ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

কাশ্মীর কোন্ পথে

প্রকাশিত: ১১:৩৪, ২২ আগস্ট ২০১৯

কাশ্মীর কোন্ পথে

॥ দশ ॥ কাশ্মীরীদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার, এমনকি কাশ্মীরের স্বাধীনতার প্রতি সহানুভূতিশীল ব্যক্তি শুধু কাশ্মীরে নয়, ভারতেও প্রচুর রয়েছেন। এদের ভেতর সর্বভারতীয় পর্যায়ে পরিচিত ব্যক্তির সংখ্যাও কম নয়। কিন্তু একটি জায়গায় এসে এই সহানুভূতিশীলদের থমকে দাঁড়াতে হয়। কাশ্মীরের স্বাধীনতার লক্ষ্য কি বিশ্বের মানচিত্রে আরেকটি তালেবানকবলিত আফগানিস্তান প্রতিষ্ঠা করা? জম্মু থেকে দিল্লী ফিরে কথা বলেছি বিশিষ্ট কাশ্মীরী গবেষক, ‘ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর পীস স্টাডিজ’-এর সভাপতি অধ্যাপক রিয়াজ পাঞ্জাবীর সঙ্গে। ’৯০-এর পর কাশ্মীরে মৌলবাদীদের যে জঙ্গী তৎপরতা শুরু হয়েছে তার অন্যতম বলি এই অধ্যাপক, যাঁকে মন্ত্রীর পদমর্যাদায় ‘রিজিওনাল অটোনমি ইমপ্লেমেন্টেশন কমিটির’ চেয়ারম্যান নিযুক্ত করেছিল ডাঃ ফারুখ আবদুল্লাহর সরকার। কাশ্মীরের ওপর প্রচুর লিখেছেন তিনি। এ বিষয়ে বহু আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন। অধ্যাপক রিয়াজ বলেছেন, ‘সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ায় কাশ্মীর হচ্ছে অসাম্প্রদায়িক বহুত্ববাদী সমাজের এক অনন্য সাধারণ দৃষ্টান্ত। কাশ্মীরের জনসংখ্যার বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম হওয়া সত্ত্বেও বহুকাল ধরে কাশ্মীর শাসিত হয়েছে হিন্দু ও শিখদের দ্বারা। চরিত্রগতভাবে কাশ্মীরীরা নিরীহ ও শান্তিপ্রিয়। ডোগরা রাজাদের সময় ধর্মীয় নিবর্তনমূলক দুটো কর ছিল। একটি মহারাজার মন্দিরের জন্য কর, অপরটি অন্য সব মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণ কর। মন্দির নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য হিন্দু মহারাজারা মুসলমানদের কাছ থেকে কর আদায় করেছেন, তারপরও মুসলমানরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার জন্য মহারাজার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেনি। ১৯৪৭-এর আগে কাশ্মীরের ভূমি ব্যবস্থা ছিল ষোলআনা সামন্ততান্ত্রিক। প্রায় সব জমিই ছিল মহারাজা, তার আমত্য ও অনুগতদের দখলে। ‘চল্লিশের দশকের শুরু থেকেই ন্যাশনাল কনফারেন্সের প্রতিষ্ঠাতা শেখ আবদুল্লাহ সামন্ততান্ত্রিক ভূমি ব্যবস্থার অবসান এবং গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তনের জন্য মহারাজা হরি সিং-এর বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেছিলেন। ১৯৪৭-এ কাশ্মীরের ভারতভুক্তির সঙ্গে সঙ্গে রাজতন্ত্রেরও অবসান ঘটে। শেখ আবদুল্লাহ প্রধানমন্ত্রী হয়ে প্রথমেই ভূমি সংস্কার করলেন। গোটা উপমহাদেশের ভেতর কাশ্মীরেই প্রথম ভূমিহীন ও বর্গাদারদের জমির মালিকে পরিণত করা হয়েছে। শেখ আবদুল্লাহর এই বৈপ্লবিক ভূমি সংস্কার যৌক্তিক কারণেই পাকিস্তানের সামন্ত প্রভুদের উদ্বিগ্ন করেছিল। তাই শুরু থেকেই পাকিস্তান কাশ্মীরের প্রগতিশীল সমাজ ও সরকারকে ধ্বংস করে কাশ্মীর গ্রাস করতে চেয়েছে। কাশ্মীরের সমস্যা সম্পর্কে