ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

সিতেশের বন্যপ্রাণি সেবা ফাউন্ডেশন

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ২৫ আগস্ট ২০১৯

সিতেশের বন্যপ্রাণি সেবা ফাউন্ডেশন

নিজস্ব সংবাদদাতা, শ্রীমঙ্গল ॥ সিতেশ রঞ্জন দেব। শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার তথা সিলেট বিভাগের একজন অতি পরিচিত বন্যপ্রাণি সেবক। প্রাণি সেবা করতে গিয়ে পেয়েছেন সিলেট বিভাগীয় সম্মননাসহ অসংখ্য পুরস্কার। সিতেশ রঞ্জন দেব প্রাণিদের ভালোবেসে তার বাগান বাড়িতে গড়ে তুলেছেন বাংলাদেশ বন্যপ্রাণি সেবা ফাউন্ডেশন। এ ফাউন্ডেশনে বিভিন্ন স্থান থেকে উদ্ধারকৃত ও আহত বন্যপ্রাণিদের সেবা-শশ্রুষা করে বনে ফিরিয়ে দেবার মহান দায়িত্ব পালন করে থাকে। দেশের মানুষ এটিকে সিতেশ রঞ্জন দেবের মিনি চিড়িয়াখানা হিসেবে চেনে। কিভাবে বন্যপ্রাণিদের প্রতি তার অগাধ ভালোবাসা জন্ম নিলো এ প্রসঙ্গে সিতেশ রঞ্জন দেব জানান, তার পিতা প্রয়াত শিরিস রঞ্জন দেব এক সময় দুর্ধর্ষ শিকারী ছিলেন। শিকারের নেশায় তিনি মাসের পর মাস কাটিয়ে দিয়েছেন বনে জঙ্গলে। তিনি সব ধরনের পশু ও পাখি চিনতেন এবং তাদের অনেকের ভাষাই তিনি বুঝতেন। প্রকৃতি পাগল শিরিস রঞ্জন দেব সখের বশে প্রকৃতিকে ভালোবেসে স্বাধীনতার পূর্বে তার শহরতলীর ইছবপুরস্থ বাড়ির আঙ্গিনায় গড়ে তুলেন একটি মিনি চিড়িয়াখানা। প্রয়াত পিতার সাথে সিতেশ রঞ্জন দেবও পশু-পাখিদের লালন পালনের কাজ শুরু করেন। পিতার সাথে শিকারেও যেতেন। ১৯৮৬ সালে পিতা শিরিস রঞ্জন দেব মৃত্যুবরণ করার পর পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে সিতেশ রঞ্জন দেবও শিকারে মত্ত হয়ে ওঠেন। বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ অধ্যাদেশ ১৯৭৩ সনের পিও নং ২৩ এর শর্তাবলী মেনে সিতেশ রঞ্জন দেব সংসার ত্যাগী এক শিকারীতে পরিণত হন। তিনি তার শহরের মিশন রোডস্থ বাসভবনের আঙ্গিনায় গড়ে তুলেন একটি মিনি চিড়িয়াখানা। এ চিড়িয়াখানা দেখতে দেশ-বিদেশের অসংখ্য পর্যটন আসতে থাকেন তার বাসায়। পরবর্তীকালে তার ভাড়াউড়া এলাকায় অবস্থিত বাগান বাড়িতে এটিকে স্থানান্তর করেন। সরকারের বন্যপ্রাণি আইনানুযায়ি এটিকে রূপান্তর করেন বাংলাদেশ বন্যপ্রাণি সেবা ফাউন্ডেশনে। সিতেশ রঞ্জন দেবের বাগান বাড়িতে গড়ে উঠা বাংলাদেশ বন্যপ্রাণি সেবা ফাউন্ডেশনের কথা বলতে গিয়ে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিয়ার রহমানের কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তিনি জানান, ড. আতিয়ার রহমান তার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে প্রথমে ১ লক্ষ টাকা অনুদান প্রদান করে এ কর্মকে সামনে এগিয়ে দেন। তিনি দেশের আগামী প্রজন্মের স্বার্থে বাংলাদেশ বন্যপ্রাণি সেবা ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে প্রাণিদের সেবা প্রদানের মাধ্যমে বন্যপ্রাণিদের বাঁচিয়ে রাখার প্রয়াস চালিয়ে যেতে চান আমৃত্যু পর্যন্ত।
×