ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মুন্সীগঞ্জ

সড়কের কোটি টাকার গাছ নামমাত্র মূল্যে বিক্রি

প্রকাশিত: ০৯:২৯, ২৪ আগস্ট ২০১৯

সড়কের কোটি টাকার গাছ নামমাত্র মূল্যে বিক্রি

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ ভবেরচর-গজারিয়া-মুন্সীগঞ্জ মহাসড়ক মানোন্নয়ন ও প্রশস্তকরণের কাজে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় সড়কের দুই পাশের গাছ বিক্রির টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ উঠছে। একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট কোটি টাকার গাছ হাতিয়ে নিয়েছে মাত্র ২৩ লাখ ৭৭ হাজার টাকায়। ওই সড়কের দুই পাশের গাছ বিক্রির জন্য টেন্ডার আহ্বান করে গজারিয়া উপজেলা পরিষদ। পাঁচটি প্যাকেজে ওই টেন্ডার আহ্বান করলে সর্বমোট ৭৩টি দরপত্র বিক্রি হয়। তবে পাঁচ প্যাকেজে মোট ১৫টি দরপত্র জমা পড়ে। প্রতিটি প্যাকেজে তিনটি করে দরপত্র জমা পড়ে। উপজেলা পরিষদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ৪ লাখ ৫৭ হাজার ১০১ টাকায় একটি প্যাকেজের গাছ বিক্রির টেন্ডার পায় রাসেল আখন্দ নামে এক ব্যক্তি। মোঃ নাছির উদ্দিন ৪ লাখ ৬৯ হাজার ৩২৫ টাকা ও ৫ লাখ ৩১ হাজার ২১২ টাকায় দুটি প্যাকেজের টেন্ডার পান। এছাড়া ৩ লাখ ৮৯ হাজার ৮৯০ টাকায় মোঃ সহিদ হোসেন এবং ৫ লাখ ২৯ হাজার ৭১৯ টাকায় মোঃ সহিদ অপর প্যাকেজের গাছ বিক্রির টেন্ডার পান। এদের পাঁচটি প্যাকেজের সর্বমোট টেন্ডার মূল্য দাঁড়িয়েছে ২৩ লাখ ৭৭ হাজার ২৪৭ টাকা। এদিকে ভবেরচর-গজারিয়া-মুন্সীগঞ্জ সড়কের গাছগুলো ৫০ থেকে ৩০ বছরের পুরনো। ২৪৩টি গাছ বিক্রির জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়ায় পাঁচ প্যাকেজে ৭৩টি দরপত্র বিক্রি সত্ত্বেও জমা পড়ে মাত্র ১৫টি। একেকটি প্যাকেজে নিয়ম রক্ষার তিনটি করে দরপত্র জমা পড়ে। অর্ধশত বছরের পুরনো একেকটি কড়ই গাছের কয়েক লাখ টাকা বাজার মূল্য রয়েছে বলে স্থানীয়দের দাবি। ৩০ বছরের পুরনো একেকটি গাছেরও বাজারে বিক্রি মূল্য রয়েছে লাখ টাকার ওপরে। সব কিছু মিলিয়ে সড়কের ওই গাছগুলোর বাজার মূল্য কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে স্থানীয়রা মনে করেন। তারা বলেন, নিয়ম রক্ষার জন্য প্রতিটি প্যাকেজে তিনটি করে দরপত্র জমা পড়ার ঘটনাটি টেন্ডার প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। পাশাপাশি কোটি টাকার গাছ নামমাত্র মূল্যে টেন্ডার দেয়া হয়েছে। জেলার ভারপ্রাপ্ত বন কর্মকর্তা আবু তাহের জানান, সড়কের দুই পাশের ২৪৩টি গাছ বিক্রির জন্য পাঁচটি প্যাকেজে ভাগ করা হয়। গাছগুলোর মধ্যে স্বল্পসংখ্যক ৩০ বছর বয়সী ও অধিকাংশই ৩০ বছরের নিচে। প্রথম প্যাকেজে এক থেকে ৫০ পর্যন্ত গাছের সরকারীভাবে ৪ লাখ ৪৬ হাজার ৭৭১ টাকা মূল্য নির্ধারণ করে বন বিভাগ। দ্বিতীয় প্যাকেজে ৫১ থেকে ১০০ পর্যন্ত গাছের সরকারী মূল্য ৪ লাখ ১৯ হাজার টাকা, তৃতীয় প্যাকেজে ১০১ থেকে ১৫০ পর্যন্ত গাছের সরকারী মূল্য ৩ লাখ ৮৮ হাজার টাকা, চতুর্থ প্যাকেজে ১৫১-২০০ পর্যন্ত গাছের সরকারী মূল্য ৫ লাখ ৪ হাজার ও ২০১-২৪৩ পর্যন্ত গাছের সরকারী মূল্য ৫ লাখ ২৮ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়। টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন না বলে দাবি করেন ভারপ্রাপ্ত বন কর্মকর্তা। তবে এ প্রসঙ্গে গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসান সাদী বলেন, শতভাগ স্বচ্ছতার সঙ্গে টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।
×