বলতে গিয়ে রিয়াজ পাঞ্জাবী এর জন্য পাকিস্তানকেই দায়ী করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘কাশ্মীরে উন্নয়নের অনেক সমস্যা রয়েছে। আমাদের কাশ্মীরে আগে ঘর বানানো হতো পাথর, কাঠ আর কাদা নিয়ে এখন সেখানে কংক্রিটের ঘরবাড়ি হচ্ছে, বিদ্যুতের চাহিদা অনেকে বেড়ে গেছে, যা মেটানো রাজ্য সরকারের পক্ষে সম্ভবও নয়। পাকিস্তান এসবের সুযোগ নিয়েছে। যদিও তাদের নিজেদের দেশেই এসব সমস্যা আরও ব্যাপক আকারে রয়েছে, কিন্তু তারা কাশ্মীরের যুব সম্প্রদায়ের হতাশা ও ক্ষোভের সুযোগে তাদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে। ‘আমি মনে করি, একটি গণতান্ত্রিক কাঠামোর ভেতর নির্বাচনের ভেতর দিয়ে এবং আলোচনার মাধ্যমে আমরা বিরাজমান সমস্যার সমাধান করতে পারি। হুরিয়াতের নেতাদের সঙ্গেও আলোচনা করা উচিত। শুধু হুরিয়াত কেন কাশ্মীরের হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও বিভিন্ন উপজাতিদের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও আলোচনা করা উচিত। সমাধানে আসবে আলোচনার টেবিল থাকে, বন্দুকের নল থেকে নয়। হুরিয়াতের নেতাদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় শামিল হতে হবে। নির্বাচনে অংশ নিতে হবে। তাহলেই বোঝা যাবে তাদের দাবির প্রতি জনসমর্থন কতটুকু। প্রফেসর রিয়াজকে নির্বাচনে কারচুপি সম্পর্কে হুরিয়াত নেতাদের নেতিবাচক অভিজ্ঞতার কথা বলেছিলাম। তিনি বলেছেন, ‘নির্বাচনে কতটুকু কারচুপি হয়েছে বা আদৌ হয়েছে কি-না সে আলোচনায় আমি যাব না। অতীতে নির্বাচন হয়েছে, হুরিয়াত নেতারা সেখানে অংশ নিয়েছেন এবং জয়ীও হয়েছেন। এরকম পাঁচজন শীর্ষস্থানীয় হুরিয়াত নেতার নাম আমি বলতে পারি যারা বছরের পর বছর স্টেট এ্যাসেম্বলিতে ছিলেন, আপনি তাদের সঙ্গে কথাও বলেছেন। তারা কারচুপির প্রশ্নে বিশেষভাবে বলতে চান ’৮৭-র নির্বাচনের কথা। নির্বাচনে কারচুপি হয়নি এটা আমি বলব না। কথা হচ্ছে কারচুপি কি শুধু জম্মু-কাশ্মীরে হয়েছে, ভারতের অন্য জায়গায় হয়নি? নির্বাচনে কারচুপি, বুথ দখল এসব অভিযোগ বিহারে শোনা গেছে, পশ্চিমবঙ্গে শোনা গেছে, আরও অনেক জায়গায়ই হয়েছে। শুধু অভিযোগ নয়, ঘটনাও ঘটেছে। কিন্তু এসবের প্রতিকারের জন্য আইনানুগ ব্যবস্থাও রয়েছে। নির্বাচন কমিশন এখানে যথেষ্ট শক্তিশালী। আপনারা নিশ্চয় দেখেছেন মহারাষ্ট্রে বালঠাকুরের মতো ক্ষমতাবান নেতার বিরুদ্ধেও নির্বাচন কমিশন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে একটি বক্তৃতার জন্য, যেখানে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছিল। দেখুন, ইতিহাস এটা প্রমাণ করেছে জঙ্গলের আইনের চেয়ে গণতন্ত্রের ভান অনেক ভাল। হুরিয়াত কনফারেন্সের অধিকাংশ নেতা আইনজীবী। তারা নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ নিয়ে আদালতে কেন যাননি? ‘হুরিয়াতের নেতাদের এটা উপলব্ধি করতেই হবে তারা কিভাবে ব্যবহৃত হচ্ছেন অন্য একটি দেশের দ্বারা। হুরিয়াতের নেতারা জিহাদের কথা বলছেন। কেউ বলছেন গণতন্ত্র হচ্ছে ইসলামবিরোধী, কেউ বলছেন মানবাধিকার হচ্ছে ইসলামবিরোধী। পাকিস্তানের এবং তাদের এজেন্টদের