার ওপর টর্চার করে তাকে দিয়ে স্বীকার করায়। প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রেখে বলেন, যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহারের গ্রেনেডগুলো কোথায় থেকে এলো? এখানে বিএনপি-জামায়াত সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া এই ধরনের ঘটনা কোনদিন ঘটানো সম্ভব নয়। এটা আজ প্রমাণিত সত্য এবং যার এতদিন পরে মামলা করে একটা রায়ও পেয়েছি। এখন এটা উচ্চ আদালতে ডেথ রেফারেন্সে যাবে। আমি আশা করি, এর বিচার হবে। বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগের বহু নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মীর জীবনদানের কথাও এ সময় তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আল্লাহর মাইর, দুনিয়ার বাইর’ বলে একটা কথা আছে। মানুষে বোঝে না আল্লাহর শক্তি কত? আমাদের ওপর প্রতিটা আক্রমণের আগে খালেদা জিয়া বলত, আমি (শেখ হাসিনা) প্রধানমন্ত্রী হওয়া তো দূরের কথা, কোনদিন বিরোধী দলের নেতাও হতে পারব না। কিন্তু যে অভিশাপ তিনি (খালেদা জিয়া) আমাকে দিয়েছিল, সেটা তার কপালেই জুটে গেছে। এটিই হলো বাস্তবতা। আর এ হামলার দায়-দায়িত্বও খালেদা জিয়া এড়াতে পারেন না। আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতে বার বার আক্রমণের কথা তুলে ধরে দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে তারা হত্যা করেছে। পঙ্গু করেছে। অত্যাচার করেছে। চোখ তুলেছে। পা কেটে দিয়েছে। কত পরিবারকে ধ্বংস করেছে। ঠিক হানাদার পাকিস্তানী বাহিনী একাত্তরে আমাদের ওপর যেভাবে আক্রমণ করেছে, হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে ঠিক তেমনিভাবে বিএনপি অত্যাচার-নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। তিনি বলেন, এসব হত্যাকা- জিয়াউর রহমান শুরু করেছিল। এরশাদও সেই একই পদাঙ্ক অনুসরণ করেছে। খালেদা জিয়াও সেই একই পদাঙ্ক অনুসরণ করেছে। তাদের একটাই উদ্দেশ্য, আওয়ামী লীগ যেন কখনও ক্ষমতায় আসতে না পারে। তাহলেই বাংলাদেশটাকে ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে তারা প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে। ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা নিজেরা করে তা আওয়ামী লীগের ঘাড়ে চাপাতে তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের নানা প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওই হামলার পর কোনভাবে বাসায় পৌঁছেই আমি সবার খোঁজ নেয়া শুরু করলাম। কিন্তু ওই সময় সরকারের পক্ষ থেকে আহতদের উদ্ধার করতে কাউকে আসতে দেয়া হয়নি। উদ্ধার না করে বরং হামলাকারীরা যেন নির্বিঘেœ পালিয়ে যেতে পারে সেজন্য আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর লাঠিচার্জ ও টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করা হয়। আহতদের যেন চিকিৎসা না হয় সেজন্য ঢাকা মেডিক্যালে বিএনপিপন্থী চিকিৎসকরা হাসপাতাল থেকে চলে গিয়েছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (তৎকালীন পিজি হাসপাতাল) আহতদের ভর্তি করা হয়নি। তিনি বলেন, আমাদের যারা সমর্থক সেসব চিকিৎসকই সেদিন কাজ করেছে, আমাদের লোকজন রক্ত দিয়েছে। আমি চেষ্টা করেছি, সারা ঢাকা শহরের হাসপাতালের খোঁজ নিয়েছি। আমি খুঁজে খুঁজে এনে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি, পরে বিদেশে পাঠিয়েছি। তিনি বলেন, এই হামলা নিয়ে ওই সময় সংসদে আমাদের কথা পর্যন্ত বলতে দেয়া হয়নি। বরং সে সময় সরকারের পক্ষ থেকে বলা হলো, শেখ হাসিনা হ্যান্ডব্যাগে গ্রেনেড এনে নিজে মেরেছে! খালেদা জিয়াসহ বিএনপি সব নেতার যেন এক সুর। আমরা সুইসাইড করতে যেন সেখানে গিয়েছিলাম! এত গ্রেনেড হাতে করে নিয়ে যাওয়া সোজা কথা নয়। আর আমি গ্রেনেড চালানোর এক্সপার্ট হলাম কবে? ওরা কী না পারে। মিথ্যা অপবাদ ছড়িয়ে দিল। কিন্তু পরে সব সত্যই বেরিয়ে