ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রেলের সিডিউল বিপর্যয় তদন্তে কমিটি গঠন

প্রকাশিত: ১২:৫৭, ২৩ আগস্ট ২০১৯

রেলের সিডিউল বিপর্যয় তদন্তে কমিটি গঠন

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ এবারের ঈদ ফিরতি যাত্রায় স্মরণকালের রেকর্ড ভেঙ্গে পশ্চিমাঞ্চলে রেলওয়ের সিডিউল বিপর্যয়ের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের সাড়ে ৩৩ ঘণ্টা বিলম্বে ট্রেন ছাড়ার নতুন নজির সৃষ্টি হওয়ায় বলা হয়েছে এ বিপর্যয়ের কারণ অনুসন্ধান করতে। এজন্য তিনদিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুনকে প্রধান করে এই পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি খতিয়ে দেখবে কি কারণে এমন বিপর্যয় ঘটেছে। এছাড়া রেলপথ সেবা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সব শাখায় সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। এদিকে ট্রেনে নোংরা পরিবেশের কারণে স্যানিটারি ইন্সপেক্টরকে এরই মধ্যে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। পশ্চিমাঞ্চলে রেলওয়ের নতুন মহাব্যবস্থাপক হিসেবে যোগদানের পর হারুন-অর-রশীদ এরইমধ্যে ‘সারপ্রাইজ ইন্সপেকশনে’ রেলওয়ে স্টেশনে যান। তিনি নিজের পরিচয় গোপন রেখে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করেন। এ সময় স্টেশনের ওয়েটিং রুমের বেসিন, টয়লেট ও পরিবেশ নোংরা এবং অস্বাস্থ্যকর থাকায় তাৎক্ষণিকভাবে স্যানেটারি ইন্সপেক্টর আমিনুল ইসলামকে বরখাস্তের নির্দেশ দেন নতুন মহাব্যবস্থাপক। সিডিউল বিপর্যয় প্রশ্নে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সুপারিন্টেনডেন্ট আব্দুল করিম জানান, ঈশ্বরদী থেকে জয়দেবপুর পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন। ঢাকার সঙ্গে উত্তরাঞ্চলে যোগাযোগে ২৪ ঘণ্টায় ২৪ ট্রেন চালানোর সক্ষমতা রয়েছে কর্তৃপক্ষের। কিন্তু বর্তমানে চলাচল করছে ৪৪ ট্রেন। আর বিরতিহীন ট্রেন চলে তিনটি। এমন জটের মধ্যে বিরতিহীন ট্রেনগুলোকে পারাপারে অগ্রাধিকার দিতে হচ্ছে। ফলে অন্য সব ট্রেনই পড়ছে বিলম্বের কবলে। তবে ভয়াবহ এই সিডিউল বিপর্যয়ের ঘটনায় পশ্চিমাঞ্চল সদর দফতরে প্রতিদিনই দফায় দফায় বৈঠকে বসছেন শীর্ষ কর্মকর্তারা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। এছাড়া রেলসেবায় কারও গাফিলতি পেলে কোন ছাড় দেয়া হবে না জানিয়ে সব শাখায় সতর্কতামূলক চিঠি পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার নবনিযুক্ত মহাব্যবস্থাপক মোঃ হারুন-অর-রশীদ বলেন, যাত্রীরা যেন কোনভাবেই দুর্ভোগে না পড়েন সে বিষয়ে সরকারী নির্দেশনা রয়েছে। সেজন্য সেবার মান ঠিক করতে তারা কাজ করে যাচ্ছেন। এজন্যই সিডিউল বিপর্যয়ের কারণ অনুসন্ধানে পাকশী বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুনকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের কমিটি করে দেয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। এদিকে, ঈদের আগে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্বে ও ঈদের পর কোর্টচাঁদপুরে ট্রেন লাইনচ্যুত হয়। এ ঘটনার প্রভাবে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সিডিউল ভেঙ্গে পড়ে। কোন ট্রেনেরই এখন আর সময়সূচী ঠিক নেই। সকালের ট্রেন রাতে, রাতের ট্রেন যাচ্ছে পরদিন সকালে। ফলে বিপর্যয়ের নতুন নজির সৃষ্টি করে। এভাবেই চলছে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রতিটি আন্তঃনগর ট্রেন। তবে প্রতিটি ট্রেন সাপ্তাহিক ডে-অফ পেলে শিডিউলে শৃঙ্খলা ফিরবে বলে আশা প্রকাশ করছেন পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের কর্মকর্তারা।
×