ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মাস্টারমাইন্ডদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে

প্রকাশিত: ১০:৫৪, ২৫ আগস্ট ২০১৯

মাস্টারমাইন্ডদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ শোক আর শ্রদ্ধায় শনিবার পালিত হয়েছে ২১ আগস্ট পৈশাচিক গ্রেনেড হামলায় নিহত প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ জিল্লুর রহমানের সহধর্মিণী খ্যাতনামা নারীনেত্রী বেগম আইভি রহমানের ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী। দিবসটি পালন করতে গিয়ে সবাই ভয়াল-বীভৎস এ গ্রেনেড হামলার জন্য তৎকালীন ক্ষমতাসীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারকে সরাসরি দায়ী করে গ্রেনেড হামলার ঘাতক ও মাস্টারমাইন্ডদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন। বাদ আছর পরিবারের পক্ষ থেকে আইভি কনকর্ড টাওয়ারে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী এ সময় শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলেন। ওই মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, এ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, স্থানীয় সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক), বিএমএ সভাপতি ডাঃ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনসহ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ, উপদেষ্টা পরিষদ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং মরহুমের শুভাকাক্সক্ষীরা শরিক হন। এদিকে বনানী কবরস্থানে শ্রদ্ধা জানাতে এসে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও বলেছেন, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার মাস্টারমাইন্ডদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলার মাস্টারমাইন্ড হলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাকে দেশে ফেরাতে সরকারের উদ্যোগের কমতি নেই। আইনী প্রক্রিয়া চলছে। সরকার তাকে ফিরিয়ে আনতে সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। এ ব্যাপারে আইন মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে। একইভাবে গ্রেনেড হামলার মাস্টারমাইন্ডদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে আদালতে আপীল করা হবে বলেও জানান তিনি। নানা কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে শনিবার একুশে আগস্ট বর্বরোচিত ভয়াল-বীভৎস গ্রেনেড হামলায় নিহত আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা, মহীয়সী নারীনেত্রী ও মুক্তিযোদ্ধা আইভি রহমানের ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়। সকালে বনানীতে আইভী রহমানের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ফাতেহা পাঠ ও মোনাজাতের মাধ্যমে তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন আওয়ামী লীগের নেতারা। এ সময় ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় হয়েছে। এখন উচ্চ আদালতে শুনানি হবে। সেজন্য পূর্ণাঙ্গ রায়ের জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের সংগ্রামে আইভি রহমান ছিলেন আপোষহীন। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের রাজনীতিতে নারীদের একজন নক্ষত্র। অথচ গ্রেনেড হামলায় আইভি রহমান রক্তাক্ত অবস্থায় কাতরাচ্ছিলেন। কিন্তু সময়মতো চিকিৎসা পাননি। চিকিৎসায় বিলম্ব না হলে হয়তো তিনি বেঁচে যেতেন। শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইনাম আহমেদ চৌধুরী, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোঃ আব্দুল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম, দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, নির্বাহী সদস্য এ্যাডভোকেট বিএম রিয়াজুল কবির কাওসার, স্থানীয় সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠানসহ (নায়ক ফারুক) আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগরের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণ, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, যুব মহিলালীগ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটসহ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতারা তাদের নিজ নিজ সংগঠনের পক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে আইভি রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। তবে প্রথমে গ্রেনেড হামলায় নিহত বেগম আইভি রহমানের পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁর কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মোনাজাত করা হয়। এদিকে বাদ আছর পরিবারের পক্ষ থেকে আইভি কনকর্ড টাওয়ারে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল আয়োজন করা হয়েছে। ওই মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ, উপদেষ্টা পরিষদ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং মরহুমের শুভাকাক্সক্ষীরা শরিক হন। কিশোরগঞ্জের ভৈরবেও নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালিত হয় বেগম আইভি রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী। প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশে বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলা ও গুলিবর্ষণ করা হয়। এ ন্যক্কারজনক গ্রেনেড হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক বিশিষ্ট নারীনেত্রী বেগম আইভি রহমান গুরুতর আহত হন। সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ৪ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে অবশেষে ২৪ আগস্ট শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
×