ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চাই তারুণ্যের স্বনির্ভরতা

প্রকাশিত: ১২:১৫, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯

চাই তারুণ্যের স্বনির্ভরতা

শরীফ মাহমুদ আমাদের দেশে পড়াশোনা করার ক্ষেত্রেও এক ধরনের সুপ্ত মানসিকতা বা উদ্দেশ্য কাজ করে। বাবা-মা সন্তাদের পড়াশোনা করান এই ভেবে যে তার সন্তান ভবিষ্যতে ভাল কোন চাকরিতে যোগদান করবে। অনেক ক্ষেত্রে এই সূত্রটি বাবা-মা নিজের অজান্তেই সন্তানের মনের গভীরে পৌঁছে দেন। আর সন্তানও তার মনের সফটওয়্যারে ফিক্সড করে ফেলে আমাকে বুঝি চাকরিই করতে হবে। আর এভাবেই চোখ কান বুজে তারা পড়াশোনা করে ঠিকই কিন্তু এরই মধ্যে হারিয়ে ফেলে নিজের সৃজনশীল মেধা। যে মেধা তাকে নিয়ে যেতে পারে অন্য এক উচ্চতায়। তাই বলে চাকরি করা খারাপ তা কিন্তু নয়, তবে সৃজনশীল মেধাশক্তি নিজের যোগ্যতা সম্পর্কে যাচাই করার সুযোগটা তৈরি করে দেয়। আর এসব বিষয় নিয়েই মোঃ আরিফুজ্জামান (ম্যানেজিং ডিরেক্টর, রিয়েল ক্যাপিটা গ্রুপ) জানালেন বেশ চমকপ্রদ তথ্য। তার নিজের জীবনও গতানুগতিক ধারায় শুরু হয়েছিল। অর্থাৎ পড়াশোনা শেষ করে চাকরিজীবনে প্রবেশ করেন। বাবা আবুল বাসার একজন সৎ ও নিষ্ঠাবান সরকারী অডিট কর্মকর্তা ছিলেন। তরুণ সফল এ উদ্যোক্তা ডি-প্রজšে§র কাছে খুলে বলেছেন জীবনের শুরু থেকে এই পর্যায়ে আসার গল্প। ২০০৪ সালে ব্যাংকে চাকরি জীবন শুরু। এরপর ২০০৮ সালে ব্যাংকে চাকরি ছেড়ে ভাল লাগার জায়গা থেকে রিয়েল এস্টেট কোম্পানিতে চাকরি শুরু করেন। এখানে এসেই উপলব্ধি করেন মানুষ নিজের একটি ঘরের স্বপ্ন লালন করে নিজের অজান্তেই। চাকরি জীবনের শেষ সম্বলটুকু রেখে দেন নিজের এক টুকরো জমি কেনার আশায়। মানুষের এ স্বপ্নটুকুই তাকে নাড়া দেয়। ঠিক এ ভাবনা থেকেই আরিফুজ্জামান ভাবতে থাকেন ভিন্ন পথের। খুঁজতে থাকেন সূত্র। যে সূত্রে জমির মূল্যেই বাড়িসহ মালিকানা বুঝে পাবে। জীবনের একটা সাধ তো পূরণ হবে। এ প্রসঙ্গে আরিফুজ্জামান বলেন, আসলে আবাসন শিল্প এমন একটা সেক্টর যার ব্যাপ্তি অসিম। মানব জীবনের মৌলিক চাহিদা হলো খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা। যেখানে তৃতীয়তে আবাসন মানে বাসস্থান প্রতিটি মানুষেরই একটি প্রাথমিক চাহিদা। সৃষ্টি হতে শেষ অবধির প্রয়োজন হবেই। বিশ্বব্যাপী নম্বর ওয়ান হলো রিয়েল এস্টেট সেক্টর এবং এই একটি সেক্টর যেখানে সবচেয়ে বেশি বেকারত্বের কর্মসংস্থানের সমাধান করা সম্ভব। মূলত পরিকল্পিতনগরী গড়ে তুলতে এবং নতুন করে, নতুন আঙ্গিকে, নতুন কিছু গড়ার স্বপ্ন থেকেই রিয়েল এস্টেট সেক্টরে আমার প্রবেশ। শুরু করি আর সি মায়া কানন, আর সি রিভারী ভিলেজ নামক দুটি আবাসন প্রকল্প। এছাড়াও রয়েছে প্রিয়জন গৃহায়ন প্রকল্প। এই প্রজেক্টগুলো সাজানো হয়েছে সব ধরনের আয়ের মানুষ যেন নিজের বাসস্থান নিশ্চিত করতে পারে সেসব কথা বিবেচনা করে। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের বিনিয়োগ তাকে এগিয়ে নেবে নিশ্চিত মাথা গোজার ঠাঁইয়ের দিকে। তরুণদের আমি একটা কথাই বলব ‘চাকরির জন্য চাকরি’ না করে দক্ষ কর্মজীবী হওয়া জরুরী। যখন যেখানেই যে কাজ করি না কেন সে কাজে যেন ভাললাগাটা থাকে। আমারও রিয়েল এস্টেটে ভাললাগা ছিল সঙ্গে ছিল অদম্য মনোবল। সেটা ভালভাবে রপ্ত করেছি বলেই হয়ত আমি আজ আমার জায়গায় শক্ত আসন গড়তে পেরেছি। এই সেক্টরও নিজের দক্ষতার বহির্প্রকাশের একটি বড় প্লাটফর্ম। এখানে মার্কেটিং- সেলস, প্রমোশন, ক্রিয়েটিভিটি, প্রেজেন্টারসহ নানা সেক্টরের দক্ষতা এক কর্মক্ষেত্র অর্জন করা সম্ভব। আর বর্তমানে এই সেক্টরের স্মার্ট বেতন স্কেল ও প্রণোদনা যে কোন মূল্যেই একজন পরিশ্রমী দক্ষ কর্মীকে সচ্ছলতার চরম শিখরে পৌঁছে দিতে পারে বলে আমি বিশ্বাস করি। সততা আর সামনে এগিয়ে যাওয়ার আকাক্সক্ষা আর আর কাজের প্রতি শ্রদ্ধা মানুষকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যায়। স্বপ্ন বড় হলে আর লক্ষ্য স্থির থাকলে যে কোন অসাধ্যই বশে আনা সম্ভব।
×