ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

উজান ধলের বাউল কবি

প্রকাশিত: ১৩:০৮, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯

উজান ধলের বাউল কবি

বাংলাদেশের সর্বশেষ বাউল সম্রাট হিসেবে যাঁকে অভিহিত করা হয়, তিনি হলে ভাটি বাংলার বাউল কবি শাহ আব্দুল করিম। দোতারা হাতে নিয়ে দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়িয়েছেন বাউল গান গেয়ে। গানের আসরে দাঁড়িয়ে তাৎক্ষণিক গান বাধার মতো বিরল প্রজাতির অধিকারী তিনি ছিলেন। যে কোন ঘটনার প্রেক্ষাপটে তিনি আপন মনে যেমন তাৎক্ষণিক গান বাধতে পারতেন, তেমনি দক্ষ সুরকারের মতো সুরারোপ করে একতারা কিংবা দোতারায় বাজিয়ে গান গাইতেন। এমন বিরল প্রতিভার গুণেই তিনি গ্রাম বাংলার মানুষদের কাছে খুব দ্রুত জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। তাঁর জনপ্রিয়তা দেশের গণ্ডি পেরিয়ে সারা বিশ্বের বাঙালীর কাছে ছড়িয়ে পড়ে। তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক, সাম্যবাদী, মুক্তিকামী ও মেহনতী মানুষের বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর। দোতারা হাতে তিনি সারাটা জীবন অসাম্প্রদায়িকতা ও মেহনতী মানুষের পক্ষে লড়াই করে গেছেন। তিনি একজন গণসঙ্গীত শিল্পীও ছিলেন। মুক্তিকামী সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে অসংখ্য গণসঙ্গীত রচনা করেছিলেন এবং সারাদেশে ঘুরে ঘুরে গান গেয়ে সাধারণ মানুষদের জাগিয়ে তুলতেন। তিনি মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহচার্য লাভ করে ছিলেন। উনাদের সঙ্গে দেশের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে রাজনৈতিক সমাবেশে গান পরিবেশন করতেন। উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের মঞ্চে দাঁড়িয়ে বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিম উপস্থিত মুক্তিকামী জনতার উদ্দেশ্যে মুক্তির জাগরণের গান গেয়ে ছিলেন। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, ৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর হত্যা ও নব্বইয়ের স্বৈরাচার সরকারবিরোধী আন্দোলনে শাহ আব্দুল করিমের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তিনি প্রতিবাদী গান গেয়ে সাধারণ মানুষদের আন্দোলনে উজ্জীবিত করতেন। এই দিক দিয়ে বিবেচনা করলে তিনি ছিলেন একজন খাঁটি দেশপ্রেমিক। তাই তো তিনি গান গেয়ে বলেছিলেন, ‘আমি বাংলা মায়ের ছেলে/ জীবন আমার ধন্য যে হায়/ জন্ম বাংলা মায়ের কোলে/ বাংলা মায়ের ছেলে/ আমি বাংলা মায়ের ছেলে।’ শাহ আব্দুল করিম শরিয়তি, মারফতি, দেহতত্ত্ব, গণসঙ্গীত, দেশাত্মবোধক, বাউল গানসহ গানের আরও অন্যান্য শাখায় সাবলীল বিচরণ করেছেন। তিনি প্রায় দেড় সহস্রাধিক গানের রচনা ও সুরারোপ করে ছিলেন। শাহ আব্দুল করিমের অসাম্প্রদায়িক চেতনায় রচিত গানগুলো এখনও আমাদের ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে। আমাদের দেশে সামাজিক ও ধর্মীয় সম্প্রীতির প্রসঙ্গে কোন কথা হলেই সর্বপ্রথম মনে পড়ে যায় করিমের সেই বিখ্যাত গান, ‘গ্রামের নওজোয়ান হিন্দু মুসলমান/ মিলিয়া বাউলা গান আর মুর্শিদী গাইতাম/আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম।’ এই গানে তিনি বাঙালীদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা স্মরণ করিয়ে দেন। এই গানের মাঝে নিহিত আছে হাজার বছরের বাঙালীর সম্প্রীতির বন্ধন। অপর একটি গানে করিম গেয়ে ছিলেন, ‘হিন্দু-মুসলিম এটা বড় নয়/আমরা বাঙালী, আমরা মানুষ।’ এমন বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য গান আছে, যা বাঙালীর আচার অনুষ্ঠানে সমাদৃত ও প্রচলিত। তিনি যা উপলব্ধি করতেন, তাই তিনি রচনা ও সুরারোপ করে গাইতেন। তাঁর এসব গানগুলো শুধুমাত্র শুনলেই চলবে না, সামাজিক ও ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখতে আমাদেরকেও উপলব্ধি করতে হবে। আব্দুল করিমের অসাম্প্রদায়িক চেতনার কারণে অনেকেই তাঁকে নাস্তিক বলে অভিহিত করে। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি নাস্তিক নই, কমিউনিস্ট নই। আমি আল্লাহর উপর বিশ্বাসী। শেষ নিঃশ্বাস যেন ত্যাগ করি আল্লাহ আল্লাহ বলে। এটাই আমার শেষ কথা। তারা আমাকে নাস্তিক বা অন্য যা কিছু বলুক।’ তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন শোষণহীন সামাজিক ও ধর্মীয় সম্প্রীতির সবুজ শ্যামল সোনার বাংলাদেশ। তাই তিনি বাউল শিল্পী হয়েও সাধারণ মানুষের বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করেছেন। সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ে সোচ্চার হতে তিনি যেসব গণসঙ্গীত রচনা করেছিলেন, তা গ্রাম বাংলার মানুষকে আন্দোলনে দিকে প্রভাবিত করতে ব্যাপকভাবে ভূমিকা রেখে ছিল। তাঁর একটা বিখ্যাত গণসঙ্গীতে তিনি গেয়েছিলেন, ‘এই দেশের দুর্দশার কথা/ কইতে মনে লাগে ব্যথা/ খোরাক বিনা যথাতথা/ মানুষ মারা যায়।’ এই চারটি লাইনেই সুস্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন দেশের অনাহারি মানুষের জন্য তাঁর হৃদয় কতোটা দগ্ধ হয়। বাস্তবে তিনি নিজের সারাটা জীবন দরিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করে গেছেন। তাই নিম্নবর্গের মানুষের দুঃখ দুর্দশার কথাই তিনি সুগভীর উপলব্ধি থেকে তাঁর বিভিন্ন গানে ফুটিয়ে তুলেছেন। শাহ আব্দুল করিম ১৯১৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার ধলআশ্রম গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ইব্রাহিম আলী ছিলেন একজন দরিদ্র কৃষক, মাতা নাইওরজান বিবি ছিলেন পুরোদস্তুর গ্রাম্য গৃহিণী। শাহ আব্দুল করিম বাল্যকালে শিক্ষালাভের কোন সুযোগ পাননি। বারো বছর বয়সে তিনি নিজ গ্রামের এক নৈশবিদ্যালয়ে কিছুকাল পড়াশোনা করেন। সেখানেই তিনি প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। পরে নিজের চেষ্টায় তিনি স্বশিক্ষিত হয়ে ওঠেন। দরিদ্র ও জীবন