ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

প্রাঙ্গণেমোরের ‘রক্তকরবী’ মঞ্চস্থ

প্রকাশিত: ১২:৪৬, ২৫ আগস্ট ২০১৯

প্রাঙ্গণেমোরের ‘রক্তকরবী’ মঞ্চস্থ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের অন্যতম নাট্যদল প্রাঙ্গণেমোরের চতুর্থ প্রযোজনা ‘রক্তকরবী’ নাটকটি শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ মহিলা সমিতি মিলনায়তনে মঞ্চায়িত হয়। প্রায় ১ বছর পর নাটকটি আবার মঞ্চস্থ হলো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত বিখ্যাত এ নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন নূনা আফরোজ। নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন নূনা আফরোজ, অনন্ত হিরা, রামিজ রাজু, আউয়াল রেজা, শিশির রহমান, পলাশ, সরোয়ার সৈকত, সাগর, রিগ্যান, জুয়েল রানা, মনির, শুভ, শুভেচ্ছা, সীমান্ত, প্রকৃতি, সুজয়, চৈতী। ‘রক্তকরবী’ নাটকে তুলে ধরা হয়েছে আধুনিকতার নামে শৃঙ্খলিত, স্বার্থপর ও যান্ত্রিক একঘেয়েমি জীবনেও এক মহিয়সী নারীর প্রেম উজ্জীবিত করে সবাইকে। নাটকে যে ঘটনা ঘটে তার স্থানের প্রকৃত নামটি কি সে বিষয়ে ভৌগোলিকদের মতভেদ থাকা সম্ভব। কিন্তু সকলেই জানেন, এর ডাকনাম যক্ষপুরী। প-িতরা বলেন, পৌরাণিক যক্ষপুরীতে ধনদেবতা কুবেরের স্বর্ণসিংহাসন। কিন্তু এ নাটকটি একেবারেই পৌরাণিক কালের নয়, একে রূপকও বলা যায় না। যে জায়গাটার কথা হচ্ছে সেখানে মাটির নীচে যক্ষের ধন পোঁতা আছে। তাই সন্ধান পেয়ে পাতালে সুড়ঙ্গ-খোদাই চলছে, এই জন্যই লোকে আদর করে একে যক্ষপুরী নাম দিয়েছে। এই নাটকে এখানকার সুড়ঙ্গ-খোদাইকরদের সঙ্গে যথাকালে আমাদের পরিচয় হবে। যক্ষপুরীর রাজার প্রকৃত নাম সম্বন্ধে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতের ঐক্য কেউ প্রত্যাশা করে না। এইটুকু জানি যে, এর একটি ডাকনাম আছেÑ মকররাজ। যথাসময়ে লোকমুখে এই নামকরণের কারণ বোঝা যাবে। রাজমহলের বাহির-দেয়ালে একটি জালের জানালা আছে। সেই জালের আড়াল থেকে মকররাজ তার ইচ্ছামতো পরিমাণে মানুষের সঙ্গে দেখাশোনা করে থাকেন। কেন তার এমনতরো অদ্ভুত ব্যবহার তা নিয়ে নাটকের পাত্রগণ যেটুকু আলাপ-আলোচনা করেছেন তার বেশি আমরা কিছু জানি না। এই রাজ্যের যারা সর্দার তারা যোগ্য লোক এবং যাকে বলে বহুদর্শী। রাজার তারা অন্তরঙ্গ পার্ষদ। তাদের সতর্ক ব্যবস্থাগুণে খোদাইকরদের কাজের মধ্যে ফাঁক থাকতে পারে না এবং যক্ষপুরীর নিরন্তর উন্নতি হতে থাকে। এখানকার মোড়লরা এক সময়ে খোদাইকর ছিল, নিজগুণে তাদের পদবৃদ্ধি এবং উপাধিলাভ ঘটেছে। কর্মনিষ্ঠতায় তারা অনেক বিষয়ে সর্দারদের ছাড়িয়ে যায়। যক্ষপুরীর বিধিবিধানকে যদি কবির ভাষায় পূর্ণচন্দ্র বলা যায় তবে তার কলঙ্ক-বিভাগের ভারটাই প্রধানত মোড়লদের পরে। জেলেদের জালে মাঝে মাঝে অখাদ্য জাতের জলচর জীব আটকা পড়ে। তাদের দ্বারা পেট-ভরা বা ট্যাক-ভরার কাজ তো হয়ই না, মাঝের থেকে তারা জাল ছিঁড়ে দিয়ে যায়। এই নাট্যের ঘটনা জালের মধ্যে নন্দিনী নামক একটি কন্যা তেমনিভাবে এসে পড়ে। মকররাজ যে বেড়ার আড়ালে থাকেন সেই থেকে এই মেয়ে টিকতে দেয় না।
×