ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

উত্তর মেরুতে রুশ পরমাণু বিদ্যুত কেন্দ্র

প্রকাশিত: ১২:০৫, ২৫ আগস্ট ২০১৯

উত্তর মেরুতে রুশ পরমাণু বিদ্যুত কেন্দ্র

রুশ সরকার মারাত্মক পরমাণু বিস্ফোরণ ঘটনাকে গুরুত্বহীন করে দেখছে। কিন্তু ওই বিস্ফোরণের কারণ ব্যর্থ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা বলে সন্দেহ রয়েছে। লুকাস টমলিনসোন রিপোর্টে এমনটাই বলা হয়েছে। একটি ভাসমান রুশ পরমাণু বিদ্যুত কেন্দ্র শুক্রবার সুমেরু অঞ্চলে যাত্রা শুরু করেছে এবং এটি তিন হাজার মাইল ভ্রমণ করবে। ফক্স নিউজ। পরিবেশবিদরা সতর্কতা উচ্চারণ করে এটিকে সম্ভাব্য ‘চেরনোবিল অন আইস’ বলে অভিহিত করেছেন। বিবিসি বলেছে, একাডেমিক লোমোনোসোভ উচ্চমাত্রার তেজস্ক্রিয় জ্বালানি বহন করছে এবং জাহাজটিতে সুনামি প্রতিরোধ সক্ষম পরমাণু চুল্লি রয়েছে। জাহাজটি মারমানস্ক বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করেছে এবং পেভিকে গিয়ে ভিড়বে। এটি পোত জাহাজটিকে পূর্বদিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। তাই এটি প্রত্যন্ত অঞ্চল সাইবেরীয় খনি কমপ্লেক্সে বিদ্যুত জোগান দিতে সমর্থ হবে। রাশিয়ার উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে এক নৌ অস্ত্র পরীক্ষা স্থলে একটি পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র বিস্ফোরণের ঠিক দু’সপ্তাহ পর জাহাজটির যাত্রার সূচনা হলো। বিস্ফোরণে পাঁচজন নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে দুইজন তেজস্ক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। যে চিকিৎসকরা আহতদের চিকিৎসা করেছেন তারা শুক্রবার পৃথকভাবে বিবিসিকে বলেছেন, তারা এখন আশঙ্কা করছেন যে তারা নিজেদের তেজস্ক্রিয়ায় আক্রান্ত করে ফেলেছেন। কারণ, তারা কাজ করছেন, কিন্তু তাদের জন্য কোন সুরক্ষা ব্যবস্থা নেই এবং সামরিক বাহিনী কোন দূষণ ঝুঁকির ব্যাপারে তাদের জন্য কখনও সতর্ক উচ্চারণ করে না। পরিবেশবাদীরা ভ্রমণরত একাডেমিক লোমোনোসোভের মতো জাহাজগুলোর ঝুঁকির ব্যাপারে আশঙ্কা ব্যক্ত করে যাচ্ছেন। কারণ, জাহাজটি বিশ্বের রূঢ় ও অনিশ্চিত আবহাওয়ার অঞ্চল বলে খ্যাত একটি অংশ দিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। গিনপিসের ওয়েবসাইটের পোস্টে জাহাজটির ওপর এক প্রবন্ধে বলা হয়েছে, পরবর্তী পরমাণু দুর্যোগ ‘চেরনোবিল অন আইস’ বা ‘চেরনোবিল অন দ্য রক’য়ে পরিণত হতে পারে। জাহাজটি সুমেরুতে দূষণ সৃষ্টি করছে বলে সমালোচকদের মধ্যেও উদ্বেগের সৃষ্টি হচ্ছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে কোন দুর্যোগ অপসারণে রুশ কর্তৃপক্ষের সামর্থ্য কাজে লাগানো উচিত। একাডেমিক লোমোনোসোভের ক্রু হিসেবে রয়েছেন ৭০ জন এবং এ নতুন বিদ্যুত কেন্দ্র প্রায় ১ লাখ অধিবাসীর কাছে পর্যাপ্ত বিদ্যুত সরবরাহ করতে সক্ষম হবে। রুশ মিডিয়ার উদ্ধৃতি দিয়ে এ কথা বলা হয়। জাহাজটি সেপ্টেম্বরের শেষের নাগাদ পেডেক পৌঁছবে বলে প্রত্যাশা রয়েছে। রুশ রাষ্ট্রীয় পরমাণু বিদ্যুত কোম্পানি রোসাতেমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ এক বিবৃতিতে বলেছেন, আমাদের কোম্পানির জন্য, চুকুতকা অঞ্চলের জন্য এটি এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। তিনি বলেন, এ উদ্যোগ সুমেরু অঞ্চলের ভবিষ্যত গঠনে এক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে এবং সে ভবিষ্যত হবে টেকসই ও সমৃদ্ধ। রোসাতোমের পক্ষ থেকে শুক্রবার জাহাজ যাত্রার সময় বলা হয়েছে, জাহাজের চালককে বিশ্বের প্রত্যন্ত উত্তরাঞ্চলের পরমাণু সংস্থাপন হিসেবে একাডেমিক লোমোনোসোভের মান নিশ্চিত করে ‘রাশান বুক অব রেকর্ডস’ প্রশংসাপত্রে সম্মানিত করা হয়েছে। এ কথাও বলা হয়ে থাকে, যে সকল অত্যন্ত প্রত্যন্ত ও দ্বীপরাষ্ট্রে জ্বালানির স্থিতিশীল, পরিবেশসম্মত উৎসের প্রয়োজন সে সকল স্থানের জন্য এ জাহাজটির বিশেষ উপযোগিতা রয়েছে। জাহাজটিকে বিশ্বের একমাত্র ভাসমান বিদ্যুত ইউনিট বলেও অভিহিত করা হয়।
×