উদ্দেশ্য হচ্ছে বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা সৃষ্টি করা। এতে লাভ কী হয়েছে? তিরিশ/চল্লিশ হাজার নিরীহ মানুষকে জীবন দিতে হয়েছে। হাজার হাজার পরিবারকে এর জন্য ভুগতে হয়েছে। তথাকথিত জিহাদ কাশ্মীরকে মৃত্যু, ধ্বংস, দারিদ্র্য ও হতাশা ছাড়া আর কিছুই দেয়নি। ‘আপনি তো জম্মুর শরণার্থী শিবিরে হিন্দু প-িতদের দেখেছেন। লাখ লাখ মানুষকে এখনও কী অপরিসীম দুঃখ ও যন্ত্রণার ভেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে। অথচ এরা কাশ্মীরী সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ।’ সমস্যার সমাধান সম্পর্কে অধ্যাপক রিয়াজ বলেছিলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি সম্পর্কে পাকিস্তান ও ভারতসহ সবাইকে ভাবতে হবে। কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে তিনটি যুদ্ধ হয়ে গেছে। কাশ্মীর সমস্যার সমাধান না হলে এ যুদ্ধ চলতে থাকবে। পাকিস্তান ও ভারতকে দক্ষিণ এশিয়ার বহুত্ববাদী সমাজকে মেনে নিতে হবে। কারণ বহুত্ববাদ হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার সভ্যতার প্রধান ভিত্তি। বহুত্ববাদের ভেতর নিশ্চয়তা রয়েছে বিচিত্র ধরনের নৃতাত্ত্বিক ও ভিন্নসত্তাসমূহের স্বীকৃতি, যা কি-না মানব সভ্যতার বিকাশের জন্য অপরিহার্য। আমি মনে করি নেহরুর একত্ববাদী ভারতের মডেল কিংবা পাকিস্তানের ধর্মভিত্তিক মডেল বিগত দশকগুলোতে উপমহাদেশের সাধারণ মানুষের দুঃখ দুর্দশা ও দারিদ্র্য দূর করতে পারেনি। একটি প্রকৃত ফেডারেল-গণতান্ত্রিক কাঠামো যেখানে বহুত্ববাদের স্বীকৃতি থাকবেÑ এই উপমহাদেশের বিরাজমান সমস্যার সমাধান দিতে পারে।’ কাশ্মীরে জঙ্গীদের নির্যাতন ও নিষ্ঠুরতার বিবরণ দিতে গিয়ে প্রফেসর রিয়াজ ইংরেজীতে যে শব্দগুচ্ছটি ব্যবহার করেছিলেন সেটি হচ্ছেÑ ‘দে ওয়ান্টেড সাইলেন্স অব দ্য ল্যাম্ব ইন দ্য কাশ্মীর ভ্যালী।’ ‘সাইলেন্স অব দ্য ল্যাম্ব’ একটি বিখ্যাত ইংরেজী ছবির নাম। কাশ্মীরে জঙ্গীরা প্রতিবাদ বরদাশত করে না। তারা বলে কাশ্মীরে থাকতে হলে বিনা প্রতিবাদে তাদের কথা মেনে নিতে হবে। মৌলবাদের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তাদের বিশ্বাস অন্যদের উপর প্রয়োজন হলে শক্তি প্রয়োগ করে চাপিয়ে দেয়া। বিশেষ কোন ধর্মের প্রতি তাদের কোনও দুর্বলতা নেই। যে কারণে কাশ্মীরে মুসলিম মৌলবাদীদের দ্বারা নিহতদের তালিকায় বিপুলসংখ্যক হচ্ছে মুসলমান। অধ্যাপক রিয়াজ পাঞ্জাবী শ্রীনগরের এক সম্ভ্রান্ত মুসলমান পরিবারের সন্তান। তিনি ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেছেন, ‘আমি কোন রাজনৈতিক দল করি না। সব সময় জ্ঞানের চর্চা করেছি। গবেষণা করেছি ইতিহাস নিয়ে, আইন নিয়ে। কিন্তু তারা যখন বাড়াবাড়ি শুরু করেছে আমি তার প্রতিবাদ করা কর্তব্য বিবেচনা করেছি। এই প্রতিবাদের জন্যই আমাকে শ্রীনগর ছাড়তে হয়েছে। আমার পরিবার, আমার জীবিকার স্থল সবই ছেড়ে আসতে হয়েছে। আমার পিতার মৃত্যু সংবাদ পেয়ে আমি যেতে পারিনি। তাঁর জানাজা পড়তে পারিনি, নিজের হাতে তাঁকে দাফন করতে পারিনি। কাশ্মীরে থাকতে হলে আমাকে ভেড়ার মতো চুপচাপ সব মেনে নিতে হতো। আমি সেই জীবন চাইনি, তাই চলে এসেছি। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্যসাধারণ স্থান কাশ্মীরে মৌলবাদ কিভাবে দানা বেঁধেছে এ বিষয়ে অধ্যাপক রিয়াজ অনেক লিখেছেন। তিনি কাশ্মীরী জাতীয়তাবাদে বিশ্বাস করেন না, তবে কাশ্মীরী সমাজে বিশ্বাস করেন যাকে বলা হয় ‘কাশ্মীরীয়াৎ’। তিনি বলেন কাশ্মীরী ‘উপ জাতীয়তাবাদ’ (সাব ন্যাশনালিজম)। তাঁর মতে, কাশ্মীরের সাব ন্যাশনালিজমের যে চেতনা ’৪৭-এ উপমহাদেশে ধর্মীয় দ্বিজাতিত্ত্বকে নাকচ করে দিয়েছিল সে চেতনা ঔপনিবেশিকোত্তর ভারতবর্ষে ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ে। একই সঙ্গে দুর্বল হয়ে পড়েছে কাশ্মীরের নৃতাত্ত্বিক-সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্য। এই সুযোগে সত্তর দশকের শেষে মৌলবাদী ইসলামিক প্রচারণার ক্ষেত্র তৈরি হয় শহুরে শিক্ষিত যুবকদের দ্বারা গঠিত ‘স্টুডেন্টস ইসলামিক ফেডারেশন’ গঠনের মাধ্যমে। এর আগে ছাত্রদের ভেতর জামায়াতে ইসলামীর সংগঠন ছিল ‘ইসলামী জমিয়াত তুলবা’ নামে। এদের লক্ষ্য ছিল কাশ্মীরী সমাজের ইসলামীকরণ। সেই সময় খোমেনীর নেতৃত্বে ইরানের বিপ্লবও এদের যথেষ্ট উদ্দীপ্ত করেছে। রাজনৈতিক ভাষ্যকারদের ভেতর যারা কাশ্মীরকে ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ মনে করেন তারাও বলেছেন, পাঞ্জাবের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন যে কৌশলে ভারত মোকাবেলা করেছে কাশ্মীরের ক্ষেত্রে তারা তা করতে ব্যর্থ হয়েছে। এক্ষেত্রে আমার পর্যবেক্ষণ ভিন্ন। পাঞ্জাবের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের চেয়ে পাকিস্তানের কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন। খালিস্তান আন্দোলনের নেতারা কখনও বলেননি যে, ভারত থেকে মুক্ত হয়ে তারা পাকিস্তানের সঙ্গে যোগ দেবেন। পক্ষান্তরে কাশ্মীরে স্বাধীনতাকামী দলগুলোর ভেতর ইয়াসিন মালিকদের জম্মু-কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্ট (জেকেএলএফ) ছাড়া অন্য সবাই পাকিস্তানের সঙ্গে যোগ দেয়ার পক্ষে। হুরিয়াতের তিন শীর্ষ নেতা মীর ওয়াইয উমর ফারুখ, শাবির শাহ ও মওলানা আব্বাস আনসারী যদিও সাক্ষাতকারে আমাকে বলেছেন তারা স্বাধীন কাশ্মীর চান, পাকিস্তানের সঙ্গে যোগ দেবেন না, কিন্তু কাশ্মীরের সামরিক ও বেসামরিক প্রশাসনের কাছে পর্যাপ্ত প্রমাণ রয়েছে এদের পাকিস্তান সম্পৃক্তির। যে কারণে সবচেয়ে বড় শরিক হওয়া সত্ত্বেও জেকেএলএফ-এর ইয়াসিন মালিকের পরিবর্তে জামায়াতে ইসলামীর সৈয়দ আলী শাহ গিলানী বর্তমানে হুরিয়াতের সভাপতি। এটি ঘটেছে পাকিস্তানের অভিপ্রায় অনুযায়ী। অপরদিকে ইয়াসিন মালিকরা কাশ্মীরের স্বাধীনতার প্রশ্নে আন্তরিক হলেও ’৯০-এর সাম্প্রদায়িক নির্যাতন, নির্বিচারে হিন্দু পণ্ডিত নিধনের দায় তারা এড়াতে পারেন না। খোদ ইয়াসিন মালিকের বিরুদ্ধেই রয়েছে পাঁচজন ভারতীয় বিমান সেনাকে হত্যার অভিযোগ, যে মামলা এখনও চলছে। জেকেএলএফ হালে যতই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা বলুক না কেন সংখ্যালঘু ধর্মীয় সম্প্রদায়ের আস্থা তারা অর্জন করতে পারবে বলে মনে হয় না। (ক্রমশ.)
×