সংগ্রামের মাঝে বড় হওয়া শাহ আব্দুল করিমের সঙ্গীত সাধনার শুরু ছেলেবেলা থেকেই। শাহ আব্দুল করিমের দাদা নসীবউল্লার বাউলসত্তাই তাঁর মধ্যে প্রথম প্রভাব ফেলেছিলো। দাদার মুখে শোনা আধ্যাত্মিক গান ‘ভাবিয়া দেখ তোর মনে/মাটির সারিন্দারে বাজায় কোন জনে’ থেকেই গানের প্রতি দরদ অনুভব করেন। একতারাতে সুর তোলার শিক্ষা পেতে দূরে যেতে হয়নি, দাদার কাছেই শৈশবের এই শিক্ষা নিয়ে ছিলেন। এভাবেই পথ চলতে চলতে কিশোর করিম যৌবনে পা দিয়ে হয়ে যান বাউল আবদুল করিম। তবে বাউল করিমের গানের জগতে আসাটা এত সহজ ছিল না। গান গাওয়ার অপরাধে অভিযুক্ত হয়ে নিজের গ্রাম থেকে বিতাড়িত হতে হয়। এমনকি বিয়ে করা প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে সংসার ভাঙে একমাত্র গান গাওয়ার কারণেই। ১৯৪৫ সালে তাঁর আপন মামাত বোন কাঁচামালা বিবির সঙ্গে প্রথম বিয়ে হয়। ‘গান অথবা বউ’ এমন একটি শর্তের তোপে দেড় বছরের মাথায় এই বিয়ে ভেঙে যায়। কারও কথায়ই বাউল করিম তাঁর চিরসঙ্গী গানকে ছাড়তে পারেননি। গানই তার সব ছিল, ছোটবেলা থেকেই সব অপ্রাপ্তি তিনি গানের সুরে ঢেকে দিয়েছেন। তাই তিনি গানে গানে গেয়ে ছিলেন, ‘গান গাই আমার মনরে বুঝাই, মন তাতে পাগলপারা/আর কিছু চায় না মনে গান ছাড়া-গান ছাড়া।’ পরবর্তীতে ১৯৫৮ সালে আবার ঘর বাধলেন মমজান বিবির সঙ্গে। তিনিই ছিলেন তার প্রকৃত সহধর্মিণী, চলার পথের সত্যিকারের সাথী। ভালবেসে বাউল করিম তার নাম দিলেন ‘সরলা’। বাউলের গান বাধার নতুন প্রেরণা হলেন এই সরলা। বেশ সুখেই দিন কাটে দু’জনের, গানের পথে কখনই বাধা হননি মমজান বিবি কিংবা সরলা। পরবর্তী সময়ে শাহ আব্দুল করিম তাঁর প্রিয়তমা পতœী সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘আজকের এই করিম কখনই করিম হয়ে উঠতে পারত না, যদি কপালের গুণে সরলার মতো বউ না পেতাম।’ বোঝাই যাচ্ছে সরলাকে পেয়ে সুগম হয়েছিল বাউলের সঙ্গীতযাত্রা। সুরে সুরে আরও দরদে মরমী কবি মরমে প্রবেশ করলেন সরলার সঙ্গ পেয়ে। ‘বন্দে মায়া লাগাইছে, পিরীতি শিখাইছে’- বাংলাদেশের অলিতে-গলিতে, গ্রামে-গঞ্জে কিংবা শহুরে হট্টগোল! জোরে জোরে বাজানো ডিজে মিউজিক অথবা গ্রামের জমায়েত আসর! কে না শুনেছে এই গান? কিন্তু এই সুখও বেশিদিন সইলো না তাঁর ভাগ্যে। অসুস্থ হয়ে বিনা চিকিৎসা মারা যান সরলা। এই ঘটনার একটা গাঢ় ছাপ পড়ে বাউলের মনে ও গানে। আকুল হয়ে বাউল সরলার বিরহে গেয়ে উঠেছেন, ‘আর জ্বালা সয় নাগো সরলা/আমি তুমি দু’জন ছিলাম, এখন আমি একেলা।’ একাকীত্ব আগেও ছিল, কিন্তু প্রকৃত সঙ্গ পেয়ে একা হওয়ার বেদনা আগেকার সেই একাকীত্বের চেয়ে বহুগুণ বেশি। হয়ত সরলার জন্যই বাউলমন কেঁদে উঠেছে আর বিরহের সুরে উজান ধলের তীরে বসে তিনি চোখে জলে গেয়েছিলেন, ‘কেন পিরীতি বাড়াইলারে বন্ধু/ছেড়ে যাইবা যদি?/কেমনে রাখবি তোর মন/আমার আপন ঘরে বাধিরে বন্ধু/ছেড়ে যাইবা যদি।’ আজও বহু বিরহীর সুর হয়ে ধীরলয়ে বাজতে থাকে এই বিখ্যাত গানটি। সরলার মৃত্যুর পর তিনি পুরোপুরিভাবেই দেহতত্ত্ব ও আধ্যাত্মিক ধারার গানের দিকে ধাবিত হন। যার ফলস্বরূপ আমরা পেয়েছি তাঁর বিখ্যাত গান, ‘গাড়ি চলে না, চলে না/চলে না রে, গাড়ি চলে না’ কিংবা ‘কোন মেস্তুরি নাও বানাইছে/কেমন দেখা যায়/ঝিলমিল করে রে ময়ূরপঙ্খী নাও।’ এছাড়াও আরও স্রষ্টার সন্ধানে নিজেকে আত্মনিয়োগ করে তিনি গেয়েছিলেন আরেকটি বিখ্যাত গান, ‘দিবা-নিশি ভাবি যারে/তারে যদি পাই না/ রঙের দুনিয়া তোরে চাই না’ শাহ আব্দুল করিমের মোট সাতটি গানের বই প্রকাশিত হয়েছে। সেগুলো হলো-আফতাব সঙ্গীত (১৯৪৮),গণসঙ্গীত (১৯৫৭), কালনীর ঢেউ (১৯৮১), ধলমেলা (১৯৯০), ভাটির চিঠি (১৯৯৮), কালনীর কূলে (২০০১) ও শাহ আব্দুল করিম রচনাসমগ্র (২০০৯)। মৃত্যুর কিছুদিন আগে সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে তাঁর রচনাসমগ্র (অমনিবাস)-এর মোড়ক উন্মোচিত হয়ে ছিল। এ ছাড়াও সুমনকুমার দাশ সম্পাদিত শাহ আব্দুল করিম স্মারকগ্রন্থ (অন্বেষা প্রকাশন) তাঁর মৃত্যুর পর প্রকাশিত হয়। তাঁর মৃত্যুর আগে ও পরে শাহ আব্দুল করিমকে নিয়ে সুমনকুমার দাশের ‘বাংলা মায়ের ছেলে শাহ আব্দুল করিম জীবনী’ (অন্বেষা প্রকাশন), ‘সাক্ষাত কথায় শাহ আব্দুল করিম’ (অন্বেষা প্রকাশন), ‘শাহ আব্দুল করিম’ (অন্বেষা প্রকাশন), ‘বাউলসম্রাট শাহ আব্দুল করিম’ (উৎস প্রকাশন), ‘গণগীতিকার শাহ আব্দুল করিম’ (উৎস প্রকাশন) প্রকাশিত হয়। সর্বশেষ ২০১৬ সালে প্রথমা থেকে প্রকাশিত হয় সুমনকুমার দাশের ‘শাহ আব্দুল করিম: জীবন ও গান’ বইটি। এ বইটি ইতোমধ্যেই একটি প্রামাণ্য জীবনী হিসেবে বোদ্ধামহলে স্বীকৃতি আদায় করে নিয়েছে। শাহ আব্দুল করিম ২০০১ সালে একুশে পদক লাভ করেন। পেয়েছেন কথা সাহিত্যিক আবদুর রউফ চৌধুরী পদক, রাগীব-রাবেয়া সাহিত্য পুরস্কার, লেবাক এ্যাওয়ার্ড, মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার আজীবন সম্মাননা, সিটিসেল-চ্যানেল আই মিউজিক এ্যাওয়ার্ডস আজীবন সম্মাননা, বাংলাদেশ জাতিসংঘ সমিতি সম্মাননা, খান বাহাদুর এহিয়া পদক, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি সম্মাননা, হাতিল এ্যাওয়ার্ড ও এনসিসি ব্যাংক এনএ সম্মাননা। এছাড়া শাকুর মজিদ তাকে নিয়ে নির্মাণ করেছেন ‘ভাটির পুরুষ’ নামে একটি প্রামাণ্য চিত্র। সুবচন নাট্য সংসদ তাকে নিয়ে শাকুর মজিদের লেখা মহাজনের নাও নাটকের ৮৮টি প্রদর্শনী করেছে। এছাড়াও বাংলা একাডেমির উদ্যোগে তাঁর ১০টি গান ইংরেজীতে অনূদিত হয়েছে। বাংলার সর্বশেষ মুকুটবিহীন বাউল সম্রাট ২০০৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর সিলেটের নুরজাহান পলি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। শাহ আব্দুল করিমের মৃত্যুর শোকের ছায়া এখনো তাঁর ভক্তদের গভীর শোকে আচ্ছন্ন করে। তিনি তাঁর অমর সৃষ্টিতে চিরকাল বেঁচে থাকবেন। ভাটি বাংলার বাউল কবি শাহ্ আব্দুল করিমের প্রতি রইল বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি ও ভালবাসা।
×