স্টাফ রিপোর্টার ॥ আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, উচ্চ আদালতে জেল আবেদন ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানির জন্য সুপ্রীমকোর্ট কর্তৃপক্ষ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার পেপারবুক প্রস্তুত করছে। দুই থেকে চার মাসের মধ্যে এটা প্রস্তুত হবে। মৃত্যুদ-াদেশ কার্যকর করতে উচ্চ আদালতে ডেথ রেফারেন্সের ওপর শুনানির প্রয়োজন। ডেথ রেফারেন্সের ওপর শুনানির আগে পেপার বুকের প্রয়োজন এবং এটি প্রস্তুত হচ্ছে। দুই থেকে চার মাসের মধ্যে কাজটি সম্পন্ন হবে। এরপর মামলাটি শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত হবে। বুধবার সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী একথা বলেন। আনিসুল হক আরও বলেন, সরকার তারেক রহমানসহ ২০০৪ সালের বর্বরোচিত ওই হামলার ঘটনায় দুটি মামলার পলাতক সকল আসামিকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমি আশা করি, সকল বাধাবিপত্তি অতিক্রম করে সম্ভাব্য অল্প সময়ের মধ্যেই সকল পলাতক আসামিকে বিচারের আওতায় আনা সম্ভব হবে।
মামলার রায় পরবর্তী কার্যক্রমের অগ্রগতি সম্পর্কে তিনি বলেন, বিচারিক আদালত যদি কাউকে ফাঁসি দেয় তাহলে ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭০ ধারা অনুযায়ী সেই মামলা ডেথ রেফারেন্স হিসেবে হাইকোর্ট ডিভিশনে চলে যায়। ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা ও হত্যা মামলার রায়ে কিছু লোকের ফাঁসি হয়েছে, কিছু আসামির যাবজ্জীবন হয়েছে। ফাঁসি হওয়ার কারণে তা ডেথ রেফারেন্স হিসেবে হাইকোর্ট বিভাগে চলে গেছে। যারা যাবজ্জীবন পেয়েছেন তারাও হাইকোর্ট বিভাগে আপীল করেছেন। হাইকোর্ট বিভাগের নিয়ম হচ্ছে, ডেথ রেফারেন্স ও যাবজ্জীবন সাজাটাকে একসঙ্গে ট্যাগ করে শুনানি করা। সেই ক্ষেত্রে কিছু ফরমালিটিজ আছে যা সম্পন্ন করতে হয়। এক্ষেত্রে যাদের ফাঁসি হয়েছে তাদের পেপারবুক সরকারের তৈরি করে দিতে হয় বিজি প্রেসের মাধ্যমে। এই পেপারবুকের মধ্যে মামলার যাবতীয় কাগজপত্র থাকে। এটা তৈরি করে মামলাটি শুনানির জন্য প্রস্তুত হয় এবং শুনানি হয়। তিনি বলেন, আমি এটুকু বলতে পারি, এই মামলার পেপার বুক তৈরি হওয়ার জন্য যে আনুষঙ্গিক কার্যক্রম সেটা শুরু হয়ে গেছে। যেমন কাগজপত্র আসার পর সেটা সটিং করতে হয়, তারপর এটা বিজি প্রেসে চলে যায়। আমি এটুকু বলতে পারি, এ কাজ শুরু হয়ে গেছে। আমরা প্রসিকিউশন থেকে দেখব এই পেপারবুক তৈরির কাজটা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এটা যেন হয়।
এই মামলার মোট সাক্ষী ২২৫ জন, ফলে এই মামলার পেপারবুক অনেক বড় হবে। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত মামলাটির শুনানি শুরু করার। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারেক রহমানসহ সাজাপ্রাপ্ত সকল পলাতক আসামিকে ফিরিয়ে আনতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। তবে এ পথে কিছুটা জটিলতা ছিল, আজও আছে, সেটাও সমাধানের চেষ্টা করছি। আমরা আশা করি, পলাতক আসামিদেরকে ফিরিয়ে এনে এই রায় কার্যকর করা আমাদের পক্ষে সম্ভব। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় জীবন হারানো সকলের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে তিনি বলেন, যারা তাদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে, যারা বাংলাদেশকে দ্বিতীয়বারের মতো হত্যা করতে চেয়েছিল তাদেরকে সাজা দেয়ার ব্যাপারে আদালতকে সহযোগিতা করা আমাদের দায়িত্ব। এই বিচার শেষ করার দায়িত্ব আমাদের। আমরা সেই দায়িত্ব পালন করব।
সামছুল হক ভূঁইয়ার মৃত্যুতে আইনমন্ত্রীর শোক ॥ ব্রাহ্মণ-বাড়িয়ার জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি আলহাজ সামছুল হক ভূঁইয়ার মৃত্যুতে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।