ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

দেশ উন্নয়নশীল, সবার মাথাপিছু আয় বেড়েছে ॥ পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১০:৫৬, ২৫ আগস্ট ২০১৯

দেশ উন্নয়নশীল, সবার মাথাপিছু আয় বেড়েছে ॥ পররাষ্ট্রমন্ত্রী

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ সিলেটকে ভিক্ষুকমুক্ত করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। শনিবার সকালে সিলেট নগরীর রিকাবীবাজার কবি নজরুল অডিটরিয়ামে সিলেট জেলা প্রশাসন ও সমাজসেবা অধিদফতরের যৌথ উদ্যোগে দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্তান্ত রোগীদের চিকিৎসার্থে আর্থিক সহায়তার চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। খবর স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতাদের। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশ। সকলের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। সবার জন্য কর্মসংস্থান নিশ্চিতে কাজ করছে সরকার। এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকলে দ্রুতই সিলেটকে ভিক্ষুকমুক্ত করা সম্ভব। তিনি বলেন, সরকার সব সময় অসহায় মানুষকে সহযোগিতা করে আসছে। এ ধারা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। শনিবার নগরীর রিকাবীবাজার কবি নজরুল অডিটরিয়ামে চেক প্রদান অনুষ্ঠানে সিলেটের ১৪ উপজেলার ২৬৮ জনকে আর্থিক সহায়তা হিসেবে এক কোটি ৩৪ লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছে। সিলেট জেলা প্রশাসন ও সমাজসেবা অধিদফতরের যৌথ উদ্যোগে ক্যান্সার, কিডনি রোগ, লিভার সিরোসিসসহ দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্তদের চিকিৎসার্থে আর্থিক সহায়তা কর্মসূচীর উদ্যোগে এই টাকা প্রদান করা হয়। সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সমাজসেবা অধিদফতরের আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রভাষক সানজিদা সুলতানার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিভাগীয় সমাজসেবা কার্যালয়ের পরিচালক (উপসচিব) সন্দ্বীপ কুমার সিংহ, জাতীয় সমাজ কল্যাণ পরিষদের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও সাবেক এমপি সৈয়দা জেবুন্নেছা হক। শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক নিবাস রঞ্জন দাশ। অনুষ্ঠানে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালিক, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ সুজাত আলী রফিক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এরপর দুপুরে সিলেট জেলা স্টেডিয়ামের বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ পরিদর্শন করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কর্তৃক সিলেট জেলা স্টেডিয়ামের নবনির্মিত পাঁচতলা বিশিষ্ট ভিআইপি ভবন, গ্যালারি ও শেড নির্মাণ, গ্যালারিসমূহে রং দেয়া এবং দৃষ্টিনন্দন মূল প্রবেশ গেট নির্মাণ করা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের শর্ত পূরণে মিয়ানমারের উদ্যোগ চান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ॥ রাখাইনে ফেরার ক্ষেত্রে যেসব শর্ত রোহিঙ্গারা দিচ্ছে, সেসব বিষয়ে মিয়ানমারকে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন বলেছেন, নিজেদের নাগরিকদের আস্থা ফেরানোর দায়িত্ব তাদেরই নিতে হবে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের দ্বিতীয় চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর শুক্রবারও তিনি বলেছেন, আমরা এখনও আশাবাদী। গত বছর নবেম্বর প্রথম দফার চেষ্টা ভেস্তে যাওয়ার পর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য ২২ আগস্ট দিন ঠিক হয়েছিল। কিন্তু নাগরিকত্বসহ চারটি শর্তের কথা তুলে বৃহস্পতিবার নির্ধারিত দিনে একজন রোহিঙ্গাও স্বেচ্ছায় মিয়ানমারের রাখাইনে ফিরে যেতে রাজি হয়নি। রাখাইনের অধিবাসী হিসেবে ১ হাজার ৩৭ রোহিঙ্গা পরিবারের যে তালিকা মিয়ানমার পাঠিয়েছিল, সেটি ধরে প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য গত কয়েকদিন ধরে সাক্ষাতকার নিচ্ছেন ইউএনএইচসিআর ও বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিরা। তারা স্বেচ্ছায় মিয়ানমারে ফিরে যেতে আগ্রহী কিনা তা জানতে চাওয়া হচ্ছে তাদের কাছে। সেই প্রক্রিয়া এখনও চলছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, মিয়ানমার এখনও তাদের (রোহিঙ্গা) মনে আস্থা ফিরিয়ে আনতে পারেনি। কিন্তু এটা তাদেরই দায়িত্ব। তারা (রোহিঙ্গা) মিয়ানমারকে বিশ্বাস করে না। এ বিষয়টিকে অবশ্যই মিয়ানমারের আমলে নিতে হবে। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শুক্রবার ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিবিদদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপকমিটির এক আলোচনা সভার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রত্যাবাসন শুরু করার জন্য বাংলাদেশ সব সময়ই প্রস্তুত। আবদুল মোমেন বলেন, এখন কক্সবাজারের বদলে রাখাইনের দিকে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মনোযোগ দেয়া উচিত। কক্সবাজারে যে রোহিঙ্গারা আছে বাংলাদেশ তাদের দিকটা দেখছে। রোহিঙ্গাদের দাবি, প্রত্যাবাসনের জন্য আগে তাদের নাগরিকত্ব দিতে হবে। জমি-জমা ও ভিটামাটির দখল ফেরত দিতে হবে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। রাখাইনে তাদের সঙ্গে যা হয়েছে, সেজন্য ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারকে এ বিষয়গুলো দেখতে হবে। তারা যদি আমলে না নেয়, তাহলে আতঙ্ক থেকেই রোহিঙ্গারা ফিরে যেতে চাইবে না।
×