এসেছে। নিজের জীবনের সংগ্রামের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, যেদিন থেকে রাজনীতিতে পা দিয়েছি সেদিন থেকে বারবার মৃত্যুর সামনাসামনি হয়েছি। যেদিন থেকে বিভিন্ন জায়গায় যাওয়া শুরু করেছি সেদিন থেকে বারবার বাধাগ্রস্ত হয়েছি। আর এই বাধা প্রতিহত করতে গিয়ে আমার নেতাকর্মীরা প্রাণ দিয়েছে। তিনি বলেন, আগস্ট মাস এলেই যেন অশনি সংকেত নিয়ে আসে। বারবার হামলা হয়েছে। বারবার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আমাকে ঢাল হিসেবে রক্ষা করেছে। তবে কখনও জীবনের মায়া করিনি, মৃত্যুকে পরোয়া করিনি, যতক্ষণ দেহে প্রাণ আছে দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাব, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পথ ধরেই তার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ে তুলব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা কেন সেদিন র‌্যালি করতে গিয়েছিলাম। সিলেটে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের ওপর হযরত শাহজালালের দরগায় গ্রেনেড হামলা হয়। আর সেই সময় গোপালগঞ্জে আমাদের ছাত্রলীগের এক নেতাকে গুলি করে হত্যা করা হয় এবং এরকম অগণিত নেতাকর্মীর ওপর প্রতিনিয়ত হামলা হয়, আর তাদের হত্যা করা হয়। এসব সন্ত্রাসী হামলার বিরুদ্ধে এবং ওই গ্রেনেড হামলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আমরা শান্তির মিছিল করতে চেয়েছিলাম এবং একটি র‌্যালি করতে চেয়েছিলাম। তিনি বলেন, আমরা যে জায়গায় মিছিলটা করতে চেয়েছিলাম সে জায়গায় আমাদের অনুমতি দেয়নি। পরে মাইকিং করে আমারা আওয়ামী লীগ অফিসের সামনেই ব্যবস্থা নেই। এরপর ২০ আগস্ট রাত ১২টার দিকে একটা অনুমতির চিঠি পাঠানো হয় আওয়ামী লীগ অফিসে। সেই চিঠিটা তখন কে খুলবে আর কে দেখবে আর কে ব্যবস্থা নেবে? এটা ছিল তাদের একটা চাল। পরে আমরা যেখানে ব্যবস্থা নিয়েছিলাম সেখানেই সমাবেশ করেছি। আমাদের ভলান্টিয়ার এবং নেতাকর্মীদের সেদিন কাউকে পাশের ছাদে উঠতে দেয়নি। সেদিন কোন পুলিশও আমাদের নেতাকর্মীদের সমাবেশে যেতে বাধা দেয়নি। আর এসবই ছিল সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী। বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের সঙ্গে জিয়াউর রহমান জড়িত উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, অবৈধভাবে নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে খুনী মোশতাক প্রথমেই জিয়াকে সেনাপ্রধান করে। জিয়া ষড়যন্ত্রে লিপ্ত না থাকলে তাকে সেনাপ্রধান কখনই করত না খুনী মোশতাক। বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ে জিয়া ছিল মুশতাকের বিশ্বস্ত সহযোগী। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ২৯ বছর ক্ষমতায় যারা ছিলেন তারা কেন দেশের উন্নয়ন করতে পারেনি? একমাত্র যারা স্বাধীনতার নেতৃত্ব দেয়, সেই শক্তি ক্ষমতায় থাকলেই যে দেশের উন্নয়ন হয়, মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয় আমরা তা প্রমাণ করেছি। আবেগজড়িত কণ্ঠে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কারোর কাছে মাথা নত করি না। মৃত্যু যখনতখন আসতেই পারে। কিন্তু মৃত্যু যতক্ষণ না আসবে, আল্লাহ যতদিন বেঁচে রাখবেন, ততদিন দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে কাজ করে যাব। জাতির পিতার মতোই আত্মত্যাগ করে দেশকে সবদিক থেকে এগিয়ে নিয়ে যাব। অক্লান্ত পরিশ্রম করার কারণেই বাংলাদেশ আজ একটি জায়গায় উঠে এসেছে। স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ সারাবিশ্বে অনেক উচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত হবে, দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ করা, দেশের মানুষের মৌলিক অধিকার পূরণ করা, সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত স্বপ্নের সোনার বাংলা আমরা গড়ে তুলবই।
×