ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিয়ের নাটক সাজিয়ে নারীকে দফায় দফায় ধর্ষণ

প্রকাশিত: ০৯:২০, ২৩ আগস্ট ২০১৯

বিয়ের নাটক সাজিয়ে নারীকে দফায় দফায় ধর্ষণ

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ জহির বুক ডিপোর মালিক জহির উদ্দিন খানের বিরুদ্ধে বিয়ের নাটক সাজিয়ে এক নারীকে দফায় দফায় ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। যশোর উপশহর ১ নং সেক্টর এলাকায় (বিরামপুর স্কুলের সামনে) ভগ্নিপতির বাড়িতে থাকা মাগুরার স্বামী পরিত্যক্ত এ নারী কোতয়ালি মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা অভিযোগের সত্যতা পেলেও তাকে আটক না করে ছেড়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বুধবার রাতে কোতোয়ালি থানায় দায়েরকৃত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, মাগুরা সদর উপজেলার সত্যপুর এলাকার এক নারী যশোরের উপশহর ১ নং সেক্টর বিরামপুর প্রাইমারী স্কুলের সামনে তার ভগ্নিপতির বাড়িতে বসবাস করছিলেন। এ সময় ভগ্নিপতির নিকটজন উপশহর সারথী মিলের পাশের (বর্তমান ঘোপ সেন্ট্রাল রোড হলুদ মিলের সামনে) মৃত আবুল হোসেন খানের ছেলে জহির উদ্দিন খান (৪০) ওই বাড়িতে আসা যাওয়ার সুবাদে ওই নারীর সঙ্গে কথা বার্তা বলা শুরু করে। এক পর্যায়ে জহির উদ্দিন তাকে জানান, তার স্ত্রী মৃত্যু পথযাত্রী। তিনি বিয়ে করবেন বলে বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখাতে থাকেন। বিয়ের পর বিষয়টি গোপন রেখে তার স্ত্রী মারা যাওয়ার পর সামাজিকভাবে তুলে নেয়া হবে জানান। বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ৮ মাস আগে তার তিনজন বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে হুজুর ও সাক্ষী সাজিয়ে বিয়ের নাটক করে। এ নাটকে সাড়ে ৩ লাখ টাকার কাবিননামার কথা প্রচার করা হয়। বিয়ে রেজিস্ট্রি করতে বললে জহির জানান পরে করবে। এরপর যশোরের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে দফায় দফায় ধর্ষণ করে। এছাড়াও নারী ভগ্নিপতির বাসায় অবস্থানের সময় বোন ভগ্নিপতির অনুপস্থিতিতে ফুঁসলিয়ে ধর্ষণ করে। এরপর গত ৫ মে বিকেল সাড়ে ৫টায় তার বোন ভগ্নিপতির অনুপস্থিতিতে ওই বাড়িতে চড়াও হয়ে শয়নকক্ষে প্রবেশ করে জহির খারাপ কাজ করার প্রস্তাব দেয়। ওই নারী রাজি না হওয়ায় চাকু দেখিয়ে হত্যার হুমকি দিয়ে ধর্ষণ করে। গত ৭ আগস্ট যশোরের দড়াটানায় জহির ওই নারীকে জানান, তার দাবিকৃত টাকা দিলে বিয়ে করতে পারে। অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, মিথ্যা হুজুর ও সাক্ষী সাজিয়ে বিয়ে করার অভিনয় করেছে। তাকে দফায় দফায় ধর্ষণ করেছে। এখন এই ঘটনা কাউকে জানালে হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে। জহির উদ্দিনের নিকটজন ও ভুক্তভোগী নারীর ভগ্নিপতি আলাউদ্দিন জানিয়েছেন, জহির উদ্দিন একজন ভ- প্রতারক। দিনের পর দিন বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করেছে। এখন ধর্ষণের অভিযোগ থেকে নিজেকে বাঁচাতে সে বিয়ের নাটক সাজিয়েছে। আর ৫০ হাজার টাকা কাবিন প্রচার করছে। অথচ ভুয়া বিয়ে করার সময় সাজানো কাজী ও সাক্ষীর সামনে সে সাড়ে ৩ লাখ টাকা কাবিনে বিয়ে করছে বলে জানিয়েছিল ভুক্তভোগীকে। এদিকে ধর্ষণের তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তকর্তা এস আই নুরের বিরুদ্ধে দুই লাখ টাকার বিনিময়ে ধর্ষণের অভিযুক্ত ধর্ষক জহির উদ্দিন খানকে আটক না করে ছেড়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে ঘটনা তদন্ত কর্মকর্তা এস আই নুর জানান, অভিযুক্ত জহির উদ্দিন খান তার বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে দুদিন সময় চেয়েছেন। ওই নারীর সঙ্গে প্রতারণা ও তার দৈহিক সম্পর্ক করার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। দু’দিনের মধ্যে নারীর সঙ্গে জহির উদ্দিনের সমঝোতা না করলে তাকে আটক করা হবে। তার বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা হবে।
×