ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

হংকংকে অবশ্যই রক্ষা করা উচিত, এটা নাগরিক দায়িত্ব

প্রকাশিত: ০৯:২৮, ২৪ আগস্ট ২০১৯

 হংকংকে অবশ্যই রক্ষা করা উচিত, এটা নাগরিক দায়িত্ব

হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থীদের বিক্ষোভ চলছে। লাখ লাখ বিক্ষোভকারী প্রতি সাপ্তাহিক ছুটির দিনে অংশ নেন বিক্ষোভে। একটানা ১১ সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বিক্ষোভ করে শহরটির বাসিন্দারা। এসব বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন লাখ লাখ মানুষ। তাদেরই একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র প্যাট্রিক অং (২০)। তিনি বলেন, ‘আমাদের শহরকে অবশ্যই আমাদের রক্ষা করা উচিত।’ গত রবিবারের বিক্ষোভের আগে সকালে তিনি তার বাবা-মায়ের সঙ্গে নুডুলস ও সবজি দিয়ে সকালের নাস্তা করেন। এরপর প্রস্তুতি নেন বিক্ষোভ যোগ দেয়ার। তিনি ব্যাগে একটি কালো টি-শার্ট, ০.২২ বোরের গুলি ঠেকাতে সক্ষম এক জোড়া চশমা ভরেন। যদিও তিনি শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের আশা করেন, কিন্তু খারাপ কিছু ঘটতে পারে এই আশঙ্কায় পুরো প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। এছাড়া তিনি একটি বোতলে স্যালাইনযুক্ত পানিও নেন। কারণ এটি টিয়ারগ্যাস ও পিপার স্প্রে ধুয়ে ফেলতে সাহায্য করবে। এর আগের কয়েকটি বিক্ষোভে তিনি আঘাত পেয়েছেন। বিক্ষোভকারী অং বলেন, ‘আমরা জানি কী ঘটতে পারে।’ গত জুনে প্রত্যর্পণ বিলের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। এরপর থেকে হংকংয়ের অন্যান্য নাগরিকের মতো তিনিও প্রতিটি বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন এবং সামনের সারিতে ছিলেন। এ সময় তিনি পুলিশের হামলার শিকার হয়েছেন। এই বিক্ষোভকারী বলেন, ‘আমাদের শহরকে রক্ষা করা আমাদের নাগরিক দায়িত্ব। কারণ এটা আমাদের বাসস্থান।’ হংকংয়ের প্রতি যে তার দরদ রয়েছে সেটা তার এ্যাপার্টমেন্টের পরিবেশ দেখেই বোঝা যায়। তার রুমের বইয়ের তাকে রয়েছে শহরের জনসাধারণের যাতায়াত ব্যবস্থা নিয়ে লেখা বই, তার রুমের দেয়ালে শোভা পাচ্ছে শহরের বিভিন্ন প্রকার বাসের নমুনার পোস্টার। এছাড়া তার সংগ্রহে রয়েছে হংকংয়ের বিখ্যাত ক্যানটোপর তারকাদের গান। অং যখন বিক্ষোভের জন্য বের হয়ে যাচ্ছিলেন, তখন তিনি ভিক্টোরিয়া হারবারের দৃশ্য দেখিয়ে বলেন, ‘এই স্থানটিকে খুবই পছন্দ করি। আমি এখানকার সবকিছু পছন্দ করি। শহরের জনগণ, ভাষা, জনপ্রিয় সংস্কৃতি এবং শহুরে পরিবেশ। এমন পরিবেশ বিশ্বের কোথাও পাওয়া যাবে না।’ কিন্তু হংকংয়ের পরিবেশ বদলে গেছে। গতমাসে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের নাটকীয়ভাবে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের বিন ব্যাগের আঘাতে এক নারীর এক চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। সাতশ’রও বেশি লোককে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে দাঙ্গার অভিযোগ আনা হয়েছে, যার অপরাধে ১০ বছরের জেল হতে পারে। এর আগে বিক্ষোভকারীরা যে বিমানবন্দর অচল করে দিয়েছিল, সেখানে ছিলেন এই বিক্ষোভকারী অং। এ সময় বিক্ষোভকারীরা যাত্রীদের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ে জড়িয়ে পড়ে, পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয় এবং চীনের গুপ্তচর সন্দেহে দু’জনকে গণপিটুনি দেয়া হয়। পরে অবশ্য ক্ষমা প্রার্থনা করে বিক্ষোভকারী এবং শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের ডাক দেয়। দুই মাসেরও বেশি বিক্ষোভের পর এখন বিক্ষোভকারীরা অনেকটাই ভিন্নমত পোষণ করছে, যে আগামীতে কী পদক্ষেপ নেয়া হবে। কারণ সরকার তাদের দাবির প্রতি কোন কর্ণপাত করছে না। বরং সীমান্তজুড়ে সেনা মোতায়েন করেছে বেজিং। অং বলেন, ‘দাবি মেনে নিতে চাপ প্রয়োগ করতে আমরা রাস্তায় নেমেছি, ইট ও পাথর নিক্ষেপ করেছি, কিন্তু সরকার কোন সাড়া দিচ্ছে না। আমরা বিমানবন্দর ও এমটিআর অচল করার চেষ্টা করেছি, সরকারী দফতরে ভাংচুর চালিয়েছি। কিন্তু কোন কিছুতেই কাজ হচ্ছে না।
×