ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

রাধা গোবিন্দ বিশ্বাস

ফুটপাথে মোটরসাইকেল!

প্রকাশিত: ০৯:২০, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯

ফুটপাথে মোটরসাইকেল!

বাংলাদেশের প্রাণকেন্দ্র রাজধানী ঢাকা। এখানে রয়েছে প্রায় দুই কোটি লোকের বসবাস। নানা সমস্যায় জর্জরিত সকলের প্রিয় শহর ঢাকা এখন বসবাসের অযোগ্য তালিকায় তৃতীয়। বায়ু দূষণ, শব্দ দূষণ, পানি, যানজটে, জলাবদ্ধতা-নিরাপদ সড়কের মতো গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয়। এ সকল সমস্যা সমাধানের জন্য বর্তমান সরকার ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো প্রাণান্তকর চেষ্টা করে যাচ্ছে। এত কিছুর পরেও যে বিষয়টি নগরবাসীকে প্রতিনিয়ত সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী করে তুলছে তা হচ্ছে শহরের ফুটপাথ ব্যবস্থা ও পরিস্থিতি। আজকে এই সময়োপযোগী-বিষয়টির মাধ্যমে বাস্তব চিত্র তুলে ধরা সময়ের দাবি। প্রথমেই দেখা যাক ফুটপাথের অবকাঠামোগত দুরবস্থা। বেশিরভাগ ফুটপাথ রয়েছে যেগুলো দীর্ঘদিন যাবত মেরামত, সংস্কার বা পুনর্নির্মাণ করা হচ্ছে না। দ্বিতীয়ত যে সকল ফুটপাথ বা রাস্তা একটু ভাল অবস্থায় আছে অর্থাৎ ভাঙ্গাচুরা বা খানাখন্দে ভরা সেগুলো দেখভাল না করার কারণে অবহেলা-অযতেœ পড়ে থাকে। পড়ে থাকে ফুটপাথের ওপর ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। যার দুর্গন্ধে স্কুলগামী কোমলমতি ছেলেমেয়ে ও পথচারীদের ভোগান্তির সীমা থাকে না। সামান্য বৃষ্টি হলেই ফুটপাথ-পানির নিচে চলে যায়। তখন সুয়্যারেজ ও ড্রেনের ময়লা পানি এক হয়ে রাস্তাগুলো সয়লাব হয়ে যায। ফলে নগরবাসীর ইচ্ছা থাকলেও হেঁটে চলাচল করা সম্ভব হয় না। ফুটপাথের আরও একটি বড় সমস্যা হকারদের দৌরাত্ম্য। ঢাকা শহরের এমন কোন রাস্তা নেই যেখানে হকাররা দোকান পসরা বসিয়ে ফুটপাথ দখল করে না আছে। এহেন অবস্থা যে শুধু মিরপুর-মোহাম্মদপুর-যাত্রাবাড়ী তা নয়, অভিজাত এলাকা গুলশান-বনানী-ধানম-িরও একই চিত্র দেখা যায়। এক জরিপে দেখা গেছে শহরের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ রাস্তা বা ফুটপাথ হকারদের দখলে। অলিগলি, ছোট-বড় রাস্তা যেখানেই হোক না কেন অবৈধ দোকানপাট আছেই। আর পেছনে কিছু স্বার্থান্বেষী লোভী মানুষের হাত রয়েছে। যার ফলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মাঝে মাঝে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে হকার ও অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করে ফুটপাথগুলো মুক্ত করলেও কিছু দিন পর পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসে। ইদানীং ফুটপাথে আরও একটি সমস্যা পরিলক্ষিত হচ্ছে তীব্র যানজটের কারণে ফুটপাথের ওপর দিয়ে মোটরসাইকেল ও সাইকেল প্রায়শই চলাচলা করে থাকে। এমন কি অনেক সময় ভারি যানবাহনও বেপরোয়াভাবে চালানোর ফলে ফুটপাথের ওপর উঠে যায়। যা পথচারীদের জীবনের নিরাপত্তার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। পরিশেষে এটুকু বলা যায় ঢাকাকে বর্তমান নাগরিক জীবন ও ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য বসবাস উপযোগী ও নান্দনিক করে তুলতে হলে ফুটপাথের ওপর নজর দিতে হবে। ফুটপাথ নির্মাণের পর তার দু’পাশে বৃক্ষরোপণ করা যেতে পারে। পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকতে হবে। সর্বোপরি আবর্জনামুক্ত, হকার মুক্ত করে হেঁটে চলাচল করার জন্য জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এ কাজগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়নের জন্য ঢাকা উভয় সিটি কর্পোরেশনকেই প্রথম উদ্যোগ নিতে হবে। নগরপিতাগণ জনস্বার্থে তা করবেন বলে নগরবাসীর প্রত্যাশা। ঢাকা থেকে
×