ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

পর্যায়ক্রমে পুরো শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ করা হবে

প্রকাশিত: ১১:৩৫, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯

পর্যায়ক্রমে পুরো শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ করা হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পর্যায়ক্রমে পুরো শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ করা হবে জানিয়ে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, এ মুহূর্তে আমরা শিক্ষার গুণগত মান এবং অবকাঠামো উন্নয়নে জোর দিচ্ছি। এক সময় আমরা শিক্ষার প্রসারে গুরুত্ব দিয়েছি এবং আমরা সফল হয়েছি। আমরা পর্যায়ক্রমে মাদ্রাসা শিক্ষাসহ সকল শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ করব। উপমন্ত্রী একই সঙ্গে ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত আলেম সমাজকে সর্বোচ্চ নৈতিক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। বুধবার রাজধানীর ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদ্রাসায় উচ্চ শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন নিয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মাদ আহসান উল্লাহর সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বিশ^বিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক কায়সার আহমেদ, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক সফিউদ্দিন আহমদ, বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব মাওলানা শাব্বীর আহমদ মোমতাজী। উপমন্ত্রী বলেন, এই মুহূর্তে নৈতিকতার অভাব আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। যারা ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত পেশাগত জীবনে তারা নৈতিক হবেন দেশ ও সমাজ তাই আশা করে। ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত আলেম সমাজকে সর্বোচ্চ নৈতিক হওয়ার আহ্বান জানান উপমন্ত্রী। বলেন, শারীরিক শাস্তি এক ধরনের ফৌজদারি অপরাধ। শৃঙ্খলা বিধান করার নাম করে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শারীরিক শাস্তি দেয়া উচিত নয়। তা কোন ভাবেই মেনে নেয়া হবে না। মহিবুল হাসান চৌধুরী আরও বলেন, মাদ্রাসায় উচ্চ শিক্ষা প্রসারের লক্ষ্যে ইসলামী আরবী বিশ^বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সারা বিশে^ এখন মাদ্রাসা শিক্ষার রোল মডেল বাংলাদেশ। উচ্চ শিক্ষায় মাদ্রাসা শিক্ষাকে কিভাবে যুগোপযুগী করা যায় সে ক্ষেত্রে সকলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। রাষ্ট্রীয় শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা অত্যন্ত সুগঠিত ও চমৎকারভাবে সাজানো। এখান থেকে নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সর্বজনীন পেশাগুলোতে অনেকেই আসছে এবং এ পেশাতে সবাই সাফল্য অর্জন করছে। এখন আমাদের চ্যালেঞ্জ হচ্ছে দ্বীনি শিক্ষা নিয়ে, নৈতিকতার শিক্ষা নিয়ে যদি তারা নিজ নিজ পেশায় নৈতিকতার চর্চা করেন তাহলে বাংলাদেশে নৈতিকতার যে অবক্ষয় এবং দুর্নীতির যে সমস্যা তা আর থাকবে না। প্রধানমনন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার বদান্যতায় মাদ্রাসার শিক্ষার মান এতটাই উন্নত হয়েছে এবং মাদ্রাসায় শিক্ষিত ছাত্র-ছাত্রীদের সকল পর্যায়ে প্রশাসন থেকে শুরু করে সকল বাহিনীতে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা অন্যান্য সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সমানভাবে হচ্ছে। এটা নিয়ে কোন রাজনীতি করার সুযোগ নেই। জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে মাদ্রাসা শিক্ষা অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। বিশ^বিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, নতুন নতুন বিষয়ে অনার্স চালু না করে শিক্ষায় কোয়ালিটির ওপর বেশি নজর দিতে হবে। আমাদের এত সুযোগ-সুবিধা থাকা সত্ত্বেও আমরা কোয়ালিটির ওপর নজর দিতে পারছি না। প্রধানমন্ত্রী যে আশা নিয়ে ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন সে আশা অনুযায়ী এ বিশ^বিদ্যালয় থেকে মানসম্পন্ন ছাত্র-ছাত্রী তৈরি হবে এবং বিশে^র সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশ ও জাতির উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে আশা প্রকাশ করেন মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান। মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক সফিউদ্দিন আহমদ বলেন, বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার বর্তমানে ৮ শতাংশ। এই অগ্রগতি ধরে রাখতে সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে। মাদ্রাসা শিক্ষায় শিক্ষিতদের এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকলে চলবে না। মাদ্রাসার কেউ যেন বেকার না থাকে সেই ব্যবস্থা করছে বর্তমান সরকার। তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার এক হাজার ৮শ’ মাদ্রাসায় চার তলা ভবন নির্মাণ করেছে এবং ৬৫৩ মাদ্রাসায় মাল্টিমিডিয়ার ক্লাস রুম চালু করেছে। মাদ্রাসায়ও স্কুলের মতো উপবৃত্তি এবং স্কুল ফিডিং-এর ব্যবস্থা করা হবে। এমপিও’র কাজ মাদ্রাসা অধিদফতর করবে। আগামী মাস থেকে সব এমপিও মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদফতর থেকে করা হবে।
×