ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

আমিরাতের বিনিয়োগ

প্রকাশিত: ০৯:০৪, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯

আমিরাতের বিনিয়োগ

সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের বিদ্যুত, জ্বালানি, বন্দর ও অবকাঠামো খাতে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছেন, বাংলাদেশী মুদ্রায় যা প্রায় ৮৫ হাজার কোটি টাকা। এত বড় বিনিয়োগ আমিরাত থেকে এই প্রথম এলো। এই অর্থ বিনিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশে কয়েকটি প্রকল্পসহ পাঁচটি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলবে সংযুক্ত আরব আমিরাত। রবিবার দুবাইয়ে বাংলাদেশ ইকোনমিক ফোরামের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন দেশটির স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। ইতোমধ্যে বড় অবকাঠামো খাত নির্মাণে সৌদি আরব থেকে ৩৫ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এটি দেশবাসীর জন্য স্বস্তিকর নিঃসন্দেহে। বর্তমান অর্থবছরের মধ্যেই সৌদি আরবের বিনিয়োগ দেশে আসবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন শেখ হাসিনা সরকারের ধারাবাহিকতা, বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে রোডম্যাপ গ্রহণ, বিনিয়োগে ওয়ানস্টপ সার্ভিস নিশ্চিত করা, ভিশন-২১-এর মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশের কাতারে পৌঁছানো এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত রাষ্ট্রের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যমাত্রার মতো কর্মসূচীতে আকৃষ্ট হয়েছে সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবকাঠামো খাতে এত বেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন, যেটি কোন একক অর্থনৈতিক সংস্থার পক্ষে মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। বিশ্বব্যাংকের আইডা থেকে বছরে ৫২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মতো ঋণ দেয়া হয়, যা ১৮০টি দেশের মধ্যে ভাগ হয়ে যায়। কিন্তু বিশ্বব্যাংকের হিসাবমতেই বাংলাদেশের শুধু অবকাঠামো খাতে (বিদ্যুত, পরিবহন, টেলিকমিউনিকেশন, স্যানিটেশন ইত্যাদি) বিনিয়োগ প্রয়োজন বছরে ৭ থেকে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ অন্যান্য খাত বাদ দিয়েই এই হিসাব। এক্ষেত্রে শুধু বিশ্বব্যাংক, এডিবি ও আইডিবিই নয়, এর বাইরে আরও একটি সম্ভাবনাময় অর্থদাতা এআইআইবি বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে তাৎপর্যপূর্ণ বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। মার্কিন ব্যবসায়ীসহ ইউরোপের ব্যবসায়ী মহল আগামীতে সমৃদ্ধির অংশীদার হতে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করবে এমনটা প্রত্যাশিত। লন্ডনের জ্যেষ্ঠ ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে কমনওয়েলথভুক্ত সরকারপ্রধানদের এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে এশিয়ার সেরা বিনিয়োগ হাব হিসেবে উল্লেখ করে বিশ্বের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছিলেন। এটি অনস্বীকার্য যে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক স্থানীয় ও বিদেশী বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের আগ্রহ বাড়ছে। এ যাবতকাল দেশে চীন, জাপান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকেই প্রধানত বড় ধরনের বিনিয়োগ এসেছে। এখন জিসিসিভুক্ত দেশগুলো বিশেষ করে সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ মাধ্যমে স্বল্প ব্যয়, অপারেশনস এবং উচ্চতর রিটার্নের সুবিধা নেয়ার বিষয়টি ভেবে দেখা জরুরী। সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশে প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ছে। অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন ও টেকসই উন্নয়নের জন্য বর্তমান সরকারের নেয়া বিভিন্ন নীতি ও কর্মসূচীর সুফল আসতে শুরু করেছে- এটা নিঃসন্দেহে সুসংবাদ।
×